লিয়েন্ডার পেজ, মহেশ ভূপতির আছে। শনিবারের পর থেকে সানিয়া মির্জাও উইম্বলডন ডাবলস চ্যাম্পিয়ন। ছবি: গেটি ইমেজেস
এর পরেও সানিয়া মির্জাকে দেখে যদি আমাদের দেশের মহিলা টেনিস সমাজ উদ্দীপ্ত না হয়, তা হলে ভারতীয় টেনিসেরই দুর্ভাগ্য!
শনিবার রাতের চিরস্মরণীয় মহাযুদ্ধের পর একটাই ব্যাপার স্বাভাবিক— ভারত থেকে আরও কয়েকটা সানিয়া মির্জা বেরনো। যেমন টিনএজার শারাপোভাকে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হতে দেখে রাশিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বিশ্বমানের মেয়ে টেনিস তারকা গত এক দশকে বেরিয়েছে। শনিবার সেন্টার কোর্টে যাদের বিরুদ্ধে ফাইনালে অসাধারণ কামব্যাক করে সানিয়া-হিঙ্গিস ৫-৭, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৫ জিতে উইম্বলডন ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস রচনা করল, সেই ভেসনিনা-মাকারোভাও তো রুশ জুটি।
ইতিহাস রচনা হিঙ্গিসের দিক থেকে নয়। সুইস মহাতারকা তো উইম্বলডনে তিনটে বিভাগ মিলিয়ে এ দিন ওর সাত নম্বর খেতাব জিতল। কিন্তু সানিয়া? যতই তিনটে মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব আগে জিতুক না কেন, আজই গ্র্যান্ড স্ল্যামে মাথা উঁচু করে বলার মতো একটা খেতাব পেল সানিয়া। তাও আবার সবচেয়ে ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্র্যান্ড স্ল্যাম থেকে। টেনিসের ইতিহাসের সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী কোর্ট থেকে।
সানিয়াকে খুব ছোট বয়স থেকে চিনি। দেশপ্রিয় পার্কে প্রায় দেড় যুগ আগে খেলতে আসা ছোট্ট মেয়েটার পরিবারের প্রায় এক জন সদস্যই তখন থেকে আমি। তাই ওর কোর্ট আর কোর্টের বাইরেরও যাবতীয় লড়াই, সমস্ত প্রস্তুতি, প্রতিবন্ধকতার ভেতরের খবর আমার জানা।
সে জন্যই বলছি, ঠিক যখন বিশ্বের প্রথম সারির প্লেয়ারদের ব্র্যাকেটে ঢুকছিল ও, প্রথম তিরিশের ভেতর এসে গিয়েছিল, তার আশপাশ সময়েই যদি হাঁটু, কাঁধ আর সবশেষে ওর প্লেয়িং হ্যান্ডের কব্জিতে বড় চোটের কারণে অস্ত্রোপচার না করাতে হত, তা হলে সানিয়া সিঙ্গলসেও ইতিহাস রচনা করত ভারতীয় মেয়েদের টেনিসে। কে বলতে পারে, মুরুগুজার জায়গায় আজ সানিয়াকেই সিঙ্গলস ফাইনালে সেরেনার সামনে দেখা যেত না?
(ছবি রয়টার্স)
যে মেয়েটার ফোরহ্যান্ডকে শারাপোভার সঙ্গে একটা সময় তুলনা করা হত। যার ফোরহ্যান্ড ডাবলসে এখনও সার্কিটে সেরা ধরা হয়, তার সিঙ্গলসে নিজের প্রতিভার সম্পূর্ণ বিচ্ছুরণ না হওয়ার আরেকটা কারণ দুর্বল সার্ভিস। সানিয়া কোনও দিনই বিগ সার্ভার নয়। ওর এ দিনের মহাতারকা পার্টনার হিঙ্গিসেরও একই দুর্বলতা। যার জন্যই আমার মতে সানিয়াদের আজ জিততে এত কাঠখড় পোড়াতে হল। তা ছাড়া প্রথম বার অল ইংল্যান্ডের সেন্টার কোর্টে উইম্বলডন ফাইনাল খেলার বিরাট চাপ তো একটা ছিলই সানিয়ার উপর।
কিন্তু সেটাও কী অসাধারণ ভাবে কাটিয়ে উঠল সানিয়া! এমনকী দিনের আলো কমে যাওয়ায় সেন্টার কোর্টের ছাদ থেকে আলো জ্বালিয়ে খেলা শুরু হতেই দুর্দান্ত ব্যাকহ্যান্ডে বিপক্ষদের ব্রেক করে ঐতিহাসিক খেতাবের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল সানিয়া।
ভারতে কোন খেলায় এমন সোনার মেয়ে আর এসেছে? সাইনা নেহওয়াল কিন্তু অল ইংল্যান্ড জেতেনি এখনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy