হতাশা: ইডেনে শোকের সেই মুহূর্ত। সিদ্ধার্থ কলের বলে আউট হয়ে ফিরছেন সুনীল নারাইন। ফাইল চিত্র
এ বারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ১৬টি ম্যাচেই মাঠে নেমেছেন। শাহরুখ খানের দলের হয়ে ব্যাট হাতে তাঁর সংগ্রহ ৩৫৭ রান। আর বোলার হিসেবে মোট ৬১ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৬৭ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ১৭ উইকেট।
কেকেআরের সেই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার সুনীল নারাইন যদিও শুক্রবার রাতে জন্মদিনটা জয় দিয়ে উপভোগ করতে পারেননি। তবে সুনীলের সতীর্থরা ইডেন থেকে হোটেলে ফিরে কেক কেটে যে উৎসব করেছেন, তাতে হয়তো ফাইনালে না যেতে পারার হতাশা দূর হয়ে গিয়েছে সুনীলের। শুক্রবার রাতে সুনীলের।
শুক্রবার রাতে দীনেশ কার্তিকদের গোটা দল মাঠ থেকে হোটেলে ফিরেই দেখেন, ডিনার টেবিলে সুনীলের জন্মদিনের কেক সাজানো রয়েছে। এর কিছু পরেই সাদা-কালো গোল গলা টি শার্ট গায়ে এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কেক কাটতে শুরু করে দেন। তাঁর দু’পাশে তখন রবিন উথাপ্পা, রিঙ্কু সিংহ, অপূর্ব ওয়াংখেড়ে, অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক ও নীতীশ রানারা। সুনীল কেক কাটতেই তা থেকে একটি খণ্ড তুলে নেন রবিন উথাপ্পা। তা তিনি আবার তুলে দেন অপূর্ব ওয়াংখেড়ে ও নীতীশ রানার হাতে। নাইটদের এই দুই সদস্য সুনীলকে কেকে খাওয়ানোর পরেই দলের বাকি সদস্যরা এ বার ব্যস্ত হয়ে পড়েন নারাইনকে কেকে মাখাতে। যে দলে দেখা গিয়েছে অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক, রবিন উথাপ্পাদের। পছন্দের পানীয় হাতে পিছনে দাঁড়িয়ে যা উপভোগ করছিলেন নাইটদের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার বেঙ্কি মাইসোর, ক্রিস লিন, শুভমান গিলরা। সাউন্ড সিস্টেমে তখন তারস্বরে বাজছে কোস্তারিকার গায়ক লুইস ফনসির গান ‘দেসপাসিতো’।
চোট পেয়ে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই দলের বাইরে চলে গিয়েছিলেন নাইট শিবিরের নবীন সদস্য কমলেশ নগরকটি। কিন্তু দল প্লে-অফে উঠতেই তাঁকেও কলকাতা নিয়ে এসেছিল কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই কমলেশ ও আরও কয়েকজন ব্যস্ত ছিলেন নারাইনের বাহারি চুলে কেকের ক্রিম মাখাতে। যে দলে এসে যোগ দেন অপূর্ব ওয়াংখেড়েও।
এর পরেই শুরু হয় উদ্দাম নৃত্য। যার সূচনা হয় রিঙ্কু সিংহ আর শুভমান গিলের তৎপরতায়। তার পরে সেই নাচের আসরে যোগ দেন নাইটদের দলের প্রায় সব সদস্যই। অধিনায়ক দীনেশ কার্তিককে দেখা যায়, সোফার উপরে উঠে নাচছেন গানের তালে তালে। নাইট শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, নাইটদের এই জন্মদিন যাপন কাম মরসুম সমাপ্তির উৎসব শেষ হয় রাত তিনটে নাগাদ। এর পরেই যে যার ঘরে ফিরে যান ক্রিকেটাররা। শনিবার সকাল থেকেই শহর ছাড়তে শুরু করেছেন দীনেশ কার্তিকরা। রাতের মধ্যেই কলকাতা ছেড়ে গিয়েছে নাইটদের গোটা দল।
তবে তার আগেই নাইটদের সদ্য শেষ হওয়া আইপিএল মরসুম সম্পর্কে নিজেদের মনোভাব জানিয়ে গিয়েছেন শাহরুখের দলের সদস্যরা। ক্রিস লিন যেমন পাল্টা টুইট করে দলের মালিক শাহরুখ খানকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘গত দু’মাস দারুণ কেটেছে। দল মালিক ও সাপোর্ট স্টাফ সকলের কাছ থেকেই দুর্দান্ত সহযোগিতা পেয়েছি। আগামী মরসুমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরৎ আসব।’’ নাইটদের সিইও বেঙ্কি মাইসোরও আগামী বছর আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘অনেক ইতিবাচক দিক আবিষ্কার করা গিয়েছে। তা কাজে লাগিয়েই আগামী বছর আরও দুর্দান্ত ভাবে ফিরব।’’
তবে এই উৎসব, প্রতিজ্ঞার মাঝেও কোথায় খচখচ করছে ফাইনালে না যাওয়ার বেদনা। আফগান ক্রিকেটার রশিদ খানের হাতে ফাইনালের ঠিক একধাপ আগে চূর্ণ হওয়ার দুঃখ। নাইটদের দলনেতা দীনেশ কার্তিক যে প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘গোটা মরসুম ধরেই দুর্দান্ত সমর্থন করে গিয়েছে কলকাতার দর্শক। ওদের ট্রফিটা দিতে না পেরে খারাপ লাগছে। নীতীশ রানার আউট হওয়াটাই ম্যাচ থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল কেকেআরকে।’’ কারণ হিসেবে সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘ম্যাচের একটা সময় দলের রান ছিল ৮৭-১। সেই সময় নীতীশ যদি আউট না হত, তা হলে ম্যাচটা আমাদের দিকেও আসতে পারত। সেক্ষেত্রে শেষ ছয়-সাত ওভার আগে ব্যবধান অনেকটা কমে আসত। হাতে উইকেট থাকায় পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা ঝুঁকি নিতে পারত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy