প্রস্তুতি: সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাই রবিবার জন্মদিনেও অনুশীলন থেকে বিশ্রাম নেই লিয়োনেল মেসির। ছবি: গেটি ইমেজেস
একটা দলকে তিনটে জিনিস দিয়ে বিচার করা যায়। দলটা কতটা নম্র এবং সহজ ভাবে সবকিছু দেখতে পারে। তাদের আত্ম-সমালোচনা করার ক্ষমতা কী রকম এবং কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে কতটা সক্ষম।
এক জন কোচকে দলের মাথার উপরে বসিয়ে দেওয়াই যায়। কিন্তু কোচের জায়গাটা কিন্তু তাঁকে ধীরে ধীরে অর্জন করতে হয়। যখন কোচ সেই জায়গাটায় পৌঁছতে পারে, তখন তাঁর পদমর্যাদা মূল্য পায়। কোচের অবশ্যই সমালোচনা শোনার আগ্রহ থাকতে হবে এবং নিজের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার ক্ষমতাও থাকা চাই।
ফুটবলে সহজ সরল ও দৃঢ় থাকাটা ভীষণ জরুরি। যত বেশি অদলবদল হবে, তত দলের মধ্যে তৈরি হবে সংশয়। এখন বদল করার বা দল নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকার সময় নয়। মাঠে নামার জন্য অভিজ্ঞ ফুটবলারদের বেছে নিতে হবে এবং তাদের সমর্থন করতে হবে। যাতে তারা পরিকল্পনাগুলো মাঠে কাজে লাগানোর জন্য আরও আত্মবিশ্বাস পায়।
আমি আর্জেন্টিনীয় ফুটবলারদের একটা কথা বলতে চাই। তাঁদের দায়বদ্ধতা দেখানোর এটাই সময়। একটা সময় আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করে এসেছি এমন একটা সুযোগ পাওয়ার জন্য। অনেকে সুযোগ পেয়েছেন, অনেকে পাননি। তাই এখন যারা জাতীয় দলে আছেন, তাঁদের মাথায় রাখতে হবে এই সুযোগ পাওয়াটা কিন্তু খুব বড় ব্যাপার।
অবশ্যই সমালোচনার কেন্দ্রে থাকাটা সুখের নয়। আর্জেন্টিনা এখন যে জায়গায় রয়েছে, দলকে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে এই দলটা কিন্তু বাছাই করা ফুটবলারদের নিয়ে গড়া। এঁদের মধ্যে অনেকেরই এটাই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ। যাদের মধ্যে রয়েছেন মেসিও। তাই আর একটা সুযোগের জন্য অপেক্ষা না করাই ভাল।
এ বার ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটার প্রসঙ্গে আসি। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই সাম্পাওলির শরীরী ভাষায় ফুটে উঠছিল অস্থিরতা আর দুশ্চিন্তা। যা এক জন কোচের কখনও দেখানো উচিত নয়। কোচের পরিকল্পনায় বুদ্ধি, যুক্তির চেয়েও যেন বেশি ফুটে উঠছিল ইচ্ছাশক্তি। দলের কৌশল তৈরি করার দায়িত্ব যাঁর উপর, তিনিই এ ভাবে দলের বাকিদের চাপে ফেলে দিচ্ছেন। এ ভাবে যে একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা আন্দাজ করাটা কঠিন নয়।
এই পরিস্থিতিতে মেসিও যেন এক বিরাট রহস্য। নানা প্রশ্ন উঠছে। কী হল লিয়োর? কেমন চলছে সব? ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে এমন খেললেন কেন? উনি কি ফুটবলের বাইরে অন্য কিছু নিয়ে বিরক্ত? নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচটা কী ভাবে দেখছেন? প্রশ্নগুলো দলের মধ্যেই উঠছে। তার মধ্যে ফুটবলার, কোচিং স্টাফ, সহকারীরাও হয়তো আছেন। তার উপর বৃহস্পতিবারের হারের পরে দলের অনুশীলনে মেসির মুখে হাসি ছিল না। আমার মতে, নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে দলগত ফুটবল খেলুক মেসি। আর কিন্তু সময় নেই। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে অন্য সব কিছু ভুলে গিয়ে আমাদের সেই ফুটবলটা খেলতে হবে, যার জন্য আমাদের সবাই পছন্দ করে। তবে সবার আগে চাই, সঠিক মানসিকতা। মাঠে কোনও দিন ভাল যেতে পারে, বা খারাপও হতে পারে। তা বলে ফুটবলার মনোভাবের সঙ্গে কখনও আপস করা চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy