মহড়া: দ্বিতীয় ম্যাচের প্রস্তুতি সনি ও ডিকার। নিজস্ব চিত্র
পাহাড়ে গিয়ে পাহাড়ি-কাঁটা উপড়ে ফেলে শহরে ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল। আই লিগ শুরুর মুখে ফুরফুরে হাওয়া পড়শি ক্লাবের শিবিরে।
এই আবহে ছত্রিশ ঘণ্টার মধ্যে দিপান্দা ডিকাদের সামনে হাজির ‘পাহাড়’। ক্লাব নির্বাচন মিটে যাওয়ায় সবুজ-মেরুন তাঁবুতে গুমোট ভাব উধাও। কিন্তু শঙ্করলাল চক্রবর্তীর ড্রেসিংরুমে? গোকুলমের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ ড্র করে এবং ইস্টবেঙ্গল কঠিন দু’টি ম্যাচ জিতে যাওয়ায় সেখানে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপের মেঘ! আইজল এফ সি-কে হারিয়ে ঝলমলে আকাশের খোঁজে তাই মরিয়া পালতোলা নৌকার সওয়ারিরা। ‘‘আইজলের আক্রমণভাগ খুব শক্তিশালী। দু’জন ভাল বিদেশি আছে। ক্রোমার উপর নজর রাখতে হবে। ডোডোজ, আলফ্রেড আছে। রাইটব্যাকটা আক্রমণে ভাল ওঠে,’’ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর কথা শুনলেই বোঝা যায় আইজল নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে ফেলেছেন। এবং সেজন্যই দেখা গেল মোহনবাগান কোচের কপালে চিন্তার বলিরেখা। কারণটা কী? এক) উল্টোদিকে রয়েছেন আনসুমানা ক্রোমার মতো স্টাইকার। যিনি কলকাতা লিগে পিয়ারলেসের হয়ে গোল করে মোহনবাগানের জয়রথ আটকে দিয়েছিলেন। দুই) সনি নর্দে এবং ইউতা কিনওয়াকিকে নিয়ে তৈরি আবহ। চেনা ও সফল এই দুই ফুটবলারকে কখন নামাবেন বা আদৌ নামাবেন কী না তা নিয়ে অঙ্ক কষতে হচ্ছে তাঁকে।
ম্যাচের আগের দিন ঘণ্টা খানেক অনুশীলনের পর শঙ্করলালের মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘ক্রোমার জন্য আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। সেটা করব। আর সনি ও ইউতাকে দলে রাখব কী না সেটা ঠিক করব ম্যাচের দিন সকাল দশটায়।’’ যে কোনও দলের কোচের মতোই প্রথম একাদশ নিয়ে ধোঁয়াশা রাখেন সবুজ-মেরুন কোচ। প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে এরকম বলেই থাকেন কোচেরা। কিন্তু শুক্রবার সকালের অনুশীলন দেখে মনে হয়েছে হাইতি আর জাপানি--দুই বিদেশিই আজ শনিবার যুবভারতীতে মোহনবাগানের প্রথম আঠারোয় থাকবেন। সনিকে সে জন্যই এ দিন সইও করানো হয়েছে। পাহাড়ি ক্লাবের বিরুদ্ধে ডিকা-কিসেক্কারা দু’তিনটে গোল করে ফেললে সনিকে হয়তো শেষ দিকে নামানো হবে। কিছুক্ষণের জন্য। আর ইউতা? যা খবর তাতে প্রথম দলেই হয়তো জায়গা পেতে পারেন জাপানি মিডিও। কারণ মোহনবাগান রক্ষণের যা অবস্থা তাতে ইউতার মতো একজন ব্লকার টিমে দরকার। ওমর ইলসুয়েইনিরের জায়গায় ইউতাকে তাই নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। গিফট রাইকানের দল বেশ শক্তিশালী এ বার। কলকাতা লিগে এ বছর খেলা যাওয়া ক্রোমা, ডোডোজ, আলফ্রেড, করিম ওমোলোজার মতো বিদেশি খেলবেন আইজলে। কলকাতায় ‘খেপ’ খেলার সুবাদে চার জনই পোড় খাওয়া। এঁদেরসঙ্গে আছেন চার্চিল ব্রাদার্স থেকে আসা বেকতুর। আইজল কোচ বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগান খুব শক্তিশালী। ওদের আক্রমণে ডিকা, হেনরি, সনির মতো ফুটবলার আছে। তা সত্ত্বেও আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ নিয়েই নামব।’’ মিজোরামে এখন লিগ চলছে। সে জন্য গত আট দিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে আইজলকে। সে প্রসঙ্গ তুললে রাইকানের জবাব, ‘‘আমি এমন একজন বাস ড্রাইভার যাঁকে দুটো বাস একসঙ্গে চালাতে হচ্ছে। সে জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পনা করতে হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতকে এগিয়ে রাখছেন টমসন
কলকাতা লিগ জেতা মোহনবাগানের অবশ্য সেই সমস্যা নেই। বরং প্রথম ম্যাচের পর প্রায় এক সপ্তাহ বিশ্রাম পেয়েছে পুরো দল। পরিশ্রান্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইছেন শঙ্করলাল পিন্টু মাহাতো, অরিজিৎ বাগুই, অভিষেক আম্বেকরের মতো নবীন ও গতিময় ফুটবলারকে ব্যবহার করে। উইম প্লে-কে অস্ত্র করে ডিকা-হেনরিকে দিয়ে শুরুতে গোল তুলে নেওয়াই তাঁর লক্ষ্য। তবে জীবনে প্রথম বার এককভাবে আই লিগ কোচিং করতে এসে শঙ্করলালের সবথেকে বড় সমস্যা তাঁর রক্ষণ। বিশেষ করে স্টপার। ‘‘রক্ষণ গোছাতে একটু সময় লাগবে। চেষ্টা চলছে।’’ বলে দিন ডিকাদের কোচ। ক্রোমা-ডোডোজ যুগলবন্দীকে কতটা সামলাতে পারেন কিংগসলে ওবুমেনেমে-কিম কিমারা সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy