তিন জনের পরিবারেরই ‘নুন আনতে পান্তা ফুরনো’র দশা। কিন্তু অভাব তাদের হার মানাতে পারেনি। তিন খুদের দৌলতে বহরমপুর শহরের সৈয়দাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠ (উচ্চ মাধ্যমিক)-এর মুকুটে উঠল গৌরবের নতুন পালক। ৬২তম জাতীয় স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ক্যারাটে বিভাগে অষ্টম ও নবম শ্রেণির ওই তিন ছাত্র অনিমেষ বিশ্বাস, জিৎ চক্রবর্তী ও রাকেশ কর্মকার ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে।
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে গত ২৬ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব চোদ্দো বছর বিভাগে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অনিমেষ বিশ্বাস তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। পর দিন ২৭ ডিসেম্বর অনূর্ধ্ব ১৭ বছর বিভাগের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার পৃথক দু’টি বিভাগে তৃতীয় স্থান লাভ করে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে নবম শ্রেণির দুই ছাত্র জিৎ চক্রবর্তী ও রাকেশ কর্মকার।
রাজ্য ও জেলা স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যে ডজন দেড়েক মেডেল জিতেছে জিৎ। জিৎ-এর বাবা নেই। তার মা ডলিদেবী বাড়ি বাড়ি কাপড় ফেরি করে চার জনের সংসার চালান।
অনিমেষের বাবা অসীম বিশ্বাস খুচর ব্যবসায়ী। নাট্যকর্মীও। তিনি চাল বিক্রি করে চার জনের সংসার চালান। ইতিমধ্যে অনিমেষের ঝুলিতে রয়েছে ২৩টি মেডেল। রাকেশের সংগ্রহে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পাওয়া ১২টি মেডেল। রাকেশের বাবা রতন কর্মকার পেশায় স্বর্ণশিল্পী। অন্যের সোনার দোকানে কারিগর।
মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক জসিমুদ্দিন বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে রাজ্য স্তরে স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগাসনে প্রথম হয় আমাদের স্কুল। তারপর দু’ বছরের খরা কাটিয়ে এ বার জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় আমাদের তিন ছাত্র ক্যারাটেতে ব্রোঞ্জ জিতে স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে।’’
তবে তাদের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে একটি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ সংস্থা। প্রধান শিক্ষক জানান, স্কুলে ক্যারাটে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। তবে ‘ক্যারাটে ডো অ্যাসোসিয়েশন অব মুর্শিদাবাদ’ নামের একটি সংস্থার কাছে ছাত্ররা অনুশীলন করে। ওই সংস্থার সভাপতি দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘বছর চারেকের কঠোর অনুশীলনের ফলে ওই তিন ছাত্রের সাফল্য মিলেছে। তাদের সাফল্যের ফলে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy