Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Sport News

অশান্তির বাগানে মারমার কাটকাট

প্রায় পাঁচিশ বছর ধরে একসঙ্গে ক্লাব প্রশাসন চালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট টুটু বসু ও সচিব অঞ্জন মিত্র। এখন তাঁরা ভিন্ন মেরুতে। এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন টুটু। কয়েক সপ্তাহ আগে সেই পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেন তিনি।

গোলমালের মঞ্চে অঞ্জন মিত্র। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

গোলমালের মঞ্চে অঞ্জন মিত্র। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০৫:২০
Share: Save:

ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগান ক্লাবের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেল শনিবার। কর্মসমিতির সভা ঘিরে প্রেসিডেন্ট ও সচিব গোষ্ঠীর ধুন্ধুমার ঝামেলায় কলঙ্কিত হল ১২৮ বছরের ক্লাব তাঁবু। চার মাস পরেই ক্লাবের নির্বাচন। ফলে কোনও গোষ্ঠীই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ।

আর তার জেরেই হাতাহাতি, মঞ্চ থেকে ধাক্কা, স্লোগান পাল্টা স্লোগান, কর্তাদের হাত থেকে মাইক ছিনিয়ে নেওয়া, তাঁবুর বাইরে একদল বহিরাগতের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আস্ফালন— কিছুই বাদ গেল না। হাজার দু’য়েক সদস্যের ঝামেলার সময়ে দেখা গেল ক্লাবের তিন প্রাক্তন ফুটবলারকেও। এঁরা হলেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির ঘোষ। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ ছিল যে, দুপুর থেকে শ’খানেক পুলিশ তাঁবু ঘিরে না-রাখলে ও গেটে দাঁড়িয়ে পরিচয়পত্র পরীক্ষা না-করলে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।

প্রায় পাঁচিশ বছর ধরে একসঙ্গে ক্লাব প্রশাসন চালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট টুটু বসু ও সচিব অঞ্জন মিত্র। এখন তাঁরা ভিন্ন মেরুতে। এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন টুটু। কয়েক সপ্তাহ আগে সেই পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেন তিনি। সচিব অঞ্জন চিঠি দিয়ে প্রেসিডেন্টকে জানিয়ে দেন, কর্মসমিতি চাইলেই টুটু প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে পারবেন। তা মানেননি টুটু। এ দিন বিকেলে ক্লাব তাঁবুতে ঢুকে সটান মঞ্চে উঠে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসে পড়েন টুটু। অঞ্জন ও তাঁর অনুগামীরা প্রতিবাদ করলেই ঝামেলা শুরু হয়। হঠাৎ দেখা যায় ক্লাবের এক পদাধিকারী থাপ্পড় কষিয়ে দিয়েছেন কর্মসমিতির আমন্ত্রিত সদস্যকে। এর পরেই মারামারি। মঞ্চে উঠে পড়েন কয়েকশো সদস্য। দেখা যায় ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় পরস্পরকে আঙুল তুলে শাসিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলছেন। ঘটনাচক্রে, স্বপন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই আর প্রসূন তৃণমূলেরই সাংসদ। মঞ্চেই টুটুর অনুগামীরা চিৎকার করতে থাকেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হিসাবে টুটুকে না মানা হলে সভা শুরু হবে না।’’ পাল্টা প্রতিবাদ করতে থাকেন অঞ্জন অনুগামীরা। এরই মধ্যে সচিব-জামাতা প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে হেনস্থা করেন কিছু সদস্য। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সভা শুরু হয়। প্রাক্তন বিচারপতি মুরারিমোহন ঘোষ প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রস্তাব করেন টটুর নাম। সমর্থন করেন প্রসূন। সভায় ঠিক হয়, ক্লাবকে পাবলিক লিমিটেড করা হবে। পরের মরসুমে আইএসএল খেলার চেষ্টা করবে মোহনবাগান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Mohun Bagan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE