Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘জিদানের রণনীতিতে বাজিমাত রিয়ালের’

বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদ জিতল শুধু মাত্র জিদানের দুর্ধর্ষ রণনীতিতে।

দুরন্ত: গোল না পেলেও ফারাক গড়ে দেন রোনাল্ডোই। ছবি: রয়টার্স।

দুরন্ত: গোল না পেলেও ফারাক গড়ে দেন রোনাল্ডোই। ছবি: রয়টার্স।

সুব্রত ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২
Share: Save:

সফল কোচ হওয়ার জন্য নাকি বড় ফুটবলার হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি অন্তত এই যুক্তির সঙ্গে একমত নই। কার্লোস বিলার্দো, আলেক্স ফার্গুসন, আর্সেন ওয়েঙ্গার, জোসে মোরিনহোর মতো কয়েক জন ব্যতিক্রম। আমার মতে, বড় ফুটবলারদের পক্ষেই কোচ হিসেবে সাফল্য পাওয়া সহজ। সেরা উদাহরণ জিনেদিন জিদান।

বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদ জিতল শুধু মাত্র জিদানের দুর্ধর্ষ রণনীতিতে। ম্যাচের ২৮ মিনিটে জোসুয়া খিমিচের গোলে ঘরের মাঠে এগিয়ে গিয়েছিল বায়ার্ন। এই ধরনের ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়ানো কিন্তু সহজ নয়। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ দলটির নাম যখন বায়ার্ন। অথচ দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে রিয়াল ২-১ জিতল। সেটা সম্ভব হয়েছে জিদান-ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর যুগলবন্দিতে।

অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে, রিয়ালের জয়ের ক্ষেত্রে রোনাল্ডোর কী ভূমিকা? গোল তো করেছেন মার্সেলো এবং মার্কো আসেন্সিয়ো। এই ম্যাচে রোনাল্ডোকে একটু অন্য রকম ভাবে ব্যবহার করেছিলেন জিদান। রিয়াল ম্যানেজার লক্ষ করেছিলেন, বায়ার্নের ডিফেন্ডাররা ম্যাচের শুরু থেকেই অতিসতর্ক ছিলেন। দেরি করছিলেন ট্যাকল করতে। সেই কারণেই সি আর সেভেনের উপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন, বায়ার্নের ডিফেন্ডারদের মাঠের একটা প্রান্তে টেনে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা জায়গা তৈরি করার। যাতে অন্যরা গোল করতে পারেন। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত ভাবে এই কাজটাই করে গেলেন পর্তুগাল অধিনায়ক। ওঁর জন্যই প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে সমতা ফেরালেন মার্সেলো। আর ৫৭ মিনিটে আসেন্সিয়ো জয়সূচক গোল করেন।

জিদান যখন খেলতেন, তখন তাঁকেও বিপক্ষের তিন-চার জন ফুটবলার ঘিরে থাকতেন। এ ভাবেই তিনি সতীর্থদের জন্য গোলের রাস্তা খুলে দিতেন। খেলোয়াড় জীবনের অভিজ্ঞতাই বুধবার রাতে কাজে লাগালেন রিয়ালের ম্যানেজার হিসেবে।

জিদানের কৌশল যতটা মুগ্ধ করেছে, ঠিক ততটাই অবাক হয়েছি বায়ার্ন ম্যানেজার য়ুপ হেইনকেসের রণনীতি দেখে। রিয়ালের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের মধ্যে প্রচুর পাস খেলছিলেন আরয়েন রবেন, ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি, হামেস রদ্রিগেসরা। কিন্তু ম্যাচের আট মিনিটের মধ্যেই চোট পেয়ে বেরিয়ে যান রবেন। তা সত্ত্বেও রণকৌশলে কোনও পরিবর্তন করেননি হেইনকেস। দ্বিতীয়ত, বেশি পাস খেলতে গিয়ে আক্রমণে ওঠার গতিটা অনেক কমে গিয়েছিল বায়ার্নের। এই সুযোগে রক্ষণকে সাহায্য করতে নেমে আসছিলেন টোনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচরা। আর তাই সে ভাবে গোল করার বলই পেলেন না বায়ার্নের দুই স্ট্রাইকার টোমাস মুলার ও রবার্ট লেয়নডস্কি। তাই এগিয়ে গিয়েও জিততে পারল না বায়ার্ন। আশা করছি, ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়েই দ্বিতীয় পর্বে নামবেন মুলাররা। যদিও তাতে খুব একটা লাভ হবে বলে মনে হয় না। সান্তায়াগো বের্নাবাউতেও যে বিপক্ষে থাকবেন জিদান ও রোনাল্ডো!

বায়ার্ন মিউনিখ: স্বেন উলরাইস, জোসুয়া খিমিচ, জেহম বোয়াটেং (নিকলাস জুলে), ম্যাটস হুমেলস, রাফিনহা, আরয়েন রবেন (থিয়াগো আলকান্তারা), জাভি মার্তিনেস (কোঁহতা তুলিসো), হামেস রদ্রিগেস, ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি, টোমাস মুলার ও রবার্ট লেয়নডস্কি।

রিয়াল মাদ্রিদ: কেইলোর নাভাস, দানি কার্ভাহাল (করিম বেঞ্জেমা), সের্খিয়ো রামোস, রাফায়েল ভারান, মার্সেলো, লুকা মদ্রিচ, ক্যাসিমিরো (মাতেয়ো কোভাচিচ), টোনি ক্রোস, লুকাস ভাসকোয়েস, ইস্কো (মার্কো আসেন্সিয়ো) ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE