বারাসতে ‘তাপ প্রবাহ’। ড্রেসিংরুমের সামনে পুলিশের লাঠি চার্জ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
লাল-কার্ড, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, অ্যাকাডেমি ফুটবলারের চমৎকার গোল, কোচ-কর্মকর্তা হাতাহাতি, এক দলের কোচকে অন্য দলের সদস্যের বেধড়ক মার যত কাণ্ড বারাসতে!
রবিবারের কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল বনাম সাদার্ন সমিতির ফুটবলকে ছাপিয়ে থেকে গেল একের পর এক ন্যক্কারজনক নাটক!
প্রথম দৃশ্য
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে সুখবিন্দরকে ফাউল করে ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন সাদার্নের সূরজ মণ্ডল। ঝামেলার সূত্রপাত সেখান থেকেই। কোচ রঘু নন্দী রীতিমতো উত্তেজিত। কর্তা সৌরভ পাল প্লেয়ারদের আর না খেলে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। যদিও তাঁরা খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব দেখিয়ে পুরো ম্যাচ খেলে মাঠ ছাড়েন। ততক্ষণে দু’দলের কর্তা আর রঘুর মধ্যে ঝামেলা লেগে গিয়েছে।
একটি সূত্র জানাচ্ছে, সূরজ বিতর্কের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার পরিবর্তন করতে এসেছিলেন টিম ম্যানেজার মণীশ বন্দ্যোপাধ্যায়। রঘু নন্দী তাঁকে গালাগাল করেন, ধাক্কা দেন। মণীশ পাল্টা রঘুকে নাকি থাপ্পড় মারেন।
দ্বিতীয় দৃশ্য
ম্যাচ শেষে রঘু যখন ড্রেসিংরুমে যাচ্ছেন, তখন লাল-হলুদ সমর্থকরা বিশ্রী গালাগাল করছিলেন তাঁকে। সাদার্ন কোচও পাল্টা অশ্লীল ইঙ্গিত করেন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে। আরও উত্তপ্ত হয় ওঠে পরিবেশ। তবে ড্রেসিংরুমের সামনে এসে ইস্টবেঙ্গল ম্যানেজারও
মার খেয়ে রঘু নন্দী।
রঘুকে ফের গালাগাল দেন। ক্ষিপ্ত রঘুও গালাগাল করতে থাকেন। তার পরেই ময়দানের পরিচিত লাল-হলুদ সদস্য তিলক দাস মারতে শুরু করেন রঘুকে। বিপক্ষ টিমের কোচকে মারার মতো নিন্দনীয় ঘটনা ঘটানোর পরেও দেখা যায়, তিলক দিব্যি ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের সঙ্গেই ড্রেসিংরুম থেকে বেরোচ্ছেন। ম্যাচে সূরজ-বিতর্ক চলার সময়ও তিলক মাঠে ঢুকে উত্তেজিত ভাবে তেড়ে যান সাদার্নের রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে। দু’তিন জন পুলিশ তাঁকে গ্যালারিতে পাঠান। যে গ্যালারিতে ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবল-সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য। প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে ম্যাচ চলাকালীন ওই সদস্য মাঠে ঢুকলেন?
তৃতীয় দৃশ্য
রঘু এক সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করান। সোমবারই লাল-হলুদ টিম ম্যানেজার-সহ এই ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন জানিয়েছেন সাদার্ন কোচ। বলে দেন, “আমাকে যে ভাবে মারা হয়েছে, মানা যায় না। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর করা যায়। সোমবার সকালেই এফআইআর করব মণীশবাবুদের বিরুদ্ধে।” ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিবের আবার পাল্টা অভিযোগ, “রঘু নন্দীই তো প্রথম মণীশকে মেরেছে। গ্যালারি থেকে পরিষ্কার দেখেছি। তবে বিপক্ষ কোচের গায়ে হাত তোলা ক্লাবের উচিত হয়নি। এটা নিন্দনীয়।”
চতুর্থ দৃশ্য
উত্তেজিত সাদার্ন কর্তা সৌরভ পাল অভিযোগ করছেন, “আমাদের কাছে তিন পয়েন্ট ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল ইস্টবেঙ্গল।” যদিও লাল-হলুদের ফুটবল-সচিব বলে দেন, “সৌরভ ছেলেমানুষের মতো কথা বলছে। এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।” তাতে এতটুকু না দমে সাদার্ন কর্তার হুমকি, “আইএফএ যদি রঘু নন্দীকে মারার ঘটনার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয়, তবে সাদার্ন বাকি ম্যাচ তো খেলবেই না, পরের বছরও লিগ বয়কট করব।”
যবনিকা পতন
র্যান্টি-ডুডু যুগলবন্দিকে বোতলবন্দি করে ফেলেছিলেন সার্দান কোচ। তার মধ্যেই আর্মান্দোর দলকে তিন পয়েন্ট এনে দেন বাগান অ্যাকাডেমি থেকে ইস্টবেঙ্গলে আসা প্রহ্লাদ রায়। বিরতির ঠিক আগে ৩০ গজের বাঁ পায়ের শটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy