Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রায় শুনে টেলি-বৈঠক শ্রীনির

ধর্মশালায় বিরাট কোহালিকে নিয়ে সারা দিন ধরে কালো মেঘ ঘোরাফেরা করল। আর কোহালিদের গদিচ্যুত বোর্ড কর্তাদের জন্য সামান্য হলেও মেঘ কেটে রোদ্দুর বেরল।

সুমিত ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫০
Share: Save:

ধর্মশালায় বিরাট কোহালিকে নিয়ে সারা দিন ধরে কালো মেঘ ঘোরাফেরা করল। আর কোহালিদের গদিচ্যুত বোর্ড কর্তাদের জন্য সামান্য হলেও মেঘ কেটে রোদ্দুর বেরল।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট যে রায় শুনিয়েছে, মনে করা হচ্ছে তাতে সামান্য হলেও ‘লাইফলাইন’ মিলেছে বোর্ডের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা ক্রিকেট কর্তাদের। পাল্টা চাপ সৃষ্টি হয়েছে এখন বোর্ড পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষকদের ওপর।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলে দিয়েছে, আইপিএল এবং টেস্ট আয়োজনের জন্য রাজ্য সংস্থাদের প্রাপ্য টাকা ছাড়তে হবে। এখানেই শেষ নয়। পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করেছিলেন, কোনও কর্তা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা বা বোর্ড— যে কোনও একটি জায়গাতে ৯ বছর কাটিয়ে ফেললেই তাঁকে সব ছেড়েছুড়ে চলে যেতে হবে। সেই মতকে খণ্ডন করে সর্বোচ্চ আদালত বলে দিয়েছে, রাজ্যে ৯ বছর কাটানো হয়ে গেলেও বোর্ডে যাওয়া যাবে। তেমনই বোর্ডে ৯ বছর হয়ে গেলেও যদি রাজ্যে না হয়ে থাকে, সেখানে থাকা যাবে।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে ফের জোট বাঁধতে শুরু করেছেন বোর্ড এবং রাজ্য সংস্থার কর্তারা। এবং, তাঁদের নেতৃত্বে সেই শ্রীনিবাসন। সন্ধেবেলাতেই শ্রীনি টেলি কনফারেন্স ডাকেন। তাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক রাজ্য সংস্থার কর্তারাই যোগ দেন। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, শ্রীনি ও তাঁর সমর্থকদের মেজাজ ফের বিদ্রোহের। সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায় অনুযায়ী, দুই পদাধিকারী— সচিব অমিতাভ চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরী বোর্ডের পদে থাকতে পারেন। এত দিন তাঁদের সমস্ত বৈঠক বা সিদ্ধান্ত থেকেই দূরে রাখছিল পর্যবেক্ষকের দল। এমনকী, আইপিএলে নিলামেও প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি বোর্ড কর্তাদের।

শ্রীনির পরামর্শে আজ, শনিবারেই মুম্বইয়ে বোর্ডের অফিসে যেতে বলা হয়েছে অমিতাভ-কে। তাঁকে বলা হয়েছে, দরকার হলে পর্যবেক্ষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে সচিব হিসেবে নিজের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করো। অমিতাভ যদিও রাতে ফোনে বললেন, ‘‘বোর্ডের অফিস চালাতে গেলে মুম্বই যেতে হবে কেন? রাঁচী থেকে বসেও তো চালানো যায়।’’

পর্যবেক্ষকরা এর আগে কার্যত হুমকি দিয়ে রাজ্য সংস্থাদের বলেছিলেন, যারা সংস্কার করবে শুধু তাদের জন্যই বোর্ডের কোষাগার থেকে টাকা ছাড়া হবে। শুনে কাবেরির জল ছাড়ার মতো ব্যাপার মনে হয়েছিল কারও কারও। কর্তারা কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলছিলেন, ‘‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিযুক্ত পর্যবেক্ষকরা কী করে এমন শাসানি দিতে পারে?’’

ঘটনা হচ্ছে, রঞ্জি, ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে অনেক রাজ্য সংস্থারই প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা বকেয়া হয়ে গিয়েছে বোর্ড থেকে। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সংস্থাদের খরচের জন্য টাকা ছাড়তে হবে বলায় রাজ্য সংস্থাদের প্রতিবাদ জোরাল কণ্ঠ পেয়ে গিয়েছে। আইপিএলের ব্যাপারে বোর্ড, ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং রাজ্য সংস্থাকে এক সূত্রে কাজ করতে বলেছে আদালত।

শোনা যাচ্ছে, শ্রীনি নাকি টেলিকনফারেন্সের মধ্যে এমন কথাও বলেন যে, সদলবলে বোর্ডের ক্ষমতায় ফিরতে হবে। অমিতাভ-অনিরুদ্ধদের তিনি বলেন, দরকার হলে আইপিএলের নতুন কমিটি করে দাও তোমরা। বলেন, আদালত তো বলেই দিল, নাইন প্লাস নাইন, শুধু নয় বছর নয়। চিন্তা কীসের!

কেউ কেউ এখনই অতটা আগ্রাসী হওয়ার পক্ষে নয়। সুপ্রিম কোর্ট এটাও বলে দিয়েছে যে, সংস্কার নিয়ে লোঢা কমিটির সুপারিশ মানতেই হবে!

তার মানে তো শ্রীনিই ‘আউট’!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE