বেলা সোয়া এগারোটা থেকে বিকেল চারটে। অফিস টাইম বলাই যায়। দফায় দফায় বৈঠকের মধ্যে ‘লাঞ্চ টাইম’-ও বার করতে পারলেন না। বৈঠক থেকে পাওয়া ‘ইনপুট’ খতিয়ে দেখতে নিজের ‘চেম্বার’ ছেড়ে বেরিয়েও পড়লেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায়। সিএবি-র নয়া যুগ্মসচিবের অফিসের প্রথম দিনটা কাটল এ ভাবেই, পেশাদার এক্সিকিউটিভের মতো। ‘অফিস’ থেকে লাল মার্সিডিজ চড়ে যখন বাড়ির দিকে যাচ্ছেন, তখন সিএবি-র অন্যান্য কর্তার ঘরগুলো সব ফাঁকা। তখনও কেউ এসে পৌঁছননি।
ভরদুপুরে ইডেনের লাগোয়া ইন্ডোর দেখতে ছুটলেন সৌরভ। এই ইন্ডোরে কয়েকশো বার প্র্যাকটিস করেছেন। নতুন কী দেখলেন? এ বারের দেখাটা অন্য রকম। এই দেখাটা সিএবি যুগ্মসচিবের। যাঁর কথায়, “বাংলার ক্রিকেটের উন্নতি করতেই এই দায়িত্বে এসেছি। সেই কাজটাই শুরু করলাম।”
ভিশন ২০২০-র দুই সহকারী কোচ জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ও রণদেব বসুকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন দুপুরে কার্যত চষে ফেললেন ইন্ডোরের আনাচ-কানাচ। ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে ইন্ডোরের আমূল সংস্কারের পরিকল্পনা হয়েছে। ইংল্যান্ড থেকে আগের দিন শহরে ফিরে বুধবার বেলায় সিএবি-তে এসে বাংলা দলের সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে বুঝে নিলেন ইন্ডোরের হাল-হকিকত। প্রাক মরসুমে সঠিক প্রস্তুতির অভাবের জন্য ইন্ডোরকেই বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে, তা সৌরভের অজানা নয়। তাই বাংলার ক্রিকেটে পরিবর্তনের অন্যতম ধাপ হিসেবে ইন্ডোরকেই বেছে নিয়েছেন। যা দেখে বললেন, “ইন্ডোরটাকে ভাল করতে হবে।” তার আগে লক্ষ্মী, দিন্দা, মনোজ, শামি, সৌরাশিস, শিবশঙ্করদের নিজের ঘরে ডেকে জেনে নিলেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ। সেই বৈঠকেও উঠে এল ইন্ডোরের ভগ্নদশার কথা। লক্ষ্মীরা আশ্বাস পেলেন, “তোমাদের যা লাগবে, আমাকে বলবে।” শামির সঙ্গে ইংল্যান্ড সফর নিয়েও কথা হল। শামির বক্তব্য, “দাদি আগে বলত, যা লাগবে আমাকে বলবি, আমি সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলব। এখন দাদিই সেক্রেটারি হয়ে বলছে, যা লাগবে বলবি। এ বার বোধহয় নির্দ্বিধায় আমাদের সমস্যার কথা প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। এটা খুব ভাল হল।”
জানা গেল, নতুন কর্তার কাছে এক সিনিয়র আব্দার করেন, “এখানকার জিম আধুনিক নয়। আপগ্রেডেশন দরকার।” তাঁকে সৌরভ আশ্বাস দেন, জিম ঠিক হবে। সঙ্গে বাড়তি প্রতিশ্রুতি, “মাঠও অফ সিজনে আরও ভাল রাখা দরকার। প্রবীরদার (মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে কথা বলছি।” কোচ অশোক মলহোত্র, রণদেব, জয়দীপ, বাংলার রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে ও প্রাক্তন যুগ্মসচিব শরদিন্দু পালের সঙ্গেও এ দিন বৈঠক করেন সৌরভ। নিজেকে ‘আপডেট’ করে নিলেন বাংলা দল ও সিএবি-র প্রশাসনিক বিষয়েও।
একই দিনে পরপর এতগুলো বৈঠক কেন? সৌরভ বললেন, “অনেক দিন পর এলাম। সবার সঙ্গে কথা বলে সব বুঝে নিলাম। কাজটা জাস্ট শুরু করলাম আর কী। এ বার আসল কাজ শুরু।” প্রথম বড় কাজটাই হল ২০ অক্টোবর ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ান ডে। বললেন, “এত দিন যারা আয়োজন করেছে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে। তার উপর ইডেনের দেড়শো বছর পূর্তি। দেখা যাক।”
সম্বরণকে জাতীয় নির্বাচক হিসেবে চান সৌরভ
বাংলার রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়-কে আবার জাতীয় নির্বাচক হিসেবে দেখতে চান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সদ্য ক্রিকেট প্রশাসনে আসা সৌরভ মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচক কমিটিতে পূর্বাঞ্চল থেকে আরও প্রখর ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি দরকার। বর্তমান পূর্বাঞ্চলীয় নির্বাচক সাবা করিমের মেয়াদ বাকি আর এক বছর। তার আগে সম্বরণকে বাংলার প্রধান নির্বাচক করতে চান সৌরভ। যে পদে এখন আছেন দীপ দাশগুপ্ত, যাঁর মেয়াদ এ বছরই শেষ। প্রধান নির্বাচক হিসেবে দীপের মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, এখনও চূড়ান্ত নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy