Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আই লিগ

জোবির জোড়া গোলে পাহাড় জয়

নেরোকা এফ সি-র পর শিলং লাজংকেও হেলায় হারিয়ে বৃহস্পতিবার লিগ শীর্ষে পৌঁছে গেল আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দল।

মরিয়া: কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড দিয়ে লাজংয়ের হয়ে ব্যবধান কমাচ্ছেন ডিফেন্ডার রাকেশ প্রধান। বৃহস্পতিবার শিলংয়ে। নিজস্ব চিত্র

মরিয়া: কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড দিয়ে লাজংয়ের হয়ে ব্যবধান কমাচ্ছেন ডিফেন্ডার রাকেশ প্রধান। বৃহস্পতিবার শিলংয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৭
Share: Save:

শিলং লাজং ১ • ইস্টবেঙ্গল ৩

পাহাড়ের ভয়ঙ্কর কাঁটা পেরিয়ে আই লিগের শুরুতে চমকপ্রদ দৌড় শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। বহু দিন পর আই লিগের শুরুর দুটি ম্যাচ জিতল মশালধারীরা।

নেরোকা এফ সি-র পর শিলং লাজংকেও হেলায় হারিয়ে বৃহস্পতিবার লিগ শীর্ষে পৌঁছে গেল আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দল। শুধু তা-ই নয়, গত পাঁচ বছরে যে দলকে মাত্র দু’বার হারিয়েছে লাল-হলুদ জার্সি, তাদের মাঠে গিয়ে অনায়াস জয় নতুন একটি বার্তা দিয়ে গেল হয়তো। তা হল, মালয়েশিয়ায় প্রস্তুতি শিবিরের ফসল ফলতে শুরু করেছে। অন্য মতও আছে। যে পাহাড়ের কাঁটা বারবার বিদ্ধ করেছে ইস্টবেঙ্গলকে সেখানে গিয়ে পরপর সাফল্যের পিছনে আসল রসায়ন, দলের প্রায় অর্ধেক ফুটবলারই ছিলেন নর্থ ইস্টেরই। কাঁটা দিয়ে তাই সহজেই কাঁটা তুলেছেন লাল-হলুদ কোচ।

ইন্ডিয়ান অ্যারোজ এবং শিলং লাজং—এ বার এই দুটি দলে কোনও বিদেশি নেই। টাট্টু ঘোড়ার মতো গতিময় এবং ছটফটে অনূর্ধ্ব ২২ একদল ছেলে নিয়ে এ দিন নেমেছিল শিলং। যাঁদের হারানো সহজ ছিল না। শুরু থেকেই চেপে ধরেছিল পাহাড়ি দলটি। ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ স্বীকারও করে নিয়েছেন সেটা। বলে দিলেন, ‘‘ম্যাচের শুরুতে আমরা সত্যিই চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। পাসিং, বল পজেশন সব জায়গায় ওরা এগিয়ে ছিল। আমাদের আজকের এই জয়ের জন্য রক্ষণকেও কৃতিত্ব দেব। ওরা আজ অসাধারণ খেলেছে।’’

শুরুতে শিলংয়ের চাপ সামলাতে গিয়ে জনি আকোস্তা এবং বোরখা পেরেসদের যখন দিশাহারা লাগছে, তখনই খেলার গতির বিপক্ষে গিয়ে গোল করে যায় ইস্টবেঙ্গল। শুরুর বারো মিনিটে অসাধারণ একটি গোল করে দেন জোবি জাস্টিন। লালরিনডিকা রালতের ফ্রিকিক থেকে হেডে ওই গোলটি করেন জোবি। ওই গোলই ম্যাচের রং বদলে দেয় মুহূর্তে। এর পর ইস্টবেঙ্গল খেলা ধরার চেষ্টা করলেও, অ্যালিসন খারসিনতিইয়ের পাহাড়ি ছাত্ররা কিন্তু গতি আর এক সঙ্গে টানা সাত-আটটা পাস খেলে পাল্টা আক্রমণে উঠতে থাকে। একটা সময় দেখা যাচ্ছিল শিলং লাজংয়ের বল পজেশন ৬৩ শতাংশ। কর্নার এবং গোলে শট নেওয়াতেও এগিয়ে পাহাড়ি দল। কিন্তু বলের দখল বেশি রাখলেও ম্যাচ জেতা যায় না। সেটা প্রমাণিত হল এ দিনও। রাকেশ প্রধান, লালাপুল্লা হামতেরা সারাক্ষণ কামড় দিয়ে গেলেও তাই জিততে পারেননি। তবে তাঁদের সাফল্য না পাওয়ার অন্যতম কারণ ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার রক্ষিত দাগার। বেশ কয়েরটি ভাল সেভ করেন তিনি।

আই লিগে এ বার ইস্টবেঙ্গলই একমাত্র দল যারা বিদেশে প্রস্তুতি নিয়েছে। সেখানে গিয়ে স্প্যানিশ কোচ চেয়েছিলেন প্রথম এগারো এবং পরিবর্ত খেলোয়াড় বেছে নিতে। ফলে পিঠের ব্যথায় কাবু আল আমনা দুটো ম্যাচ না খেললেও সমস্যা হয়নি। মসৃণ মেশিনের মতো উইং প্লে হচ্ছে। মাঝমাঠ থেকে কমলপ্রীত সিংহরা বলের জোগান দিচ্ছেন। সেই রণনীতির সুফল পাচ্ছে দল। এ দিনও তা পেল। বিরতির ঠিক আগে জোবির দ্বিতীয় গোল তারই ফল। মেক্সিকান স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুয়েদা এ দিন গোল পাননি, কিন্তু জোবিকে বলটা বাড়িয়ে গোল করিয়েছেন এ দিন। ২-০ পিছিয়ে পড়ার পরও নাছোড় ছিল শিলং। তাদের যে ফুটবলার সবার নজর কাড়ছিলেন সেই রাকেশ প্রধানই ২-১ করেন। এই গোলটিও হল দুর্দান্ত। স্যামুয়েল লালপুনিয়ার কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড করলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গলের শেষ গোলটি করেন বিদ্যাসাগর সিংহ। ইস্টবেঙ্গল অ্যাকাডেমি থেকে আসা বিদ্যাসাগর নেমেছিলেন পরিবর্ত হিসাবে। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলে নজর কেড়েছিলেন। আই লিগে এটিই ছিল তার জীবনের প্রথম গোল। জোবির জোড়া গোলের মতোই।

ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত ডাগর, লালরাম চুলোভা, জনি আকোস্তা, বোরখা পেরেস, মনোজ মহম্মদ, লালরিনডিকা রালতে, কমলপ্রীত সিংহ, লালরামুইয়া রালতে (কাশিম আইদারা) ব্র্যান্ডন ভানলালরেমডিকা (ইয়ামি লংভা), জোবি জাস্টিন (বিদ্যাসাগর সিংহ) এবং এনরিকে এসকুয়েদা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE