মানবিক: হাসপাতালে ভক্তের সঙ্গে ম্যান ইউ তারকা পোগবা। ছবি: টুইটার।
জোসে মোরিনহোকে ম্যানেজারের পদ থেকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছাঁটাই করায় সবচেয়ে বেশি খুশি কি পল পোগবা? বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম অন্তত তেমনই দাবি করেছে।
ফরাসি তারকাকে জুভেন্তাস থেকে বিপুল টাকা খরচ করে ম্যান ইউ-তে নিয়ে আসার পিছনে কিন্তু বিদায়ী পর্তুগিজ ম্যানেজারেরও যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। অথচ পোগবা আসার পর থেকে একাধিক বার তাঁর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছেন মোরিনহো। প্রচুর ম্যাচে তাঁকে খেলাননি। এমনও বলেছেন যে পোগবা নাকি দলের ‘ভাইরাস’। এবং ম্যান ইউয়ের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই।
পোগবা খুব ভাল খেলেছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপে। তখন মোরিনহো বিদ্রুপ করে যা বলেন তার সারমর্ম হল, ক্লাবের হয়ে খেলার সময় এই খেলাটাই পোগবা খেলতে ভুলে যান। এমনকি সহ-অধিনায়ক হিসেব পোগবার নাম ভাবা হলে, মোরিনহো তাঁর কাছ থেকে নেতৃত্বও কেড়ে নেন। স্বভাবতই এটা পরিষ্কার যে মোরিনহোর জমানায় ম্যান ইউয়ে মনের অবস্থা খুব ভাল ছিল না ফরাসি তারকার। এ দিকে, এক ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডের দাবি, পর্তুগিজ ম্যানেজারের চাকরি যাওয়ার খবর পেয়ে আনন্দে পোগবা নাকি বলে ফেলেন, ‘‘লোকটা ভেবেছিল আমাকে বোকা বানাবে। ক্লাবের ভক্তদেরও আমার বিরুদ্ধে তাতিয়েছিল। ও ক্ষতি করার জন্য বেছে নিয়েছিল সম্পূর্ণ ভুল একজন লোককে।’’
এমনও শোনা যাচ্ছে যে শুধু পোগবা নয়, মোরিনহোর বিদায়ে এক রোমেলু লুকাকু ছাড়া সব ফুটবলার রীতিমতো উৎসব করেছেন। মোরিনহোর প্রাক্তন এবং অন্যতম সহকারী মাইকেল ক্যারিক কিন্তু এই সব ঝামেলা চলতে থাকার সময় ফুটবলারদের (আসলে পোগবাকে) সতর্ক করে বলেছিলেন, কোনও ফুটবলারই ক্লাবের থেকে বড় নয়। মোরিনহো নাকি দলের অন্য ফুটবলারদের পোগবার সঙ্গে মেলামেশা করতেও বারণ করেন। তাই মোরিনহো ছাঁটাই হওয়ার পরে পোগবা একটি বিতর্কিট টুইট করলে তাকে অনেকে ‘কুরুচিকর’ বললেও ‘অপ্রত্যাশিত’ কেউ বলেননি।
মোরিনহোর প্রাক্তন সহকারী স্টিভ ক্লার্কও কিন্তু মুখ খুলেছেন। তাঁর কথা, ‘‘জোসের যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমার বিশ্বাস ওকে কোচ করার জন্য এ বার ইউরোপের ক্লাবগুলোর লাইন পড়ে যাবে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘ম্যান ইউয়ে জোসে ব্যর্থ এমন কথাও বলা যাবে না। গত বার ইপিএলে এই ক্লাব দ্বিতীয় হয়েছে। এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মূলপর্বে তুলেছে ম্যান ইউকে। সঙ্গে তিনটি ট্রফিও জিতেছে। দ্য কমিউনিটি শিল্ড, ইউরোপা লিগ এবং লিগ কাপের কথা বলছি। সেগুলি কি কম কৃতিত্বের? অনেক ভাল দল করেও লিভারপুল তো এই একই সময়ের মধ্যে একটাও ট্রফি জেতেনি।’’ মুখ কিন্তু মোরিনহোও খুলেছেন। তবে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে এবং একটু অন্য রকম ভাবে। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন যে প্রাক্তন সতীর্থদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা অটুট রয়েছে। আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকেও তিনি সম্মান করেন। তাই ক্লাবের পক্ষে অমর্যাদাকর তিনি কিছু বলবেন না। অতীতেও কোনও ক্লাব ছেড়ে আসার সময় যা তিনি বলেননি। বিবৃতিতে তাঁর কথা, ‘‘আমি খুবই গর্বিত যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের ব্যাজ পরতে পেরেছি। আমার মনে হয় ওই ক্লাবে প্রথম দিন থেকেই আমি ভক্তদের বোঝাতে পেরেছি আমার মনোভাবটা।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘যত দিন না আবার পেশাদার ফুটবল জীবনে ফিরি, তত দিন যেন আমার ব্যক্তিগত জীবনে কেউ প্রবেশ করার চেষ্টা না করেন। আমি শান্তিতে থাকতে চাই। তা ছাড়া আমাকে ছাড়াও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের একটা ভবিষ্যৎ আছে। আমারও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটডকে ছাড়া অন্য ভবিষ্যৎ আছে।’’ নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে যে, মোরিনহোকে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ করতে পারে। পর্তুগিজ ম্যানেজারের সঙ্গে রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফিয়োরেন্তিনো পেরেজ়ের সুসম্পর্কের জন্যই এমন খবর রটছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আর ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে যখন লেখা হচ্ছে, এক লুকাকু ছাড়া মোরিনহো-বিদায়ে দলের সব ফুটবলারই খুশি তখনই কিন্তু জেসি লিনগার্ড টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আপনার সান্নিধ্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার ফুটবল জ্ঞানও মুগ্ধ করেছে। আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। প্রিয় কোচ, আশা করি আগামী দিনগুলো আপনার আরও ভাল কাটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy