লড়াই: আনন্দের সঙ্গে ওয়েসলি। শুক্রবার কলকাতায়। পিটিআই
২৩ বছর পরে কলকাতায় প্রথম দাবা প্রতিযোগিতায় খেলতে নামার দিনটা খুব ভাল গেল না বিশ্বনাথন আনন্দের। টাটা স্টিল দাবা প্রতিযোগিতার র্যাপিড বিভাগে তিনটি রাউন্ডের খেলা হল শুক্রবার। তবে আনন্দ কোনও রাউন্ডেই জয় পাননি। তিনটে ম্যাচই ড্র করেন। ফলে দিনের শেষে তাঁর প্রাপ্তি দেড় পয়েন্ট।
২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লেভন অ্যারোনিয়ান। এ ছাড়া ২ পয়েন্ট পেয়েছেন শাখরিয়ার মামেদিয়েরভ ও ভারতের পেন্টালা হরিকৃষ্ণ। আনন্দের সঙ্গে দেড় পয়েন্ট পেয়েছেন হিকারু নাকামুরা, ওয়েসলি সো, সের্গেই কারইয়াকিনও। দিনটা ভাল যায়নি সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়েরও। স্থানীয় তারকা তৃতীয় রাউন্ডে হারেন শাখরিয়ারের বিরুদ্ধে। ফলে বিদিত সন্তোষ গুজরাতি এবং নিহাল সারিনের সঙ্গে তাঁরও প্রাপ্তি এক পয়েন্ট।
এ দিন প্রথম রাউন্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল দুপুর দুটোয়। তার আগে থেকেই উৎসাহীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনটে রাউন্ডের শেষে যখন দাবাড়ুরা হল থেকে বেরোচ্ছেন তখনও দেখা গেল শ’খানেক ভক্ত নিজস্বী, সই নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। যা দেখে বিদেশি দাবাড়ুদের মধ্যে কেউ কেউ বলেও ফেললেন, এ রকম মাতামাতি অন্য কোথাও দেখেননি।
আনন্দ পরে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘কলকাতায় খেলতে আসার সময় থেকেই খুব ভাল লাগছে। পরিবেশটাও দারুণ। আজ আমার তিনটে গেমের মধ্যে প্রথমটা সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। ১৪৫ চাল খেলার পরে ড্র করেছি যে গেমে। এ রকম খুব বেশি হয়নি। তবে একটা সময় আমি চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সেই সুযোগটা নিতে পারেনি। তাই ম্যাচটা যখন ড্র হল বেশ চাপমুক্ত লাগছিল।’’
দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাউন্ডে আনন্দের প্রতিপক্ষ ছিলেন সের্গেই কারইয়াকিন এবং লেভন অ্যারোনিয়ান। এই দু’জনের মধ্যে সের্গেই বেশি চাপে ফেলে দিয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে আনন্দ বলেন, ‘‘সের্গেইয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচটা সবচেয়ে কঠিন ছিল বলব না। তা ছাড়া আমাকে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে ঠিকই আছে। দেখা যাক এর পরে কী হয়।’’
এ দিন বিশ্বের নামী তারকাদের পাশাপাশি দর্শকদের আগ্রহ ছিল ১৪ বছর বয়সি নিহাল সারিনকে নিয়েও। যাঁকে দাবা সার্কিট প্রচণ্ড প্রতিভাবান বলেই চেনে। ড্র অনুযায়ী নিহালের বিরুদ্ধে আজ আনন্দের খেলা ছিল না। তবে তিনি যে নিহালের মুখোমুখি হতে কতটা আগ্রহী সেটা তাঁর কথাতে ধরা পড়ল। ‘‘নিহালের আজকের খেলা আমি ভাল করে লক্ষ্য করিনি। ওর সঙ্গে অনলাইনেও খেলা হয়নি। তবে ও খুব প্রতিভাবান। ওর বিরুদ্ধে খেলতে মুখিয়ে আছি,’’ বলেন আনন্দ।
ভারতীয় দাবাড়ুদের মধ্যে নজর ছিল পেন্টালা হরিকৃষ্ণের উপরও। দ্বিতীয় রাউন্ডে হরিকৃষ্ণ হারান মামেদিয়েরভকে। যে ম্যাচ নিয়ে পরে তিনি বলেন, ‘‘ওপেনিংয়ের পরে একটা চাল দিয়েছিলাম। যেটা আরও ভাল হতে পারত। ম্যাচের পরে যেটা শাখরিয়ার বলল। আমি সময়ের দিক থেকে ওর চেয়ে পিছিয়ে ছিলাম। তাই খুব সাবধানে খেলেছি। তবে একটা সময়ের পরে আমার আর কোনও সমস্যা হয়নি ম্যাচটা জিততে।’’ সূর্যশেখরের দিনটা খুব ভাল না গেলেও তিনি হতাশ নন। বরং প্রথম দু’রাউন্ডে হরিকৃষ্ণ এবং ওয়েসলির সঙ্গে ড্র করে আরও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy