Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অভাব হারিয়ে জাতীয় ডাক

আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই উত্তরপ্রদেশেরই কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে সেই ট্রায়াল হবে। দু’জনের মধ্যে মিল এটাও যে, তারা দু’জনেই বিশ্বকাপে আর্জিন্টিনার সমর্থক। এই ডাক পাওয়ায় দুই ছাত্র তো বটেই, তাদের পরিবার, মাদ্রাসা তথা জেলার ক্রীড়ামহলে জোর খুশির হাওয়া।

আকমাম হোসেন ও শেখ রাহুল।

আকমাম হোসেন ও শেখ রাহুল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৯
Share: Save:

একজনের বাবা ভ্যানরিকশা চালান। আর একজনের বাবা কৃষিশ্রমিক। অভাব ওদের নিত্যসঙ্গী। এ হেন পরিবারের দুই ছেলে ইতিমধ্যেই জাতীয় স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় রাজ্যের হয়ে খেলে এসেছে। এ বার সেই দুই মাদ্রাসা ছাত্রেরই সুযোগ এল ৪ তম অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়ান স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়ানশিপে খেলার। ২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের আগ্রাতে সেই প্রতিযোগিতা হবে। সেই খেলায় অংশ নিতে জাতীয় দলের সিলেকশন ট্রায়ালে ডাক পেল তারা। ট্রায়ালে রাজ্য থেকে ডাক পেয়েছে পাঁচ জন। তার মধ্যে ওরা দু’জনেই মালদহ জেলার। শেখ রাহুল ও আকমাম হোসেন। আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই উত্তরপ্রদেশেরই কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে সেই ট্রায়াল হবে। দু’জনের মধ্যে মিল এটাও যে, তারা দু’জনেই বিশ্বকাপে আর্জিন্টিনার সমর্থক। এই ডাক পাওয়ায় দুই ছাত্র তো বটেই, তাদের পরিবার, মাদ্রাসা তথা জেলার ক্রীড়ামহলে জোর খুশির হাওয়া।

ইংরেজবাজার ব্লকের মিলকি পঞ্চায়েতের শ্যামপুর গ্রামে বাড়ি শেখ রাহুলের। বাবা শেখ ইদুয়া, মা সায়েরা বিবি। রাহুলরা তিন ভাই ও এক বোন। রাহুল মেজ। সে ভবানীপুর মডেল হাই মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। রাহুল ইতিমধ্যে অনূর্ধ্ব ১৪ ও ১৭ জাতীয় স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় রাজ্যের হয়ে খেলে এসেছে।

মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক সৈয়দ হাসানুর জামান বলেন, ‘‘রাহুল ছোট থেকেই প্রতিভাবান ফুটবল খেলোয়াড়। হাফে খেলে। পুরো দলকে কার্যত ও-ই খেলায়। বাড়িতে অভাব। তাই ভাল-মন্দ খেতে পারে না। না হলে ও আরও অনেক দূর এগোত।’’ ছেলে জাতীয় স্কুল দলের ট্রায়ালে সুযোগ পাওয়ায় খুশি বাবা-মাও। বাবা বলেন, ‘‘ছেলে যদি জাতীয় দলে সুযোগ পায়, আরও খুশি হব।’’

যাত্রাডাঙা হাই মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্র আকমামের বাড়ি যাত্রাডাঙাতেই। বাবা মোজাহারুল কৃষিশ্রমিক। মা তানজিনা বিবি গৃহবধূ। তিন ভাইবোনের মধ্যে আকমামই ছোট। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আকমাম গোল সামলায়। এ বার সে অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় রাজ্যের হয়ে খেলেও এসেছে। আকমাম জানাল, সে এখন জলপাইগুড়িতে সাইয়ের প্রশিক্ষণে রয়েছে। মাদ্রাসার ক্রীড়া শিক্ষক সায়েম আলি বলেন, ‘‘এটা মাদ্রাসার পক্ষে খুবই গর্বের বিষয়।’’

জেলা স্কুল ক্রীড়া পর্যদের সহকারী সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ ক্রীড়া পর্ষদের সদস্য শান্তনু সাহা বলেন, ‘‘আমরা চাই ওরা দুজনেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নিজেদের দক্ষতা খেলার দরবারে তুলে ধরুক।’’ জেলা ক্রীড়া শিক্ষা ও যুবকল্যাণ আধিকারিক তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলার দুই ছাত্রের এমন সুযোগ পাওয়াটা খুবই গর্বের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trial School Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE