যাত্রা: মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরে বেঙ্গালুরু রওনা হওয়ার পথে ঝুলন গোস্বামী। নিজস্ব চিত্র
শুধুই যুবরাজ সিংহ বা সুরেশ রায়না নয়। আর. অশ্বিন বা রবীন্দ্র জাডেজা নয়। এ বার থেকে ফিটনেস নিয়ে কঠোর নীতি এসে পড়ছে মেয়েদের ক্রিকেটেও। ঝুলন গোস্বামীদের জন্যও বাধ্যতামূলক হয়ে যাচ্ছে ক্রিকেট মহলে ঝড় তোলা ইয়ো-ইয়ো টেস্ট।
মঙ্গলবার সকালে বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে যেমন বেরিয়ে পড়লেন ঝুলন গোস্বামী। বিশ্বকাপের পর এই প্রথম একত্রিত হচ্ছে ভারতীয় দল। কিন্তু এই একত্রিত হওয়া আগের মতো আর শুধুই নেট প্র্যাকটিস বা ব্যাট-বলের মধ্যে আটকে থাকছে না। এ বারের ক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে ফিটনেস এবং ফিল্ডিং। ঝুলন রওনা হওয়ার আগে বলে গেলেন, ‘‘ব্যাট, বলও হবে। তবে ফিটনেস যাচাই করার জন্য ফিল্ডিংয়ের উপর বিশেষ নজর থাকবে।’’ জানালেন, ইয়ো-ইয়ো টেস্ট চালু হয়ে যাচ্ছে তাঁদের। ‘‘মেয়েদের ক্রিকেটও তো পাল্টাতে শুরু করেছে। এখন আর শুধু স্কিল নির্ভর নয়, শক্তি এসে গিয়েছে। তার সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে সবই করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ভারতকে সিরিজ দিল চহাল-বুমরা যুগলবন্দি
ইয়ো-ইয়ো টেস্ট এই মুহূর্তে বিশ্বের বেশির ভাগ খেলাধুলোয় সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিটনেস পরীক্ষা হিসেবে স্বীকৃত। বিদেশি ফুটবলাররাও এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফিটনেস যাচাই করেন। গোল গোল চাকতি রেখে বিভিন্ন দূরত্ব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পেরোতে হয়। পরীক্ষার বিভিন্ন লেভেল বা স্তরও আছে। যত উপরের স্তরে যেতে পারবে, তত ফিটনেস ভাল। ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে কোহালি বা মণীশ পাণ্ডে ১৮ বা ১৯ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে ভারতীয় দলে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য ইয়ো-ইয়ো টেস্টে ১৭ লেভেল পাশ করাটা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে যোগ্যতা মানকে রাখা হচ্ছে ১৪.৫ থেকে ১৫। তার নীচে হলে হবে না।
বিরাট কোহালির ভারতীয় দলে ইয়ো-ইয়ো টেস্ট পাশ না করতে পেরে অনেকে মূলস্রোত থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম যুবরাজ সিংহ। শোনা যাচ্ছে, সুরেশ রায়নাও ইয়ো-ইয়ো টেস্ট পাশ করতে পারেননি বলে তিনিও বাইরে।
মেয়েদের ক্রিকেটও আর ফিটনেসের ব্যাপারে পিছিয়ে থাকছে না। এ বারের বিশ্বকাপে নজিরবিহীন সাফল্য ঝুলনদের ক্রিকেটে আরও বেশি করে পেশাদারিত্ব এনে দিচ্ছে। ওয়ান ডে ক্রিকেটে বিশ্বের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ঝুলন যেমন বলে দিলেন, ‘‘বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠার পরে এখন আমাদের নিয়ে প্রত্যাশা আরও বেড়ে যাবে। সেই প্রত্যাশার সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে আমাদের ফিটনেসের উপর জোর দিতেই হবে। সব দেশ সেটাই করছে।’’
ঝুলনকে আপ্লুত শোনাল মুম্বইয়ের নতুন বিস্ময় জেমাইমা রদরিগেজকে নিয়ে। ১৬ বছরের মেয়ে একদিনের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করে সকলের নজরে। ঝুলন মুম্বইয়ের এক পরিচিতের মাধ্যমে জেমাইমাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। বলছিলেন, ‘‘আমি ওকে দেখেছি। খুবই প্রতিশ্রুতিমান। এখনও অনেক দূর যেতে হবে ওকে, তবে বড় মঞ্চে সফল হওয়ার মশলা অবশ্যই আছে।’’ নভেম্বর, ডিসেম্বরে ভারতীয় ‘এ’ দল খেলবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। সেখানে নতুন মুখ হিসেবে জেমাইমাকে দেখা যেতেই পারে।
আর ঝুলনদের পরের লক্ষ্য সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ‘‘বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের দুঃখ ভুলে এখন সামনের দিকে তাকানোর সময়,’’ বলছিলেন ঝুলন। দ্রুত যোগ করলেন, ‘‘মধুচন্দ্রিমা শেষ। এ বার বাস্তবের সঙ্গে লড়াই শুরু।’’ মেয়েদের ক্রিকেটেও যে এসে পড়েছে ইয়ো-ইয়ো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy