Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

আটলেটিকোর মেসি-রোনাল্ডো নেই এগারো জন আছে

অপ্রতিরোধ্য এমএসএন হঠাৎ-ই এত বিবর্ণ কেন? সিমিওনের আটলেটিকো মাদ্রিদ কী ভাবে ইউরোপিয়ান শক্তি হয়ে উঠছে, কারণ খুঁজলেন সুব্রত ভট্টাচার্যফুটবলাররা মেশিন নয়। লম্বা ইউরোপিয়ান মরসুমে দলের মধ্যে ক্লান্তি ঢুকতে বাধ্য। গত বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় সুপার কাপ, জাপানে গিয়ে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ বাড়তি খেলতে হয়েছে মেসিদের। সঙ্গে দেশের হয়ে প্রাক্ বিশ্বকাপ, ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ।

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১২
Share: Save:

বার্সা-পতন

• ক্লান্তি: ফুটবলাররা মেশিন নয়। লম্বা ইউরোপিয়ান মরসুমে দলের মধ্যে ক্লান্তি ঢুকতে বাধ্য। গত বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় সুপার কাপ, জাপানে গিয়ে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ বাড়তি খেলতে হয়েছে মেসিদের। সঙ্গে দেশের হয়ে প্রাক্ বিশ্বকাপ, ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ। বার্সায় যেটা প্রথম দলের প্রায় সবাইকে খেলতে হয়।

• মেসির গোল-খরা: নেইমার, সুয়ারেজ দুর্দান্ত হতে পারে কিন্তু বার্সার জন্য মেসি অনন্য। শুধু ফুটবলারই নয়, টিমের মানসিক শক্তি। সেই মেসির এখন গোল-খরার চাপ দলের উপরও মানসিক ভাবে পড়ছে। স্বয়ং মেসিও গোলে ফেরার জন্য এতটাই ফোকাসড যে, দলকে ঠিক ভাবে সাপোর্ট করতে পারছে না।

• জাভি-শূন্যতা: গত দশকে বার্সার খেলা মানেই মাঝমাঠ থেকে জাভির ঠিকানা লেখা সব পাস। মেসি, দাভিদ ভিয়া, পেদ্রোদের চিন্তা থাকত না। জাভি বার্সার জন্য একটা অভ্যেসের মতো ছিল। আর এত দিনের একটা অভ্যেস থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সমস্যা হয়ই। জাভির পরিবর্ত রাকিটিচের গতি আছে কিন্তু সেই অসাধারণ পাসগুলো কোথায়?

• পিকে-মাসচেরোনা দুর্বলতা: বার্সার ফরোয়ার্ড লাইন স্বপ্নের হলেও ডিফেন্সটা দুঃস্বপ্নের। পিকে-মাসচেরানো দু’জনেরই এখন গতি কমেছে। টার্নিং ভাল নয়। মাসচেরানো আবার আদতে হোল্ডিং মিডফিল্ডার। এই ডিফেন্স নিয়ে সব বড় ম্যাচ জেতা যায় না।

অহেতুক তিকিতাকা: হেরে যাওয়া এল ক্লাসিকো থেকে বার্সা ওদের খেলাটাকে স্লো করে দিচ্ছে। বিপক্ষ বক্সে অকারণে চার-পাঁচটা বাড়তি পাস খেলছে। এত পাস খেলায় বিপক্ষ ‘রিকভার’ করার সময় পেয়ে যাচ্ছে।

আটলেটিকো-উত্থান

• গেমপ্ল্যান আঁকড়ে থাকা: বার্সার বিরুদ্ধে আটলেটিকোর ফিরতি কোয়ার্টার ফাইনালটা দাবা গেমের মতো মনে হল। বড় ম্যাচে প্লেয়ারদের পজিশনিং গুরুত্বপূর্ণ। ওদের কোচ সিমিওনে সেটাই দুর্দান্ত করেন। ডিফেন্স হোক বা অ্যাটাক, সবাইকে নির্দিষ্ট পজিশনে রাখেন।

• অবিশ্বাস্য ওয়ার্ক লোড: ফুটবলারদের প্রচণ্ড পরিশ্রম করার ক্ষমতা। ফিলিপে লুইসের মতো ডিফেন্ডাররা নিয়মিত ওঠা-নামা করে নিজের ফরোয়ার্ডদের সাহায্য করে। আবার অ্যাটাকাররাও মাঝমাঠে নেমে কাউন্টারে ডিফেন্সকে বাঁচায়।

• গ্রিজম্যান-এফেক্ট: ছোটখাটো ফরাসি ফুটবলার এখন ইউরোপের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড। প্রচণ্ড গতি। বক্সে ক্ষিপ্র। খুব ভাল ড্রিবল করে। পাসিং সেন্স দুর্দান্ত। এমন কেউ হাতে থাকলে কোচের চিন্তা কমে যায়।

• দ্য গ্রেট ওয়াল: দিয়েগো গদিনের নেতৃত্বে আটলেটিকো ডিফেন্স বিশ্বের অন্যতম সেরা। লুইস, হুয়ানফ্রানরা টিপিক্যাল ব্রিটিশ ধাঁচের ডিফেন্স করে। বল পেলেই উড়িয়ে দাও। স্ট্রাইকারদের টাইট মার্কিংয়ে রাখো। যখন দরকার ওভারল্যাপে যাও। যখন দরকার নীচে থাকো।

• এগারো জনের টিম: রিয়াল মাদ্রিদে যেমন রোনাল্ডো। বার্সায় এমএসএন, আটলেটিকোর সেখানে এগারো জন। ওদের মহাতারকা নেই। এগারোজনই জানে বিশেষ কারও উপর নির্ভর করার নেই। যে জন্য দিয়েগো কোস্তা, কুর্তোয়ার মতো ফুটবলার ক্লাব ছাড়ার পরেও সমস্যা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barcelona atletico madrid Champions League Messi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE