Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

আট ব্যাটসম্যানের থিওরি পদ্মায় মিশল এবি-ডি’কক যুগলবন্দিতে

ভারত সিরিজোত্তর দু’টো ম্যাচ। এবং দু’টোর একটাতেও পরিবর্তিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছবি পাওয়া গেল না। প্রথমের পর দ্বিতীয় যুদ্ধও হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ। এমন নয় যে উন্নতি ঘটেনি— ঘটেছে। এবি-ডি’কক প্রহারে সাময়িক বেসামাল হলেও প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে।

ট্রফি জেতার পর। ছবি: এএফপি।

ট্রফি জেতার পর। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ১৫:০০
Share: Save:

ভারত সিরিজোত্তর দু’টো ম্যাচ। এবং দু’টোর একটাতেও পরিবর্তিত বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছবি পাওয়া গেল না।

প্রথমের পর দ্বিতীয় যুদ্ধও হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ। এমন নয় যে উন্নতি ঘটেনি— ঘটেছে। এবি-ডি’কক প্রহারে সাময়িক বেসামাল হলেও প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে। ‘কিলার মিলার’কে চুপ করিয়ে রাখা গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ দু’প্লেসিকেও রান করতে দেওয়া হয়নি। শেষের দিকে একটা সময় পাঁচ ওভারে ২৭-এর বেশি তুলতে দেওয়া হয়নি প্রোটিয়াদের। কিন্তু এত কিছুর পরেও জেতা সম্ভব হল না মাশরফি মুর্তাজাদের। ৩১ রানে ম্যাচ হেরে যেতে হল।

ঠিক করে বললে, হেরে যেতে হল ৯৫ রানের একটা পার্টনারশিপে।

সে ভাবে দেখতে গেলে মঙ্গলবারের শের-ই-বাংলায় দু’টো টিমের ব্যাটিংয়ে মারাত্মক কোনও তফাত ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ ওভারে ১৬৯-৪ তুলেছে। টি-টোয়েন্টির পৃথিবীতে যে টার্গেট মোটেও দুর্জেয় নয়। আবার জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশও ১৪০-এর কাছাকাছি চলে গেল। তুলল ১৩৮। পার্থক্যের মধ্যে প্রোটিয়াদের একটা এবি ডে’ভিলিয়ার্স ছিল। একটা কুইন্টন ডি’কক ছিল। যাঁরা টিমকে শুরুতেই ৯৫ রানের পার্টনারশিপ দিয়ে জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে দেন। বাংলাদেশের কোনও এবি বা ডি’কক হয়ে উঠতে পারলেন না।

চলতি সিরিজে দু’টো ব্যাপার নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। এক, মুস্তাফিজুর রহমানের অমোঘ কাটার-আতঙ্ক কোথায় গেল? দ্বিতীয়ত, ওপেনিংয়ে এবি কী করছেন? মুস্তাফিজুর এ দিন দু’প্লেসির উইকেট আর মাঝেমধ্যে কাটারের ফাঁদে ফেলে ব্যাটসম্যানদের কিছুটা বিব্রত করার বাইরে তেমন কিছু করতে পারেননি। ৪ ওভারে ৩৪ দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টাতেও তাঁর থেকে বিস্ময়কর তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। কিন্তু এবি দেখিয়ে গেলেন, ওপেনার হিসেবেও তিনি প্রতিপক্ষের কাছে সমান যন্ত্রণাদায়ক হয়ে আবির্ভূত হতে পারেন।

রান মোটেও ডে’ভিলিয়ার্স গোত্রের নয়। ৩৪ বলে ৪০। ছ’টা বাউন্ডারি, একটাও ছয় নেই। কিন্তু তাতে কী? শের-ই-বাংলার অস্বাভাবিক আদ্রর্তার মধ্যে রানটা করা। যা দেখে দু’প্লেসি বলেও দিলেন, ‘‘এবি অস্বাভাবিক ঘামছিল। ওই অবস্থায় ব্যাটিং মোটেও সহজ নয়।’’ ওপেনিংয়ে তিনি এবং ডি’কক (৩১ বলে ৪৪) মিলে ৯৫ রান তুলে দিয়ে যান। বাংলাদেশ স্পিনার নাসের হোসেন আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন প্রোটিয়াদের বাড়তে না দেওয়ার। নাসেরের দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৫-০ থেকে ১০২-৩ হয়ে যায়। দু’প্লেসিকেও তারা বেশি এগোতে দেয়নি। কিন্ত ‘অচেনা’ মিলার (২৮ বলে ৩০ ন:আ:) এবং শেষ দিকে রাইলি রুসো (৬ বলে ১৯ ন:আ:) দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬৯-এ পৌঁছে দেন।

যার উত্তরে একমাত্র সৌম্য সরকার বাদে বাংলা-প্রতিরোধ হিসেবে কাউকে তেমন পাওয়া যায়নি। ওপেন করতে নেমে সৌম্য ৩১ বলে ৩৭ করে যান। আট ব্যাটসম্যান নিয়ে ম্যাচে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সৌম্য আর রনি তালুকদার (২১) বাদে কেউ আর কুড়িও পেরোননি। সাকিব-আল-হাসান (৮) থেকে শুরু করে মুশফিকুর রহিম (১৯)— সবাই ব্যর্থ। ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরফি মুর্তাজা বলেও দেন, ‘‘রান তাড়া করতে নেমে খুব দ্রুত কয়েকটা উইকেট চলে গেল। ইদানিং আমরা আসলে খুব বেশি টি-টোয়েন্টি খেলিনি। তবে ভাববেন না যে অজুহাত দিচ্ছি। আশা করছি, ওয়ান ডে-তে আমরা ফিরে আসব।’’

পদ্মাপারও তো সেই আশাতেই বসে। ক্রিকেটের ওই ফর্ম্যাটেই তো এখন আসল ব্যাঘ্রগর্জন শোনা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE