Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
হে ঈশ্বর! এ কী মুম্বই ব্যাটিং!

সচিনের জন্মদিনে ১১৯ তাড়া করতে নেমে ৮৭-তেই শেষ মুম্বই

ওয়াংখেড়ের এই ম্যাচকে শিখর ধওয়ন ও রোহিত শর্মার দ্বৈরথ বলে চিহ্নিত করা হলেও সেই লড়াই এ দিন জমে ওঠেনি। দু’জনেই ব্যর্থ হন।

বিপরীত: সচিন তেন্ডুলকরের জন্মদিনেই আইপিএলে ব্যাটিং বিপর্যয় রোহিত শর্মাদের। মঙ্গলবার। ছবি:পিটিআই

বিপরীত: সচিন তেন্ডুলকরের জন্মদিনেই আইপিএলে ব্যাটিং বিপর্যয় রোহিত শর্মাদের। মঙ্গলবার। ছবি:পিটিআই

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ১৯:২৫
Share: Save:

আমচি মুম্বই। বিজয় মার্চেন্টের মুম্বই। সুনীল গাওস্করের মুম্বই এবং সচিন তেন্ডুলকরের মুম্বই। সেই মুম্বইয়ের এগারোজন ব্যাটসম্যান তুলতে পারলেন না একশো রানও। জন্মদিনে মাঠে বসে বসে এই ভরাডুবি দেখতে হল সচিনকে। টিভির কমেন্ট্রি বক্সে বসে দেখলেন সুনীল গাওস্করও।

তাঁকে জয় উপহার দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই মঙ্গলবার ঘরের মাঠে নেমেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। সেই মঞ্চ তৈরিও করে দিয়েছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য, মায়াঙ্ক মার্কণ্ডেরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৪৫তম জন্মদিনটা ভাল কাটল না ক্রিকেটের ঈশ্বরের। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তাঁর সামনেই চরম ব্যর্থ হলেন মুম্বই ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ৮৭ রানে অল আউট! সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ৩১ রানে হেরে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের ঠাঁই হল আট দলের মধ্যে সাত নম্বরে। ছয় ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টি জয় তাদের।

গত ম্যাচেও জয় হাতের মুঠোয় এসেও তা হাতছাড়া করেন যশপ্রীত বুমরা-রা। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে শুরু থেকেই তাই আঁটসাঁট বোলিং করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ১১৮ রানের বেশি তুলতে দেননি তাঁরা। কিন্তু এই লক্ষ্যেও দলকে পৌঁছে দিতে পারলেন না রোহিত ও তাঁর ব্যাটসম্যানরা। প্রথমে ব্যাট করে এত কম রান করে ভারতের মাঠে কোনও আইপিএল ম্যাচ জিততে পারেনি কেউ। তবে মুম্বইয়ের অবশ্য এই দশা আগেও হয়েছে। এই ৮৭ রানেই তারা আরও একবার অল আউট হয়েছিল ২০১১-য়। মোহালিতে, কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। সেই দিনই মঙ্গলবার ওয়াংখেড়েতে ফিরে এল রোহিতদের ব্যর্থতায়। আর এই ব্যর্থতা নিয়ে মুম্বই অধিনায়ক রোহিত ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘এই হারের জন্য আমরাই দায়ী। ১১৮ রান তা়ড়া করে জেতা উচিত ছিল আমাদের। আমরা নিজেদের চরিত্রের দৃঢ়তা দেখাতে পারলাম না। সানরাইজার্স কিন্তু পেরেছে। আজ যথেষ্ট ভাল বোলিং হয়েছিল আমাদের। কিন্তু ব্যাটসম্যানরাই ডুবিয়ে দিল।’’

দলের পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধ অধিনায়ক বলেন, ‘‘অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু এটা খুঁত ধরার সময় নয়। জানতাম রানটা তোলা সোজা হবে না। এখানে বড় শট মারা খুব কঠিন ছিল। শুরু থেকেই সেই চেষ্টাটা করা উচিত ছিল আমাদের। কিন্তু পারলাম না। আমরা অনেকেই খারাপ শট মেরেছি। আমি নিজেও ভাল শট নিতে পারিনি।’’

ছ’ওভারের মধ্যে ২১ রানে এভিন লুইস, ঈশান কিসান ও রোহিত শর্মা ফিরে যাওয়ায় চাপে পড়ে যায় মুম্বই। শুরুতে এই ধস নামে রোহিতদের ব্যাটিংয়ে। ঘরের মাঠে দলের হার বাঁচাতে সূর্যকুমার যাদব মরিয়া হয়ে উঠলেও সেই স্পিন জুটি রশিদ খান ও শাকিব আল হাসানের মাঝের ওভারগুলিতেই থেমে যায় মুম্বইয়ের স্কোরবোর্ডের গতি। ৬১-৩ থেকে ৭৭-৬ হয়ে যায় তারা। ৮০ রানের মধ্যে আরও দু’উইকেট পড়ে যায় তাদের। এই কঠিন কাজ আর করে উঠতে পারেনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।

মুম্বইয়ের দুই আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হার্দিক পাণ্ড্য ও কায়রন পোলার্ডকে ফিরিয়ে যিনি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন, সেই ম্যাচের সেরা রশিদ খান বলেন, ‘‘দু’টো হারের পরে এ ভাবে জয়ে ফিরে আসাটা দারুণ ব্যাপার। কোচেদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখি আমরা। ওঁরা আমাকে সবসময় উৎসাহ জুগিয়ে যান। ভাল-খারাপ যাই হোক, নিজেকে চাপমুক্ত রাখার পরামর্শ দেন মুরলী স্যর। মাঠে যত উপভোগ করবে, তত তোমার পারফরম্যান্স ভাল হবে। ওঁর পরামর্শ মেনেই ভাল পারফরম্যান্স করতে পারছি।’’

ওয়াংখেড়ের এই ম্যাচকে শিখর ধওয়ন ও রোহিত শর্মার দ্বৈরথ বলে চিহ্নিত করা হলেও সেই লড়াই এ দিন জমে ওঠেনি। দু’জনেই ব্যর্থ হন। পাঁচ ম্যাচে ৫২ রান করা ঋদ্ধিমান সাহাকে এ দিন তিন নম্বরে নামেন। কিন্তু কোনও রান করতে পারেননি। ধওয়ন ও ঋদ্ধি তিন বলের মধ্যে পরপর ফিরে যান। এই জায়গা থেকে ফিরে আর আসতে পারেনি হায়দরাবাদ। তবে শেষ হাসি তারাই হাসল বোলারদের কৃতিত্বে। দিনটাই ছিল বোলারদের। আইপিএলের ইতিহাসে এর আগে মাত্র দু’টি ম্যাচে কুড়ি উইকেট পড়েছে। যা ফের হল মঙ্গলবারের ওয়াংখেড়েতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 11 SRH MI IPL 2018 Rashid Khan Cricket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE