অপ্রতিরোধ্য: প্রথম গোলের পরে ডিকার উচ্ছ্বাস। সঙ্গী বাকি দুই গোলদাতা ব্রিটো ও হেনরি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
গত বছর কলকাতা লিগে মহমেডানের হয়ে জোড়া হ্যাটট্রিক-সহ ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি।
সেই দিপান্দা ডিকা তার পরে মোহনবাগান জার্সি পরলেও তাঁর গোল করার অভ্যাসে মরচে ধরেনি। ইতিমধ্যেই মোহনবাগানে তাঁর একদা সতীর্থ পিয়ারলেসের আনসুমানা ক্রোমা হ্যাটট্রিক-সহ ছ’টি গোল করে সবার উপরে। রজার মিল্লার দেশের ফুটবলার ডিকা শনিবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে ধরে ফেললেন সেই ক্রোমাকেও (৬)। ডিকা-হেনরি-ব্রিটোদের গোলে মোহনবাগানও ছয় ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে ফের দু’নম্বরে ঠেলে দিল ইস্টবেঙ্গলকে।
এ দিন তিনটে গোলের পরেই দুই হাত আড়াআড়ি ভাবে সামনে রেখে উৎসব করতে দেখা যাচ্ছিল ডিকাকে। খেলা শেষে সে প্রসঙ্গে ক্যামেরুনের এই ফুটবলার বললেন, ‘‘ম্যাচের আগে স্ত্রী ফোনে অনুযোগ করছিল, গোল করে ওর জন্য কিছু করছি না কেন? হ্যাটট্রিকের ওই উৎসব স্ত্রীর জন্য।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘গোল করাই তো আমার কাজ। তাই তো মোহনবাগান আমাকে নিয়েছে।’’
খেলা শুরু হওয়ার আশি সেকেন্ডের মধ্যেই এ দিন রাইটব্যাক অমেয়র থেকে বল পেয়ে গতিতে পুলিশ রক্ষণকে পিছনে ফেলে গোল করা শুরু ডিকার। সবুজ-মেরুন সদস্য গ্যালারিতে তখন ছিয়াত্তরের লিগে মহম্মদ আকবরের সেই ১৭ সেকেন্ডে গোলের স্মৃতিচারণ। ডিকার পরের গোল দ্বিতীয়ার্ধে মেহতাবের কর্নারে জোরালো হেডে। আর সংযুক্ত সময়ে তাঁর তৃতীয় গোল হেনরি কিসেক্কার সঙ্গে যুগলবন্দিতে।
ম্যাচে মোহনবাগানের লক্ষ্য ছিল গোলসংখ্যা বাড়ানো। বিরতিতে দল যখন ডিকা ও ব্রিটোর গোলে ২-০ এগিয়ে, তখন ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলেন ক্লাব সচিব। সেখানেই তিনি ফুটবলারদের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ভিটামিন ‘এম’-এর ঘোষণা শুনেই গোলসংখ্যা বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শঙ্করলালের দল। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রক্ষণকে মাঝমাঠে তুলে এনে খেলছিল। তার ফলে রক্ষণের সঙ্গে তাদের গোলকিপারের মধ্যে ১৫-২০ গজের দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। সেটা কাজে লাগিয়েই দলের দ্বিতীয় গোল মালয়ালি ফুটবলার ব্রিটোর। মাঝমাঠ থেকে সৌরভ দাসের বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে ডান পায়ের ছোট্ট টোকায় গোল করেন আনাস, রিনো অ্যান্টোর ভক্ত। তার পরেই র্যাম্পার্টের দিকে দৌড়ে গিয়ে স্যালুট করেন নৌসেনার এই প্রাক্তন ফুটবলার। কেরলের উৎসব ওনামের দিনে গোল করে খুশির মেজাজে গোকুলমের কোচ বিনু জর্জের হাতে তৈরি এই ফুটবলার বলছিলেন, ‘‘আমার বাড়ি তিরুঅনন্তপুরমে বন্যা হয়নি। কিন্তু কেরলের অনেক জায়গা জলে ভাসছে। মানুষ লড়ছে প্রকৃতির সঙ্গে। ওনামের দিনে সেই লড়াইকে শ্রদ্ধা জানিয়েই ওই স্যালুট।’’ মোহনবাগানের অপর গোলদাতা হেনরি গোল করেন সংযুক্ত সময়ে ডান দিক থেকে অবিনাশ রুইদাসের বাড়ানো বলে।
মোহনবাগান ৫ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ০
মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘পরের এরিয়ান ম্যাচে জিততে হবে। রক্ষণে এখনও খামতি আছে।’’ এ দিন পুলিশকর্মীরা বার চারেক মোহনবাগান রক্ষণ ভাঙলেন। যা ডার্বি আগে শুধরে নিতে হবে সবুজ-মেরুন শিবিরকে।
মোহনবাগান: শিল্টন পাল, অমেয় গণেশ রানাওয়াড়ে, লালছাওয়ান কিমা (ড্যারেন কালদেইরা), গুরজিন্দর কুমার, অভিষেক আম্বেকর, সৌরভ দাস, শিল্টন ডি’সিলভা(মেহতাব হোসেন), ব্রিটো (অবিনাশ রুইদাস), পিন্টু মাহাতা, হেনরি কিসেক্কা,
দিপান্দা ডিকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy