গোল করার লোক আছে। নেই রক্ষণে শক্তি।
লিগে ‘সেকেন্ড বয়’ হওয়ার যুদ্ধে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই ‘মিনি হাসপাতাল’ ইস্টবেঙ্গল! এমনকী দলের ‘নেই’ তালিকা এত লম্বা, খোদ লাল-হলুদ কোচ এলকো সতৌরি পর্যন্ত দিশাহারা। রবিবারের বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। প্রথম এগারোর তিন জন নেই। অর্ণব মণ্ডল, মিলান সুসাক ও রবার্ট। অভিষেক দাস ও হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরা অনিশ্চিত। তবে শেষের দু’জনকে খেলানোর প্রাণপন চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উপায় নেই যে! অফিস খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছেন সৌমিক দে। তাই গুরবিন্দর সিংহ, ধনরাজন, রাজু গায়কোয়াড়ের পাশে অভিষেক ছাড়া আর কোনও গতি নেই। যদিও অভিনাশ রুইদাসকেও তৈরি রাখছেন এলকো। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে টিম ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহা বলছিলেন, ‘‘হারার কোনও জায়গা নেই আমাদের। কে আছে কে নেই, সেটা নিয়ে ভাবারও কোনও জায়গা নেই। আমরা একটা জিনিস জানি— জিততে হবে। যে কোনও মূল্যে।’’
মুখে বললেও, কাজটা কিন্তু খুব সহজ নয়। একে ডিফেন্স দুর্বল। তার ওপর মিলান সুসাক ও লিও বার্তোসকে পাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। যে কারণে মাঝমাঠে খারবাকে খেলানোর চেষ্টা হচ্ছে। বার্তোসের অভাব ঢাকতে। অর্থাৎ সেই র্যা-ডু জুটি-ই ভরসা এলকোর। ফোনে মেহতাব হোসেন বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলকে যখন সবাই দুর্বল ভাবে, তখনই সবচেয়ে ভাল খেলি আমরা। ইতিহাস তার সাক্ষী। রবিবারের ম্যাচে হয়তো অনেকেই খেলতে পারবে না। কিন্তু তাতে আমাদের মনোবল কমেনি। দেখবেন, আমাদের দুর্বলতাই আমাদের শক্তি হবে রবিবারের ম্যাচে।’’
শনিবার সকালে দেড় ঘণ্টা প্র্যাকটিস করিয়ে বিকেলে মেহতাব-খাবরাদের বিশ্রাম দেন এলকো। হোটেলে বসেই মোহনবাগান-মুম্বই এফসি ম্যাচ উপভোগ করেন সবাই। পরে রাতে লাল-হলুদ অধিনায়ক খাবরা বলছিলেন, ‘‘বেঙ্গালুরুর এই মাঠে প্রায় ন’বছর পরে খেলব আমরা। খুব ফাস্ট। বৃষ্টিতে আরও গতি বেড়ে যাবে। তবু ঘাসের মাঠ বলে একটা সুবিধা।’’ মোটামুটি যা ঠিক হয়েছে, তাতে মাঝমাঠে খেলবেন খাবরা-মেহতাব-তুলুঙ্গা। উইথড্রল ফরোয়ার্ড কেভিন লোবো। ফরোয়ার্ডে র্যান্টি-ডুডু জুটি।
হাজার চোট সমস্যা থাকলেও, পরিসংখ্যান অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের দিকেই ঝুঁকে। এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অপরাজিত লাল-হলুদ ব্রিগেড। তাই রবিবারের ম্যাচে এক দিকে যেমন জয়ের রেকর্ড ধরে রাখতে মরিয়া এলকো, তেমনই রেকর্ড ভেঙে মোহনবাগানের আরও কাছাকাছি পৌঁছতে চাইছেন সুনীলরা। শনিবার মুম্বই এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করে লিগ টেবলে এখন ১৫ ম্যাচে ৩২ সঞ্জয় সেনের দল। সেখানে রবিবার ইস্টবেঙ্গলকে হারালে ১৬ ম্যাচে ৩১ হয়ে যাবে বেঙ্গালুরুর। সুনীলদের কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড হোটেলের ঘরে বসে মোহনবাগান ম্যাচ দেখতে দেখতে বলছিলেন, ‘‘আই লিগ জিততে হলে রবিবারের ম্যাচ খুব জরুরি। আমাদের যে করেই হোক ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে হবে। না হলে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে মোহনবাগান।’’
বেঙ্গালুরু এই মরসুমে মাত্র চারটে ম্যাচ হেরেছে। এএফসি কাপের পরের রাউন্ডেও জায়গা পাকা করে ফেলেছে তারা। সব মিলিয়ে দারুণ চনমনে সুনীল ছেত্রীরা। সেখানে রবিবারের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের ভরসা— পরিসংখ্যান আর ফুটবলারদের হার না মানা মানসিকতা।
রবিবারে আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : বেঙ্গালুরু এফসি
(বেঙ্গালুরু, ৭-০০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy