ধাক্কা: ম্যাচ ফিট নন সনি। আলোচনায় কোচ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
চোট যেন তাড়া করেই চলেছে সনি নর্দেকে!
গত বছর আই লিগের শেষ ডার্বি না খেলে দেশে ফিরেছিলেন চোট সারাতে। আর এ বার সুস্থ হয়ে ফিরে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে কাবু হয়ে ফের আই লিগের প্রথম ডার্বির বাইরে হাইতি থেকে খেলতে আসা সবুজ-মেরুন শিবিরের এই তারকা ফরোয়ার্ড।
শুক্রবার মাঠে নামেননি। বড় ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে শনিবার সকালে মোহনবাগান মাঠে দলের অনুশীলনে নামলেও, সারাক্ষণ দাঁড়িয়েই ছিলেন সনি নর্দে। অনুশীলন চলার মাঝে মোহনবাগানের অন্য দুই বিদেশি হেনরি কিসেক্কা ও দিপান্দা ডিকার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। তার পরে র্যাম্পার্টের দিকে ফুটবলারদের বসার জন্য অস্থায়ী আস্তানায় ঢুকে পড়েন সনি। তবে ডার্বি না খেলতে পারার জন্য তিনি যে হতাশ, তা বোঝা যায়, সনির কথাবার্তায়। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ডার্বি খেলতে না পেরে সত্যিই হতাশ লাগছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই এই ম্যাচটা খেলতে মুখিয়ে থাকে। পরের ডার্বি ২৭ জানুয়ারি। এখন সেই ম্যাচটা খেলার জন্যই অপেক্ষা করছি।’’ এই কথার সঙ্গেই সনি যোগ করেন, ‘‘এই মুহূর্তে আই লিগের বাকি ম্যাচগুলিতে আগে ম্যাচ ফিট হতে চাই। কারণ দলের বাকি ম্যাচ জিততে বড় ভূমিকা নিতে হবে।’’ মোহনবাগান তাঁবুর প্রবেশদ্বারের কাছে সনির কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ডার্বির আগে সতীর্থদের তিনি কিছু পরামর্শ দিলেন কি না। সনি বলেন, ‘‘এই ম্যাচের গুরুত্ব কী, সবাই জানে।’’
সনি ছাড়াই মোহনবাগান ড্রেসিংরুম যে রবিবারের মহারণের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে, তা দলের খেলোয়াড় আজহারউদ্দিন মল্লিকের কথায় স্পষ্ট। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে আজহার বলছিলেন, ‘‘সনি না খেললেও তো দল ডার্বি জিতেছে। আমরা তৈরি ।’’
আরও পড়ুন: ডিকাদের আক্রমণকে সমীহ আলেসান্দ্রোর
আসলে বড় ম্যাচে সনি না খেলায় মোহনবাগান যতটা চাপে। তার চেয়েও শঙ্করলাল চক্রবর্তীর দলের চাপ বাড়িয়েছে রক্ষণ ও মাঝমাঠ। কারণ যুবভারতীতে এ বারের আই লিগে তাঁদের তিন হোম ম্যাচে ছয় গোল খেয়েছেন কিংসলেরা। দুই সাইডব্যাক ওভারল্যাপে গেলে নামতে সময় নেন। দুই স্টপারের মধ্যেও কখনও কখনও দূরত্ব বেড়ে যায়। দুই প্রান্ত থেকে বল রেখে ত্রাস সৃষ্টি করতে পারেন ইস্টবেঙ্গলের লালরিনডিকা রালতে বা লালরাম চুলোভারা। যা কাজে লাগাতে পারেন লাল-হলুদের নবাগত বিদেশি খাইমে স্যান্টোস কোলাদো।
আরও পড়ুন: হঠাৎ তারকা হারিয়ে এখন দুই কোচের নজরেই রক্ষণ
মোহনবাগান কোচ প্রথমে তাই বলেন, ‘‘রক্ষণে কোনও অসুবিধা নেই।’’ পরক্ষণেই বলেন, ‘‘ওদের এনরিকে না থাকলেও কোলাদোকে নিয়ে চিন্তা তো থাকছেই। জোড়া পর্দা টাঙিয়ে ইস্টবেঙ্গল অনুশীলন করছে নতুন বিদেশি ফুটবলারটিকে লুকিয়ে রেখে চমক দেওয়ার জন্য। শুনলাম, ওর প্রথম টাচ আর গতিটা বেশ ভাল।’’ কোলাদোর জন্য তাই মোহনবাগানের পরিকল্পনা দু’টি। কোলাদো উইংয়ে খেললে তাঁকে ধরবেন মোহনবাগানের ওমর এলহুসেইনি। যাঁকে ভাবা হচ্ছে সনির বিকল্প হিসেবে। বিপক্ষের আক্রমণের সময় নামতেও বলা হয়েছে তাঁকে। আর কোলাদো স্ট্রাইকারে খেললে মোহনবাগান মাঝমাঠে ইউতার সঙ্গে মেহতাব বা সৌরভ দাসের মধ্যে যিনি খেলবেন তিনি ধরবেন। তা ছাড়াও সেট পিস নিয়ে বিশেষ ক্লাসও হয়েছে।
ছয় ম্যাচের পরে নয় পয়েন্টে দাঁড়িয়ে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল। গোল পার্থক্যে সাতে ইস্টবেঙ্গল। আটে মোহনবাগান। বিপক্ষকে সমীহ করে মোহনবাগান কোচ বলছেন, ‘‘সালাম আসায় ওদের রক্ষণ অনেক পোক্ত। জবি জাস্টিন গোলের মধ্যে। তার উপরে ওদের কোচ পৃথিবীর অন্যতম সেরা ক্লাবে কাজ করেছেন। তাই ইস্টবেঙ্গলই এগিয়ে।’’ কিন্তু মোহনবাগান তো শেষ সাত ডার্বিতে অপরাজিত! এই তথ্য কি আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে? শুনে হাসেন মোহনবাগান কোচ। বলেন, ‘‘ও সব ভুলেছি। রবিবার সম্পূর্ণ নতুন একটা ডার্বি খেলতে নামব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy