জুটি: ডার্বিতে হয়তো আক্রম-সনি যুগলবন্দি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আক্রম মোঘরাবিকে নিয়ে মাতামাতি দেখে চুনী গোস্বামী কি বিস্মিত হচ্ছিলেন? তাঁর বিস্ফারিত চোখ দেখে সেরকমই মনে হচ্ছিল।
বহু দিন পর মোহনবাগান লনের চেয়ারে বসে থাকতে দেখা গেল সদ্য আশি পেরোনো কিংবদন্তি স্ট্রাইকারকে। সবুজ-মেরুন জার্সিতে বা দেশের হয়ে অসংখ্য গোল করেছেন চুনী। জিতেছেন বহু ট্রফি। কিন্তু সাফল্যে বা যোগ্যতায় যিনি চুনীর একশো মাইলের মধ্যেও আসেন না, লেবাননের সেই আক্রমকে দেখতে এ দিন যে ভাবে দলে দলে হাজির হয়েছিলেন সদস্য-সমর্থকরা তা দেখে অবাক ক্লাব কর্তারাই। মোহনবাগানের ঘরের ছেলে চুনী নন, আই লিগ জেতানো সনি নর্দেও নন, বুধবারের আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন সব অর্থেই আক্রম। মোহনবাগান মাঠের অনুশীলনে তাঁর গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে একটা প্লেসিং শটের গোল বা ওয়ান টাচের কিছু ভাল পাস দেখে হাততালিও পড়ল দেদার।
আই লিগের ডার্বি এখনও তিন দিন দূরে। আক্রম সেখানে কতটা সফল হবেন তা বলার সময় আসেনি। চার্চিল ব্রাদার্সে চার বছর আগে খেলে যাওয়া স্ট্রাইকার কিন্তু বড় ম্যাচের বারুদে আগুন লাগিয়ে দিলেন এ দিনই। অনুশীলনের পর বলে দিলেন, ‘‘আমার কাছে ডার্বি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগে এখানকার ডার্বি না খেললেও চার্চিলে থাকার সময় ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করেছি। এখনকার ইস্টবেঙ্গলকেও দেখেছি ইউ টিউবে।’’ এ দিনই মরসুমে প্রথমবার আলো জ্বালিয়ে অনুশীলন হল মোহনবাগানে। সেই আলোয় আক্রমকে দেখে মনে হল, খেলার মধ্যে আছেন। রাত জেগে বেইরুট থেকে বিমানে শহরে পৌঁছলেও শারীরিক সক্ষমতার ঘাটতি চোখে পড়েনি। পাস দিয়ে দ্রুত জায়গা নিতে পারেন বত্রিশ বছর বয়সেও। একটা দুরন্ত পাসে গোলও করালেন দিপান্দা ডিকাকে দিয়ে। লেবানন প্রিমিয়ার লিগে নাজমা এফসি-র হয়ে এই মরসুমেই নয় ম্যাচে ছয় গোল করেছেন আক্রম, অন্তত সে রকমই দাবি তাঁর। বলছিলেন, ‘‘তিন সপ্তাহ আগে লেবাননে শেষ ম্যাচ খেলেছি। গোলও করেছি। ফলে ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে সমস্যা নেই।’’ মোহনবাগানের ফুটবল সচিব ও প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও বলছিলেন, ‘‘চার বছর আগে যেমন দেখেছিলাম, সে রকমই আছে। দেখতে হবে ম্যাচ ফিট আছে কি না। সেটা মাঠে না নামলে বোঝা যাবে না।’’
লেবাননের এলিট কাপ জেতা নাজমা থেকে লিয়েনে মোহনবাগানে এসেছেন আক্রম। তাঁর উপর প্রত্যাশার চাপ একটু বেশিই। চাপটা আসলে ডার্বি জেতানোর। কারণ লিগ টেবলে শঙ্করলাল চক্রবর্তীর টিমের যা অবস্থা তাতে খেতাব জেতার কোনও সম্ভবনা নেই। ফলে ডার্বি জেতাই এখন মোক্ষ সবুজ-মেরুনে। আক্রমকে দেখে ফিট মনে হলেও সনি নর্দে কিন্তু এখনও সুস্থ নন। আই লিগে মোহনবাগান ন’টি ম্যাচ খেলেছে তাঁর মধ্যে চারটেতেই খেলেননি হাইতি মিডিও। তাঁকে এ দিন দেখা গেল মাঠের পাশে বালির উপর ট্রেনিং করতে। ক্লাব সূত্রের খবর, সনি খেলবেন ডার্বিতে।
রবিবার খেলানোর চেষ্টা চলছে আই লিগের প্রথম ডার্বি ম্যাচের নায়ক ইউতা কানোয়াকিকেও। জাপানি মিডিও এ দিন তো অনুশীলনের ম্যাচও খেললেন। ড্রেসিংরুমে বসে ইউতা বলছিলেন, ‘‘চেষ্টা করছি ডার্বিতে নামার। এখনও তো তিন দিন হাতে সময় আছে।’’ টিম ম্যানেজমেন্টের আশঙ্কা, ম্যাচ ফিট থাকলেও, ইউতাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে সমস্যা হবে। এবং সেটা ডার্বিতে ঘটার সম্ভবনা প্রবল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy