Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

মাশরফির পরামর্শই মন্ত্র বঙ্গযোদ্ধা জিয়ার

বঙ্গযোদ্ধাদের দলে সুযোগ পাওয়ায় আরও একটা লক্ষ্যও পূরণ হয়েছে জিয়ার।

‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স’-এর সেই লেফ্ট কভার বাংলাদেশের জিয়া উর রহমান। ছবি: সংগৃহীত।

‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স’-এর সেই লেফ্ট কভার বাংলাদেশের জিয়া উর রহমান। ছবি: সংগৃহীত।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৫০
Share: Save:

ভাত, ডাল, আলুপোস্ত তাঁর প্রিয় খাবার। সঙ্গে ইলিশ মাছ হলে মন খুশ।

কিন্তু ‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স’-এর সেই লেফ্ট কভার বাংলাদেশের জিয়া উর রহমান গত বছর প্রো-কবাডি লিগে খেলতেন পুণেরি পল্টনের হয়ে। তাই প্রিয় খাবারদাবার সে ভাবে পাননি। এ বার লিগে বাংলার দল ‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স’ তাঁকে নেওয়ার পরেই সেই সমস্যা দূর হয়ে গিয়েছে তাঁর। নিজে বলছেনও সে কথা।

বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর এই সেনা কর্মী বলছেন, ‘‘গত মে মাসে নিলামের সময় আমি শিবিরে ছিলাম। সেখানেই প্রথম জানতে পারি, বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স আমাকে নিয়েছে। শুনেই মনটা আনন্দে ভরে গিয়েছিল।’’ কারণ জানতে চাইলে এর পরেই জিয়া বলেন, ‘‘প্রথম আনন্দটা হল দলের মধ্যে বাংলায় কথা বলার লোক পাব। সঙ্গে ডাল-ভাত, আলু-পোস্ত, ইলিশ, চিংড়ি, রসগোল্লা। এগুলোর হাতছানি কত দিন এড়িয়ে থাকা যায় বলুন তো?’’

আরও পড়ুন
ফাইনাল খেলবই, হুঙ্কার বঙ্গযোদ্ধা রণ সিংহের, হারল অভিষেকের দল

বঙ্গযোদ্ধাদের দলে সুযোগ পাওয়ায় আরও একটা লক্ষ্যও পূরণ হয়েছে জিয়ার। বলছেন, ‘‘আমার দেশের মাশরফি মর্তুজা ও শাকিব আল হাসান আইপিএলে কলকাতার দলের হয়ে খেলেছেন। ফুটবলে প্রথম আইএসএলে মামুনুল ইসলামও কলকাতার দলের হয়ে খেলেছিলেন। তাই আমার ইচ্ছা ছিল প্রো-কবাডি লিগে কলকাতার হয়ে খেলার। গত বছর পুণেরি পল্টনের হয়ে ভাল খেলায় সেই সুযোগ পেয়ে গিয়েছি এ বার।’’

সোমবার সকালে স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ফাঁকে জিয়া শোনাচ্ছিলেন তাঁর উঠে আসার গল্প। বাংলাদেশের হয়ে এশিয়ান গেমস কবাডিতে ২০০৬ সালে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন তিনি। রংপুরের কুড়িগ্রামের ছেলের কথায়, ‘‘আগে ফুটবলই খেলতাম। কিন্তু নৌ-বাহিনীতে যোগদানের পরেই কবাডিতে নিয়ে আসা হয় আমাকে। ওখানেই খেলাটা ভাল করে রপ্ত করে নিই। আর এটা তো বাংলাদেশের জাতীয় খেলা।’’ আর প্রো-কবাডি লিগে আবির্ভাব? জিয়া বলেন, ‘‘২০১৬ সালে কবাডি বিশ্বকাপে এই মুম্বইয়ে ভাল খেলার পরেই গত বছর পুণেরি পল্টন আমাকে নেয়।’’

আরও পড়ুন
২২ গজ ছেড়ে ভোটের ময়দানে, আওয়ামি লিগের প্রার্থী হচ্ছেন মাশরাফি-সাকিব

বাংলাদেশের ক্রিকেটার মাশরফি মর্তুজা তাঁর কাছে ‘বন্ধু কাম দাদা’-র মতো। সেই মাশরফির কথা উঠতেই শ্রদ্ধায় অবনত জিয়া উর রহমানের মুখ। বলেন, ‘‘দারুণ মানুষ মাশরফি ভাই। আমরা যখন বাংলাদেশে কবাডির জাতীয় শিবিরে, তখন এসেছিলেন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে।সেটাই প্রথম আলাপ। সে দিন আমার সঙ্গে দাবা খেলেছিলেন উনি। এত সফল খেলোয়াড় কিন্তু এক বিন্দু অহঙ্কার নেই। খুব সহজে মিশে যেতে পারেন সকলের সঙ্গে। তার পরে বহু বার কথা হয়েছে ওঁর সঙ্গে।’’ বঙ্গযোদ্ধাদের বাংলাদেশি সৈনিক সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘এ বার প্রো-কবাডি খেলতে আসার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে দেখা হয়েছিল মাশরফি ভাইয়ের সঙ্গে। আমি বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলছি শুনে অভিনন্দন দেন। সঙ্গে দেন কলকাতা সংক্রান্ত নানা মূল্যবান পরামর্শ। যেগুলো পরখ করব কলকাতা গিয়ে।’’

আরও পড়ুন
অক্ষয়ের ভোকাল টনিক, দুরন্ত জয় বঙ্গযোদ্ধাদের

লিগে জিয়ার দল বি গ্রুপে ছয় দলের মধ্যে প্রথম দুইয়ে নেই। সে কথা উঠলেই আত্মবিশ্বাসী গলায় বাংলাদেশের এই কবাডি খেলোয়াড় বলেন, ‘‘এখনও অনেক খেলা বাকি। ইনশাল্লাহ, দেখবেন, ডিসেম্বরের শেষ দিকে কলকাতা পর্ব শুরু হওয়ার আগেই আমরা প্রথম চারে চলে আসবই।’’

প্রো-কবাডি খেলতে এসে বাংলার দলে খেলার স্বপ্ন সফল। বছরের শেষে আর কোনও ইচ্ছা পূরণ বাকি রয়েছে? এ বার হাসেন জিয়া। বলেন, ‘‘আমার এক খুড়তুতো ভাই রয়েছে। ও অক্ষয়কুমারের একজন বড় ফ্যান। ট্রফি জিততে চাই। আর খেতাব জিতে দেশে ফেরার আগে নিজের জার্সিতে অক্ষয়ের একটা সই নিয়ে যেতে চাই ভাইয়ের জন্য।’’

(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় জিয়া উর রহমানের পরিবর্তে অন্য একজনের ছবি দেওয়া হয়েছিল। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE