বিতর্কিত সেই পোষাক। বুধবার উইম্বলডনে। ছবি: এএফপি
উইম্বলডন আক্রান্ত ‘বেবি ডল’ বিতর্কে!
সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী গ্র্যান্ড স্ল্যামে এ বার অধিকাংশ মেয়ে খেলোয়াড়ের পোশাক যে বিখ্যাত কিট প্রস্তুতকারী সংস্থা বানিয়েছে, সেটাকে প্লেয়াররাই কটাক্ষ করে নাম দিয়েছেন, ‘নাইকি-র নাইটি!’ যা এতটাই খোলামেলা। আর খেলার সময় এলোমেলো হয়ে আরও উন্মুক্ত করে তুলছে শরীর।
অ্যান্ডি মারের মেয়ে সোফিয়া তার বাবার খেলা মাত্র চার মাস বয়সে দেখে ফেলল! উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে মেয়ে কোলে কিম সিয়ার্সকে মারের প্রথম রাউন্ডেই প্লেয়ার্স বক্সে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে যে।
শেন ওয়ার্নকে আবার তাঁর তিন টিনএজার ছেলেমেয়ে নিয়ে রোজ দিন উইম্বলডনে ঘোরাফেরা করতে দেখে জল্পনা চলছে, কিংবদন্তি স্পিনার কি সন্তানদের টেনিস প্লেয়ার করার কথা ভাবছেন সিরিয়াসলি!
‘মিস্টার উইম্বলডন’ রজার ফেডেরারের দ্বিতীয় রাউন্ড প্রতিপক্ষ হঠাৎ-ই সাত বারের চ্যাম্পিয়নের চেয়েও অনেক বেশি প্রচারের আলোয়! চলতি বছরে পেশাদার ট্যুর থেকে মাত্র ৬৪ ডলার রোজগার করা ছয় ফুট তিন ইঞ্চি, নব্বই কেজি, বছর পঁচিশের ব্রিটিশ মার্কাস উইলিসের এ বার উইম্বলডনের কোয়ালিফাইংয়েই সুযোগ পাওয়া ‘লাকি লুজার’ হিসেবে। দেশোয়ালি স্কট ক্লেটন সময় মতো তুরস্ক থেকে লন্ডনে পৌঁছতে না পারায় উইলিস পেয়ে যান কোয়ালিফাইংয়ে ওয়াইল্ড কার্ড। সেখান থেকে টানা চার ম্যাচ জিতে বিশ্বের ৭৭২ নম্বর বাঁ-হাতি প্লেয়ার আজ জীবনের প্রথম স্টেডিয়াম কোর্টে ম্যাচ খেলার অবিশ্বাস্য স্বপ্নকে বাস্তব করলেন। ৫০ হাজার ডলার প্রাইজমানি যাঁর এখনই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে গ্র্যান্ড স্ল্যামের মূলপর্বে এক রাউন্ড টপকানোয়। অথচ যিনি কিনা ঐতিহ্যশালী গ্র্যান্ড স্ল্যামে অভিষেকের আগে কোনও দিন কোনও ট্যুর ম্যাচই খেলেননি!
১৩৯তম উইম্বলডনের প্রথম তিন দিনেই কত না অভিনবত্ব! কিন্তু সে সবও ছাপিয়ে এসডব্লিউ১৯-এ আপাতত মেয়ে খেলোয়াড়দের তীব্র পোশাক বিতর্ক!
প্রশ্ন উঠছে, তা হলে প্লেয়ারদের ‘ড্রেস কোড’ নিয়ে সদা খুঁতখুঁতে আর ঐতিহ্যবাদী উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ কী ভাবে এ রকম খোলামেলা পোশাক মঞ্জুর করলেন এ বার? যা নিয়ে বেশির ভাগের ব্যাখ্যা, খোলামেলা হলেও উইম্বল়ডনের চিরাচরিত সাদা পোশাক বানিয়ে সংগঠকদের থেকে সবুজ সঙ্কেত আদায় করে নিয়েছেন বুদ্ধিমান মার্কিন ব্যবসায়ী সংস্থা। কিন্তু কে জানত তাদের সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ক্লায়েন্ট-ই বেঁকে বসবেন ‘নাইটি’ পরে খেলতে?
ফাঁস হয়ে গিয়েছে, সেরিনা উইলিয়ামস টুর্নামেন্টের আগেই নিজের জন্য একটু অন্য ডিজাইনের রক্ষণশীল পোশাক বানিয়ে নেন ওই আমেরিকান কিট প্রস্তুতকারী সংস্থাকে চাপ নিয়ে। কিন্তু সেরিনা না হয় সেই বাড়তি উঁচু গলা, কম খাটো ‘নাইকি উওমেন্স প্রিমিয়ার উইম্বল়ন ড্রেস’ পরে সেন্টার কোর্টে নামলেও লিসিকি, সাফারোভার মতো অন্য অনেক প্লেয়ারের পোশাক অল ইংল্যান্ড ক্লাবের কোর্টগুলোতে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
প্লেয়াররা নিজেরাও যা নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত। দাবি করছেন, এতে তাঁদের খেলায় মনঃসংযোগে পর্যন্ত ব্যাঘাত ঘটছে। সাফারোভা যেমন বলেছেন, ‘‘ওভারহেড শট মারতে গেলেই তো আমার শরীর অনেকটা উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে! কী অস্বস্তিকর ব্যাপার ভাবুন তো? খেলব, না প্রকাশ্য আলোয় নিজের লজ্জা নিবারণের কথা ভাবব!’ বছর তিনেক আগের উইম্বলডন ফাইনালিস্ট লিসিকি তো প্রথম রাউন্ড জেতার পরে পরের ম্যাচে ওই পোশাক পরে খেলতে সরাসরি অস্বীকার করেছেন। ‘‘এত খোলামেলা পোশাকে লো রিটার্ন করতে গেলেই অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছি। কী বিশ্রী কাণ্ড!’’ উইম্বলডনে পোশাক বিতর্ক এবং তার চেয়েও বেশি নিজেদের লজ্জা নিবারণে আপাতত কোনও মেয়ে প্লেয়ার ‘নাইকি-র নাইটি’র উপর ফুল স্লিভ জামা পরে নিয়ে খেলছেন। কেউ আবার নিজের হেডব্যান্ড-কে কোমরে বেল্ট হিসেবে লাগিয়ে নিয়ে কোর্টে নামছেন। যাতে কিনা নিজের সঙ্গে সঙ্গে উইম্বল়ডনেরও মর্যাদা রক্ষা পায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy