Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জট বেড়ে গেল আইএসএলে

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কলকাতার দুই প্রধান খেলবে কি না, তা বুধবারও ঝুলেই রইল। পরিস্থিতি যা তাতে ৭ জুন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভার পর তা স্পষ্ট হলেও হতে পারে। এ দিন দুই প্রধানের কর্তাদের ধারণা অন্তত সে রকমই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০৪:২৫
Share: Save:

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কলকাতার দুই প্রধান খেলবে কি না, তা বুধবারও ঝুলেই রইল। পরিস্থিতি যা তাতে ৭ জুন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভার পর তা স্পষ্ট হলেও হতে পারে। এ দিন দুই প্রধানের কর্তাদের ধারণা অন্তত সে রকমই।

আইএসএল এবং আই লিগের ভবিষ্যৎ বা ভারতীয় ফুটবলের নতুন ‘রোড ম্যাপ’ কী হবে তা ঠিক করতে ওই দিন কুয়ালা লামপুরে সভা হবে এএফসি-র সঙ্গে। সেখানে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের সঙ্গেই থাকবেন আইএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা। থাকবেন আই লিগের সমস্ত ক্লাবের কর্তা, আইএমজিআর, ফুটবল প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরাও। বুধবার দিল্লিতে এএফসি সচিব ডেটো উইন্ডসর-এর সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল ও সচিব কুশল দাস। সভার পরে ফেডারেশন সভাপতি বলেছেন, ‘‘সকলে মিলে আলোচনা করেই ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ ঠিক করা হবে। তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’’

বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে ফেডারেশন কর্তারা হঠাৎ কেন এই সভা করতে নজিরবিহীন ভাবে পঞ্চাশ-ষাট জনকে নিয়ে দল বেঁধে কুয়ালা লামপুর যাচ্ছেন?

ফুটবল হাউসের খবর, কুয়ালা লামপুরে বৈঠকের পিছনে তিনটি ভাবনা কাজ করছে। এক) আই লিগের দলগুলোকে আইএসএলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বিজয় গোয়েল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— যে ভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন, সেটা থেকে বাঁচতেই ফেডারেশন সভাপতির এটা একটা চাল। বিতর্ক এড়াতেই এএফসি-কে ঢাল করতে চাইছেন তিনি। যাতে প্রমাণ হয় ফেডারেশন নয়, সবই করেছে এএফসি। তাঁর কিছু করার নেই। দুই) আইএসএল-কে এএফসি-তে নথিভুক্তি করার সিদ্ধান্ত কার্যত চূড়ান্ত। কিন্তু দিল্লিতে সেটা করলে বিতর্ক বাড়বে। কারণ, আইএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বেশির ভাগই লাইসেন্সিং শর্ত পূরণ করার মতো পরিকাঠামো এখনও নেই। তা-ই আইএসএলের সরকারি সিলমোহর এএফসি থেকে এলে কেউ কিছু বলতে পারবে না। তিন) আইএমজিআর ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি’ ছাড়া সরাসরি আই লিগের কোনও টিমকে আইএসএলে নিতে চাইছে না। সেটা যদি এএফসি-র মাধ্যমে করানো যায় তা হলে তারাও কিছু বলতে পারে না।

ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের শীর্ষ কর্তারা অবশ্য আশাবাদী কুয়ালা লামপুরে সভার ফল তাঁদের পক্ষেই যাবে। তাঁদের ধারণা, ফেডারেশন কর্তারা চাপের মুখে এএফসি-র মাধ্যমে দুই প্রধানকে আইএসএলে খেলার রাস্তা তৈরি করবেন। মোহনবাগানের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘আই লিগের ক্লাবগুলির মধ্যে কলকাতার দুই প্রধান এবং বেঙ্গালুরু এফসি শুধু আইএসএলের দরপত্র তুলেছে। আই লিগ ও আইএসএল মিশে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত এলে প্রাথমিক পর্যায়ে এই তিনটে ক্লাবকে নিতে কোনও সমস্যা হবে না ফেডারেশনের।’’ আর ইস্টবেঙ্গলের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘আমাদের দাবি ফেডারেশন বা আইএমজিআর উড়িয়ে দিতে পারছে না বলেই এএফসি-র কোর্টে বল পাঠাচ্ছে। ভারতীয় ফুটবলে কী হচ্ছে সেটা তো আমরা দুই প্রধান আগেই এএফসি-তে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে রেখেছি।’’

আজ, বৃহস্পতিবার আইএসএলের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। বেঙ্গালুরু এফসি দরপত্র জমা দিচ্ছে। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান নিলামের দরপত্র তুললেও তা জমা দিচ্ছে না। তাদের ধারণা, কলকাতায় মাঠ সমস্যা মিটিয়ে দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি’-ও মুকুব হয়ে যাবে।

কিন্তু এ সবই দুই ক্লাবের ধারণা বা ভাবনা। ফেডারেশনের সভাপতি ও সচিবের কী পরিকল্পনা সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই কারও। নিট ফল, আপাতত দিন বারো সব কিছু ধামাচাপা পড়ছে। যুব বিশ্বকাপের আবহে ফেডারেশন কর্তারা তো এখন এটাই চাইছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISL East Bengal Mohun Bagan Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE