Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘কের্বেরের কাছে আজ সেরিনা হারলে আমি অবাকই হব’

প্রতি রাউন্ডেই সেরিনার খেলায় নজর রাখছি। দেখছি ক্রমশ ও আরও আরও ভাল খেলছে। আমি কিন্তু কোনও বিশেষ একটা দিকের কথা বলছি না।

বরিস বেকার
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

টেনিসে সেরিনা উইলিয়ামস নিজেকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে যেখানে খুব বেশি কেউ কখনও পৌঁছতে পারেনি। উইম্বলডনে মেয়েদের ফাইনাল নিয়ে আলোচনা তাই ওকে দিয়েই শুরু করতে হচ্ছে। অথচ ওর প্রতিপক্ষ আমার নিজের দেশ জার্মানির মেয়ে। নিছক উপস্থিতি দিয়েই দেখছি সেরিনা পরের পর প্রতিদ্বন্দ্বীকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। ভাবছি ওর ফিরে আসাটাই শীর্ষ বাছাইদের কাছে কতটা অশুভ সংকেত! আসলে ওর মানের একজন খেলতে শুরু করলে সেটা তো হবেই।

প্রতি রাউন্ডেই সেরিনার খেলায় নজর রাখছি। দেখছি ক্রমশ ও আরও আরও ভাল খেলছে। আমি কিন্তু কোনও বিশেষ একটা দিকের কথা বলছি না। সব দিক থেকেই উন্নতি হচ্ছে। কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হয়ে যেন ওরই ভাল হল। মেয়েটা আরও কঠিন হয়ে উঠল। অনেকটা সেই আগের মতো। আমি তো আগেই বলেছিলাম, যে ফরাসি ওপেনে ওকে বাছাই তালিকায় না রাখা অন্যায় হয়েছিল। ভুল যে বলিনি তা উইম্বলডনে প্রমাণ করছে সেরিনা। সব চেয়ে অবাক হচ্ছি ওর সার্ভিসে আগের শক্তি ফিরে এসেছে দেখে। সেই সঙ্গে কোর্টের সব দিকে সমান ছন্দে দৌড়চ্ছে। বলা যায়, এ সবই চমকের পর চমক। বিশ্বাস করুন, এই সেরিনা ফাইনালে হেরে গেলে আমি অবাক হব। সেমিফাইনালে আর এক জার্মান জুলিয়া জর্জেসকে তো উড়িয়েই দিল। ৬-২, ৬-৪ ফলই তার সাক্ষ্য। এ বার অ্যাঞ্জেলিক কের্বেরের পালা।

কের্বেরকে নিয়েও কিছু কথা বলতেই হয়। হাজার হোক নিজের দেশের মেয়ে বলে কথা। কের্বের কিন্তু এর আগেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলেছে। শুধু খেলেনি, ২০১৬ সালে অস্ট্রেলীয় ওপেনে চ্যাম্পিয়ন। সে বছরই জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্র ওপেন। দু’বছর আগে বিশ্বের এক নম্বরও হয়। সার্কিটে আছে ২০০৩ সাল থেকে। তার উপর অতীতে দু’বার হারিয়েছে সেরিনাকে। হেরেছে অবশ্য ছ’বার। হালফিলে ওর ধারাবাহিকতাও খুব খারাপ নয়। ফাইনাল খেলছে অসম্ভব প্রতিভাবান ইয়েলেনা অস্তাপেঙ্কোর মতো প্রতিভার বিরুদ্ধে জিতে। ইয়েলেনাও কিন্তু দারুণ ভাবে উঠে আসছে। গত বার ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল। নতুনদের মধ্যে ওকে ঘিরে সবার প্রত্যাশা। আমারও। আগামী দিনে নিশ্চয়ই এই মেয়েটা নিজেকে আর ভাল জায়গায় নিয়ে যাবে।

ফিরি কের্বের প্রসঙ্গে। এই প্রতিযোগিতায় অন্তত ও ভাল ফর্মে আছে। ফাইনালে সেরিনার মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ওর প্রথম কাজটা হওয়া উচিত মাথা ঠান্ডা রাখা। এমনিতে ওর খেলা ঘাসের কোর্টে দারুণ মানানসই। আর ওর শক্তি হচ্ছে গ্রাউন্ডস্ট্রোক। সাধারণত বিশ্বসেরারাই ওর মতো গ্রাউন্ডস্ট্রোক মারতে পারে। একটা জায়গাতেই ওকে উন্নতি করতে হবে। মনোঃসংযোগ। মাঝে মাঝেই অন্যমনস্ক হয়ে যায়। সেরিনার বিরুদ্ধে সে সব করলে একেবারেই চলবে না।

আরও পড়ুন: ‘এস’-যুদ্ধে শেষ হাসি সেই অ্যান্ডারসনের

শুরু করেছিলাম সেরিনাকে দিয়ে। শেষও করছি। কে না জানে, শুধু সংখ্যার বিচারেই ও অনেক জায়গায় সবার চেয়ে আগে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল সেরিনাই সব চেয়ে বেশি বার খেলেছে। চাপকে ভয় পায় না। নিজের সুনাম ধরে রাখতে চিরকালই একাগ্র। সেই সঙ্গে জয়ের খিদেটা অসম্ভব। স্বভাবতই এ হেন প্রতিদ্বন্দ্বী আমাদের কের্বেরের কাছে কঠিন ঠাঁই। আর একটা কথা মনে পড়ছে। এর আগে মা হওয়ার পরে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিল কিম ক্লিস্টার্স। ঘটনাচক্রে সেরিনাকে হারিয়েই জিতেছিল। তখন কী ভেবেছিলাম, কিছু দিনেই কিমের রেকর্ড স্পর্শ করতে সেন্টার কোর্টে সেরিনাকেই একদিন দেখব!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE