উৎসব: দক্ষিণ আফ্রিকাকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে ভারতীয় দল। শনিবার কেপ টাউনে। ছবি: টুইটার।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটি থেকে প্রথম বার দু’টো সিরিজ জেতা ভারতীয় দল এখন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। আর সে জন্যই ভুবনেশ্বর কুমার বলে দিতে পারছেন, অস্ট্রেলিয়া হোক বা ইংল্যান্ড— যে কোনও জায়গায় খেলার জন্য এখন তাঁরা তৈরি।
শনিবার কেপ টাউনে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে সিরিজ ২-১ জিতে নেয় ভারত। এর আগে ওয়ান ডে সিরিজও ভারত জিতেছিল ৫-১ ফলে। গত কালের ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ সুরেশ রায়না (২৭ বলে ৪৩) হলেও সিরিজ জয়ের পিছনে কিন্তু বড় অবদান ভুবনেশ্বরেরই। শেষ ম্যাচে পাওয়ার প্লে-তে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের আটকে রেখেছিলেন ভুবিই। যার ফলে ভারতের ১৭২ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-র প্রথম ছ’ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান দাঁড়ায় এক উইকেটে ২৫। যার মধ্যে ভুবি করেছিলেন তিন ওভার। প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ভুবনেশ্বরের নাক্ল বলের জবাব ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকানদের কাছে। এর পরে যখন ক্রিশ্চিয়ান ইয়ঙ্কার (২৪ বলে ৪৯) পাল্টা মারের রাস্তা নেন, তখনও ডেথ ওভারে ফিরে এসে তাঁকে তুলে নেন ভুবনেশ্বর।
টি-টোয়েন্টিতে ম্যান অব দ্য সিরিজ ভুবনেশ্বর বলেছেন, ‘‘আমরা বেশি লোভ করতে চাই না। দু’টো ট্রফি নিয়ে আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। আশা করছি, পরের বার এসে তিনটে ট্রফি নিয়েই বাড়ি ফিরতে পারব।’’ এই সফরে টেস্ট সিরিজ ১-২ হারের পরে সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে ভারতের দাপটই দেখা গিয়েছে। ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি— দু’টো সিরিজই জিতে নিয়েছে বিরাট কোহালির দল।
ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে ভুবনেশ্বর বলছিলেন, ‘‘দারুণ সফর হল একটা। টেস্ট সিরিজের কথা আমি আলাদা করে বলতে চাই। আমরা প্রথম দু’টো টেস্ট হেরেছিলাম ঠিকই, কিন্তু খুব তীব্র লড়াই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সিরিজটা আমরা ১-২ হেরে যাই, কিন্তু শেষ টেস্ট জয়ের পরে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে। আমরা এখন মনে করি, বিশ্বের যে কোনও জায়গাতেই খেলি না কেন, তার জন্য আমরা তৈরি আছি। তাই বলব, এ বার অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডে যাওয়ার জন্য তৈরি। ওখানে ভাল ফল করার ব্যাপারে আশাবাদী।’’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স নিয়ে ভুবনেশ্বর বলেছেন, ‘‘টি-টোয়েন্টিতে বৈচিত্র আর টাইমিংটা হল আসল। আমি যখনই নাক্ল বলটা করেছি, চেয়েছি ব্যাটসম্যান যেন ওটা মারার চেষ্টা করে। আমার প্ল্যানই ছিল সেটা। আমি জানতাম, ও-ই ভাবেই উইকেট আসবে। সে জন্যই আমি পাওয়ার প্লে-তে এত সফল হয়েছি।’’ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে ভুবির আরও বক্তব্য, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হল এমন ফর্ম্যাট, যেটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। একজন বোলারের হাতে চার ওভারের বেশি থাকে না। ওভারে তিনটে বল ব্যাটসম্যান মেরে দিলেই আপনার বোলিং গড় খারাপ হয়ে যাবে। তাই প্রতিটা বলের ক্ষেত্রে বোলারকে ভাবতে হয়। টেস্ট ম্যাচে আবার আপনাকে এত বৈচিত্র আনতে হয় না বোলিংয়ে।’’
এই সিরিজে দেখা গিয়েছে পাওয়ার প্লে-তে ভারতীয় বোলাররা চাপ রেখে গিয়েছে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ওপর। কিন্তু ভুবনেশ্বর মনে করছেন, শুধু পাওয়ার প্লে-ই নয়, পুরো ইনিংস জুড়েই ভাল বল করেছেন ভারতীয় বোলাররা। তাঁর মতে, ‘‘পাওয়ার প্লে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ম্যাচ জিততে হলে মিডল ওভারেও বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের আটকাতে হয়। আমরা সেটাই করেছি।’’
দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর দলে না থাকা নিয়ে ভুবনেশ্বরের মন্তব্য, ‘‘আমি ওই টেস্ট নিয়ে ভাবতেই চাই না। শুধু বলব, যে সব বোলার খেলেছিল, তারা ওই পরিবেশে দারুণ বল করার ক্ষমতা রাখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy