Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গিলকে বাবার বার্তা, এখনই উচ্ছ্বাসের কিছু নেই

কৃষক বাবা নিজেদের খেতে ছোট জায়গা করে ছেলেকে প্র্যাক্টিস করাতেন। কিছুটা বড় হয়ে যাওয়ার পরে বাড়ির উঠোনেই কংক্রিটের পিচ বানিয়ে দিয়েছিলেন শুভমনের জন্য। শুধুমাত্র এই দিনটির অপেক্ষায়। 

শিক্ষক: রাবাডাদের জন্য ছেলেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ বাবার। ফাইল চিত্র

শিক্ষক: রাবাডাদের জন্য ছেলেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ বাবার। ফাইল চিত্র

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৪
Share: Save:

ভারতীয় টেস্ট দলের ক্রিকেটার হিসেবে ছেলেকে দেখতে চেয়েছিলেন লখিন্দর সিংহ গিল। ছেলের যখন তিন বছর বয়স, তখন থেকেই দিনে ৫০০টি করে বল ছুড়ে ‘নক’ করাতেন লখিন্দর। কৃষক বাবা নিজেদের খেতে ছোট জায়গা করে ছেলেকে প্র্যাক্টিস করাতেন। কিছুটা বড় হয়ে যাওয়ার পরে বাড়ির উঠোনেই কংক্রিটের পিচ বানিয়ে দিয়েছিলেন শুভমনের জন্য। শুধুমাত্র এই দিনটির অপেক্ষায়।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই টিভির সামনে বসেছিলেন লখিন্দর। সাংবাদিক বৈঠকে এমএসকে প্রসাদ দল ঘোষণা করার সময় চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়েছিলেন। প্রথম ১০টি নামের মধ্যে তাঁর ছেলের নাম শুনতে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন লখিন্দর। কিন্তু নির্বাচক কমিটির প্রধান একেবারে শেষে ঘোষণা করেন শুভমন গিলের নাম। শোনার পরে প্রথমে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেননি লখিন্দর। আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘‘শুরুতে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। স্নায়ুর চাপে টিভির সামনে থেকে উঠে গিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎই যেন শুভমনের নামটি শুনতে পাই। দৌড়ে আসি টিভির সামনে। উপলব্ধি করি, হ্যাঁ যা শুনেছি সেটাই ঠিক। অনেক পরিশ্রমের ফল পেয়েছে শুভমন। আশা করি, এই সুযোগ ও কাজে লাগাবে।’’ টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার পরেই বাবাকে ফোন করেছিলেন শুভমন। ছেলেকে ফোনে কী বললেন লখিন্দর? ‘‘আমি সাফ বলে দিয়েছি, একেবারেই উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি করার পরে উৎসব করা যাবে। কিন্তু সুযোগ পেয়ে খুশি হওয়ার চেয়ে বেশি কিছু করার নেই।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে যে হেতু ওকে কোচিং করিয়েছি, তাই জানি ও কখনও উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারে না। আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবেগ ধরে রাখাই আসল।’’

শুভমনের দলে জায়গা পাওয়ার খবরে প্রতিবেশীরা উৎসব শুরু করেন। কিন্তু লখিন্দর প্রতিবেশীদের উৎসব বন্ধ করতে বাধ্য করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখনই যদি সব আনন্দ করে ফেলি তা হলে তো ছেলেও আত্মতুষ্ট হয়ে যাবে। সেটা একেবারেই চাই না। ওয়ান ডে-তে সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সে ভাবে কিছু করে দেখাতে পারেনি। আমি চাই না টেস্টে সেই পরিস্থিতি তৈরি হোক।’’ শুভমন যদিও টুইট করেছেন, ‘‘সাদা হোক অথবা নীল জার্সি। দেশের হয়ে সুযোগ পাওয়া সব সময়েই সম্মানের।’’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে আসার পরেই বাবার কোচিংয়ে প্র্যাক্টিস করেন শুভমন। লখিন্দর আশা করেছিলেন, টেস্ট দলে হয়তো সুযোগ আসতে পারে। কাগিসো রাবাডা, ভার্নন ফিল্যান্ডারদের সামলানোর জন্য কী করিয়েছিলেন তখন? লখিন্দর বললেন, ‘‘প্লাস্টিক বল ছুড়ে ব্যাট করিয়েছি। প্লাস্টিক বল সুইংয়ের সঙ্গে বাউন্সও করে। রাবাডার হাতে বাউন্স আছে। ফিল্যান্ডার বিখ্যাত সুইংয়ের জন্য। তাঁদের বিরুদ্ধে মানিয়ে নিতে এই অনুশীলন করিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Subham Gill Cricket Team India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE