চর্চায়: সীমান্তের ও-পার থেকেও যুবরাজকে শুভেচ্ছা। ফাইল চিত্র
ক্রিকেট মাঠে বৈরিতা প্রবল। কিন্তু মাঠের বাইরে তাঁদের সুসম্পর্ক বহুদিনের।
যুবরাজ সিংহের অবসর ঘোষণার পরে তাঁর সম্পর্কে প্রশংসাসূচক মন্তব্য এল সীমান্তের ওপার অর্থাৎ পাকিস্তান থেকেও। আর তা করলেন যুবরাজের সেই বন্ধু শোয়েব আখতার। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ বলছেন, ‘‘যুবি একাধারে রক-স্টার। অন্য দিকে, ভারতকে ম্যাচ জেতানোর আসল লোক। একজন দারুণ জুনিয়র ও সবার উপরে আমার একজন ভাল বন্ধু।’’ সোমবার অবসর ঘোষণাকালে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ শোয়েব সম্পর্কে যুবরাজ বলেছিলেন, ‘‘শোয়েব একমাত্র বোলার যে আমার ক্রিকেট জীবন সন্ত্রস্ত করে রেখেছিল। ও যখনই বোলিং এন্ডের দিকে এগিয়ে যেত, তখন ভয় হত। শোয়েবকে খেলা সাহসের ব্যাপার।’’
যুবরাজ সম্পর্কে শোয়েব আরও বলেন, ‘‘আমার মতে, যুবরাজ সিংহের চেয়ে ভাল বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান সাম্প্রতিক কালে পায়নি ভারত। সাবলীল ভাবে ক্রিকেট খেলে গিয়েছে ও।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘২০০৩ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ন পার্কে প্রথম বল করেছিলাম যুবরাজের বিরুদ্ধে। দারুণ খেলেছিল সে দিন। আমিই প্রথম গিয়ে আলাপ করে কথা বলেছিলাম যুবির সঙ্গে। ক্রিকেটের প্রতি ওর জ্ঞান দেখে সে দিন মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। সেটা পরে টের পাই ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ওর পারফরম্যান্স দেখে। আর স্টুয়ার্ট ব্রডকে ছয় বলে মারা ছয় ছক্কা তো অবিশ্বাস্য। এ রকম আর কাউকে দেখিনি।’’ যুবি সম্পর্কে শোয়েবের মূল্যায়ন, ‘‘বড় খেলোয়াড়। দেশপ্রেমীও। ভারতকে জেতানোর জন্য শেষ পর্যন্ত লড়ে যেত যুবি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ও ব্যাট করতে নামলেই আমাদের পরিকল্পনা থাকত যুবিকে দ্রুত প্যাভিলিয়নে পাঠানো। কারণ, ও ছিল একজন প্রকৃত ম্যাচ উইনার।’’
যুবরাজকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন শাহিদ আফ্রিদিও। তিনি লিখেছেন, ‘‘যেমন দুর্দান্ত ফিল্ডার, তেমনই বড় ব্যাটসম্যান ছিলে তুমি। বড় ম্যাচে তোমার টেম্পারামেন্ট ছিল দেখার মতো। তোমার লড়াই প্রেরণা জাগায়। একসঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছি। অবসর জীবনও ভাল কাটুক তোমার।’’
সোমবার অবসর ঘোষণার সময়ও বাবার কথা বলতে গিয়ে যুবরাজ বলেছিলেন, ‘‘বাবা সব সময়েই আমার কাছে ছিলেন ড্রাগনের মতো রাগী।’’ মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুলেছেন ৬১ বছরের যোগরাজ। যাঁকে ক্রিকেটার যুবরাজের উত্থানের পিছনে বেশির ভাগ সময়েই দেখা গিয়েছে রাশভারী অভিভাবক হিসেবে। ভারতের হয়ে মাত্র একটি টেস্ট ও ছ’টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার যোগরাজ। এ দিন যুবরাজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে যোগরাজ বলেন, ‘‘একটা সময় পর্যন্ত আমি যুবরাজের সঙ্গে রূঢ় ব্যবহারই করতাম। কারণ সকলের কাছে আমি কিছু প্রমাণ করতে মুখিয়ে ছিলাম। যুবি আজ নিশ্চয়ই তা বুঝতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘যুবরাজের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি সব সময়েই যুবিকে বলি ওর বাবা হিসেবে আমি গর্বিত।’’
যুবরাজ যখন প্রথম ভারতীয় দলে সুযোগ পান, তখন জাতীয় নির্বাচক ছিলেন চাঁদু বোরডে। ৮৪ বছরের এই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারও যুবি সম্পর্কে বলছেন, ‘‘যুবরাজ হল একজন সাহসী ব্যক্তিত্ব। যে অন্যদের কাছে প্রেরণা হতে পারে। শারীরিক সমস্যা উপেক্ষা করেও যে ভাবে যুবরাজ ক্রিকেট মাঠে দাপট দেখিয়েছে, তা শ্রদ্ধা জাগানোর মতো ব্যাপার। সাধারণ মানুষকে দেখিয়েছে, হেরে না গিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার রাস্তা।’’ তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ২০ বছরের যুবরাজের মধ্যে তিনি অসাধারণ কী দেখেছিলেন, যা নিয়ে তিনি সওয়াল করেন যুবরাজকে দলভুক্ত করার জন্য। উত্তরে বোরডে বলেছেন, ‘‘ওর প্রতিভা ছিল অসাধারণ। দেশের হয়ে খেলতে নেমে ও যা যা করেছে তা অসাধারণ। ভাল বাঁ হাতি স্পিনার, ফিল্ডার ও ব্যাটসম্যান। এর
বাইরে আর কী চাই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy