শ্রদ্ধা: সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দেহ মোড়া মোহনবাগান ক্লাবের পতাকায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শেষ যাত্রায় প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ ঢাকা ছিল শুধু মোহনবাগান পতাকায়। অন্য কোনও রং নয়, প্রিয় সবুজ-মেরুন শরীরে জড়িয়েই পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন তিনি। ক্লাবের পক্ষ থেকে সোমবার দুপুরে তাঁর মরদেহে পতাকা ও পুষ্পস্তবক দেওয়া হয়।
বর্ণময় জীবন ছিল সোমনাথবাবুর। নামজাদা ব্যারিস্টার, দীর্ঘদিনের সাংসদ, রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী সদস্য এবং লোকসভার স্পিকার। কিন্তু সবার উপরে ছিল খেলাধুলার প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালবাসা। ফুটবল, টেবল টেনিস, ভলিবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িয়ে ছিলেন তিনি। ফুটবল বলতে তাঁর কাছে অবশ্য ছিল শুধুই মোহনবাগান। গত শতকের ষাট থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত নিয়মিত ময়দানে প্রিয় ক্লাবের খেলা দেখতে আসতেন। বসতেন গ্যালারির একটি বিশেষ জায়গায়। অনেক সময় পরিবার নিয়েও আসতেন মাঠে। তাঁকে মোহনবাগান কর্মসমিতির সদস্য করেছিলেন প্রয়াত সচিব ধীরেন দে। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত ছিলেন সেই পদে। ক্লাবের কোনও আইনি পরামর্শ দরকার হলে ধীরেনবাবু তো বটেই, এখনকার সচিব অঞ্জন মিত্র ছুটে যেতেন সোমনাথবাবুর দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে। ক্লাবের স্বার্থে বহু মামলা লড়েছেন। লোকসভার স্পিকার হওয়ার পরে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়েছিল শতবর্ষ প্রাচীন ক্লাবের পক্ষ থেকে। কিংবদন্তি ফুটবলার চুনী গোস্বামী বলছিলেন, ‘‘আমরা যখন খেলতাম, তখন গ্যালারির একটি বিশেষ জায়গায় বসে সোমনাথদা খেলা দেখতেন। উৎসাহ দিতেন। সব কাজ ফেলে ছুটে আসতেন। মোহনবাগান-অন্ত প্রাণ ছিলেন।’’ আর সচিব অঞ্জনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সোমনাথদা না থাকলে আমি আজ সচিব হতে পারতাম না। ক্লাবের বহু সমস্যার আইনি সমাধান করেছেন উনি।’’
মোহনবাগান ছাড়াও সোমনাথবাবু টেবল টেনিসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মৃত্যুর দিন পর্যন্ত। দু’দফায় প্রায় আট বছর ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ টেবল টেনিস সংস্থার প্রেসিডেন্ট। তাঁর আগে অবিভক্ত বাংলার টিটি সংস্থার সর্বোচ্চ পদে ছিলেন ২০০০-২০০১ এ। পরে পদত্যাগ করেন। রাজ্য ভলিবল সংস্থার তিনি ছিলেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তাঁর নেতৃত্বেই ২০০৭-এ কমনওয়েলথ ভলিবলের আসর বসেছিল বাংলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy