সেরা সৌরভের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন প্রধান অতিথি দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার প্রাক্তন ব্যুরো চিফ (পূর্বাঞ্চল) সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। রয়েছেন এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি ডি ডি পুরকায়স্থ। নিজস্ব চিত্র
১০০ এবং ২০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়ে এ বারের আনন্দ ক্রীড়ার সেরা ক্রীড়াবিদ হলেন ট্যাক্সেশন বিভাগের সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ময়দানে তালতলা মাঠে রবিবারের আনন্দ ক্রীড়া প্রকৃত অর্থেই এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মী ও তাঁদের পরিবারের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। এক দিকে যেমন মাঠের মধ্যে চলেছে প্রতিযোগিতা, তেমনই কচিকাঁচারা সময় কাটিয়েছে কার্নিভালে। সকাল থেকেই খাবারের স্টলে ছিল ভিড়।
পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড় এবং ২০০ মিটার দৌড়ে এ বার প্রতিযোগীর সংখ্যা এত বেশি ছিল যে দু’টি ক্ষেত্রেই তিনটি করে হিট হয়। দু’টি দৌড়েই প্রথম হন ট্যাক্সেশন বিভাগের সৌরভ। ৪x১০০ মিটার রিলে রেসে যোগ দিয়েছিল ৯টি দল। তার মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ছিল দু’টি দল। তাদের একটি দল প্রথম হয়। অন্যটি তৃতীয়। দ্বিতীয় স্থানটি দখল করে নেয় আইটি বিভাগ। দড়ি টানাটানির প্রতিযোগিতা টাগ অব ওয়ার-য়েও ম্যানুফ্যাকরাচারিং বিভাগের আধিপত্য বজায় ছিল। ম্যানুফ্যাকচারিং বারাসত প্রথম, আইটি দ্বিতীয় এবং ম্যানুফ্যাকচারিং সল্টলেক তৃতীয় হয়।
পুরুষদের মতো মহিলাদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতাতেও ছিল টানটান উত্তেজনা। ৭৫ মিটার দৌড় জিতে নেন বাংলা ম্যাগাজিনের বৈশালী সরকার। চামচের মধ্যে গুলি নিয়ে দৌড়ে ছিল বাংলা ম্যাগাজিনের আধিপত্য। প্রথম মধুরিমা সিংহ রায়, দ্বিতীয় পিয়ালী বালা এবং তৃতীয় পায়েল সেনগুপ্ত, তিনজনই ওই বিভাগের। মহিলা কর্মীদের ২০০ মিটার হাঁটা প্রতিযোগিতায় আনন্দবাজার বার্তা বিভাগের গার্গী গুহঠাকুরতা তৃতীয় হন। প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছেন ইন্টারনাল অডিট বিভাগের নবনীতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অ্যাড মার্কেটিং সার্ভিসেস-এর সুনীতা মজুমদার। মিউজিক্যাল চেয়ারে অবশ্য এবিপি-র কোনও কর্মীই প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় হতে পারেননি। তিনটি স্থানই দখল করে নেন কর্মীদের স্ত্রীরা। প্রথম হন কুহেলী বন্দ্যোপাধ্যায়।
বড়দের সঙ্গে ছোটরাও এ দিন সমান ভাবে দৌড়েছে। ৪-৭ বছরের কর্মীদের ছেলেদের ৫০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়েছে মোল্লা ইরফানুর রহমান। ৪-৭ বছরের মেয়েদের ৫০ মিটার দৌড়ে দেবাংশী দে, ৭-১০ বছরের ছেলেদের ৭৫ মিটার দৌড়ে স়ৃঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, ৭-১০ বছরের মেয়েদের ৭৫ মিটার দৌড়ে আরাত্রিকা রায়, ১০-১৩ বছরের ছেলেদের ১০০ মিটার দৌড়ে দীপেন্দর চিমা, ১০-১৩ বছরের মেয়েদের ১০০ মিটার দৌড়ে নাসিবা খাতুন প্রথম হয়েছে। ১৩-১৮ বছরের ছেলেদের ১০০ মিটার দৌড় জিতে নিয়েছে সঙ্কল্প চক্রবর্তী। ১৩-১৮ বছরের মেয়েদের চামচ-গুলি দৌড়ে প্রথম হয়েছে নীতু যাদব। তবে সব প্রতিযোগিতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে কচিকাঁচাদের ফ্যান্সি ড্রেস। খবরের কাগজের পোশাক পরে নিজেকে মেলে ধরে প্রথম পুরস্কার জিতে নেয় মৃত্তিকা চক্রবর্তী। বাউল সেজে দ্বিতীয় হয়েছে আরাত্রিক মণ্ডল। আপ-নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল সেজে তৃতীয় হয়েছে ঋষাঙ্ক চট্টোপাধ্যায়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়কে বাছতে হিমশিম খেতে হয় বিচারকদের।
বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করেন এ বারের আনন্দ ক্রীড়ার প্রধান অতিথি, দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার প্রাক্তন ব্যুরো চিফ (পূর্বাঞ্চল) সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দ ক্রীড়ায় এই প্রথম এতটা সময় অতিবাহিত করে তিনি অভিভূত। সৌমিত্রবাবুর কথায়, ‘‘৩৮ বছর আমি এই সংস্থায় ছিলাম। তখন আনন্দ ক্রীড়ায় এসে অল্প সময় কাটিয়েই চলে যেতাম। এ বারেই প্রথম এতটা সময় কাটালাম।’’ তাঁকে ফের ‘নিজের বাড়ি’-তে নিয়ে আসার জন্য এবিপি-কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এক জন কর্মী হিসেবে এখন আমি হয়তো আর এবিপি-তে নেই। কিন্তু মানসিক ভাবে এই সংস্থার সঙ্গেই রয়েছি।’’ হারা-জেতা নয়, প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াটাই যে মূল কথা, তা সকলকে মনে করিয়ে দেন সৌমিত্রবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy