কর্তাদের নজিরবিহীন কাজিয়ায় মোহনবাগান ফুটবল দলের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হল। কর্মসমিতির সভার পর সচিব বা পদত্যাগী সহ সচিব কেউই বলতে পারলেন না ফুটবলারদের বকেয়া মাইনের টাকা কোথা থেকে আসবে। পরের মরসুমের দল কী ভাবে চলবে।
শুক্রবার বিকেলে মোহনবাগান তাঁবুতে কর্মসমিতির সভার পরে কর্তাদের মধ্যে বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি চলল দীর্ঘক্ষণ। বেশি রাতে আরও বড় নাটক। সন্ধ্যায় ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র যে চার জনের নাম সহ সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে দু’জন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বিবৃতি দিয়ে সরে দাঁড়ালেন। দু’জনেই ফোন করে বলে দিলেন, ‘‘আমাদের না জানিয়েই পদ দেওয়া হয়েছে। এই পদ আমরা নিচ্ছি না।’’ ঘোষিত অন্য দুই সহ সভাপতি প্রাক্তন বিচারপতি মুরারিমোহন ঘোষ এবং রাধেশ্যাম অগ্রবাল অবশ্য থেকে গিয়েছেন কমিটিতে।
এ দিন দুপুর থেকেই সভা ঘিরে ছিল তুমুল উত্তেজনা। মোতায়েন ছিল প্রচুর পুলিশ। ক্লাব লনে দেখা গিয়েছে এমন সব অচেনা মুখের, যাঁদের কোনওদিন দেখা যায়নি সবুজ মেরুন তাঁবুতে। বাইক বা গাড়িতে করে দল বেঁধে এসেছিলেন ওঁরা। উপস্থিত ছিলেন বহু সদস্য, সমর্থকও। সব মিলিয়ে ছিল হাজার খানেক মানুষের ভিড়। সভায় কী আলোচনা হচ্ছে সেই খবর মিনিট পনেরো অন্তর বেরিয়ে আসছিল বাইরে। সভার পর মোহনবাগান সচিব তিনটি ঘোষণা করেন। এক) চার জন সহ সভাপতি ও আমন্ত্রিত তিন জন সদস্যের নাম। দুই) জুন মাসেই ক্লাবের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিন) ৩১ মে-র মধ্যে ফুটবলারদের বকেয়া মেটানোর চেষ্টা করা হবে। এ জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মোহনবাগান সচিব বললেন, ‘‘ফুটবলারদের বকেয়া মেটাতে না পারলে এ এফ সির লাইসেন্স পাবে না ক্লাব। দেখা যাক টাকা জোগার করা যায় কি না?’’ যা থেকে স্পষ্ট, দিপান্দা ডিকা বা শিল্টন পালরা গত মরসুমের টাকা কবে পাবেন বা আদৌ পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে সচিব নিজেই। পরের মরসুমের চুক্তিবদ্ধ ২৫ ফুটবলারকে কী ভাবে টাকা দেওয়া হবে তারও দিশাও দেখাতে পারেননি তিনি। অঞ্জন বলে দিলেন, ‘‘বারবার বলা সত্ত্বেও বাজেট বাড়িয়ে গত মরসুমে দল তৈরি হয়েছিল। যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা বলেছিলেন টাকা উঠে আসবে। আমি ওঁদের পুরোপুরি বিশ্বাস করেছিলাম।’’
যা শুনে পদত্যাগী সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু ও অর্থসচিব বলে দিলেন, ‘‘সচিবকে না জানিয়ে এক জন ফুটবলারকেও সই করানো হয়নি। পরের মরসুমে যে ফুটবলারদের সই করানো হয়েছে তাও সচিবকে জানিয়ে করা হয়েছে। বারবার বলা সত্ত্বেও উনি বকেয়া নিয়ে আলোচনায় বসতে চাননি।’’
তিন জন ছাড়া এ দিন কর্মসমিতির ১২ জন সদস্যের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। আর বারো দিন পরেই বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার পরই নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy