জাতীয় পর্যায়ে বাংলার টেবল টেনিসের পদক সংখ্যা যত কমছে, ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কর্তাদের ক্ষমতা দখলের লড়াই। এরই মধ্যে সর্বভারতীয় টেবল টেনিস ফেডারেশন তাদের অনুমোদিত দুটি সংস্থাকে এক করে বাংলা থেকে একটি কমিটি গড়তে বলায় ক্ষমতা দখলের লড়াই আরও তীব্র হয়েছে।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ টেবল টেনিস সংস্থার কর্মসমিতির সভায় আসন্ন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেল। হুমকি-পাল্টা হুমকি, তর্কাতর্কি, একে অন্যের দিকে তেড়ে যাওয়া—কিছুই বাদ গেল না। কয়েক জন সদস্য দু’পক্ষকে সরিয়ে না দিলে হাতাহাতি হতে পারত এক ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রাক্তন এক আম্পায়ারের। মারমুখী মেজাজে ছিলেন ওঁরা। সচিবের সঙ্গে যুগ্ম সচিবের দীর্ঘ তর্কাতর্কি আর চিৎকারে উত্তপ্ত হল সভা। মহিলা কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে এক কোচের ঝগড়া পৌঁছলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে। সংস্থার সচিব দেবীপ্রসাদ বসু যতক্ষণ না নির্বাচনের দিন ঘোষণা করলেন, ততক্ষণ বামা চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ঘোষ দস্তিদাররা রাজ্য টেবল টেনিস প্রতিযোগিতার তারিখ ঘোষণা করতে দেননি। দীর্ঘক্ষণ ঝামেলা চলার পর অবশ্য সমঝোতা হয় দু’পক্ষের। পাঁচ মাস বন্ধ হয়ে থাকা সংস্থার নির্বাচন হবে ২২ ডিসেম্বর। সাধারণ সভা ২৮ অক্টোবর। রাজ্য টেবল টেনিস হবে নভেম্বরে। দেবীবাবু অবশ্য বললেন, ‘‘নানা সমস্যায় পাঁচ মাস সভা ডাকতে পারিনি। সেটা আমারই দোষ। তাই কিছু মনোমালিন্য হয়েছে। সেটা তেমন কিছু নয়।’’ আর তাঁর কমিটির কোষাধ্যক্ষ শর্মি সেনগুপ্তের মন্তব্য, ‘‘উনি নির্বাচন বারবার পিছিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন। সভা ডাকছেন না। ঝামেলা তো হবেই।’’
কিন্তু সংস্থার যে নির্বাচন নিয়ে এত গণ্ডগোল, সেটা হলেও কী সমস্যা মিটবে? মনে হয় না। এক সময় যে খেলা থেকে সবচেয়ে বেশি পদক আসত বাংলায়, সেই সংস্থাই তো এখন তিন ভাগে বিভক্ত। এঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ টিটি সংস্থা ও উত্তর বঙ্গ টিটি সংস্থা সর্বভারতীয় ফেডারেশনের অনুমোদিত। গত মাসে গুয়াহাটিতে ফেডারেশনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বাংলায় একটি সংস্থাকেই তারা অনুমোদন দেবে। এক মাসের মধ্যে সেই কমিটি গড়তে হবে। বুধবার দিল্লি থেকে ফেডারেশন সচিব মহিন্দর পাল সিংহ বললেন, ‘‘দুটো সংস্থাকে এক করে একটা কমিটি করতে হবে। চার দিন আগে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। এক মাসের মধ্যে নির্দেশ না মানলে বাংলার খেলোয়াড়দের জানুয়ারিতে কটকে জাতীয় টিটিতে নামতে দেওয়া হবে না।’’ ফেডারশন সচিব এ কথা বললেও পশ্চিমবঙ্গ টিটি সংস্থার সচিব বললেন, ‘‘চিঠি পাইনি। পেলে আলোচনা করব।’’ আর শিলিগুড়ি থেকে উত্তরবঙ্গের প্রেসিডেন্ট মান্তু ঘোষ ফোনে বললেন, ‘‘চিঠি পেলে না হয় সভা ডাকব।’’ যা শুনে হাসতে হাসতে ফেডারেশন সচিবের মন্তব্য, ‘‘ওঁরা মনে হয় ই মেল ইনবক্সে ওই চিঠিটাই এখনও দেখতে পাননি। পরে নিশ্চয়ই দেখতে পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy