নায়ক: উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ডের মাগুয়্যের।
ইংল্যান্ড ২ • সুইডেন ০
ইংল্যান্ডকে ভীষণ ভাবে মিস করছি। ভুটানের জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য থিম্পুতে রয়েছি। কিন্তু মন পড়ে আছে ইংল্যান্ডেই।
আমার স্ত্রী জ্যাকি এই মুহূর্তে সারে-র ডরকিংয়ে রয়েছে। ম্যাচের আগে ওর পাঠানো ভিডিয়োতে দেখলাম, শহরের আবহটাই বদলে গিয়েছে। সর্বত্র উৎসবের মেজাজ। রাস্তা থেকে বাড়ি— সাজানো হয়েছে ইংল্যান্ডের জাতীয় পতাকায়। বাড়ির লনে চলছে ‘বার্বিকিউ’ বানানো। সুইডেনকে ২-০ হারিয়ে ইংল্যান্ড ২৮ বছর পরে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠার পরে ফোন করেছিলাম জ্যাকিকে। সবাই আনন্দে এত চিৎকার করছে যে, কোনও কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না। অথচ আমি একা নিঃসঙ্গ পাহাড়ে ঘেরা অপরূপ থিম্পুতে বসে রয়েছি।
ইংল্যান্ডের দুরন্ত জয় দেখে যন্ত্রণা ও উদ্বেগ কিছুটা কমল। উদ্বেগের কারণটা অবশ্য আলাদা। শেষ ষোলোয় কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে জিতলেও হ্যারি কেন-দের খেলা হতাশ করেছিল। এই বিশ্বকাপে দুর্দান্ত শুরু করা দলটা কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে হঠাৎ করেই ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল। অথচ গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের খেলা দেখে ববি রবসনের কথা মনে পড়েছিল। ম্যাচ রিপোর্টে লিখেওছিলাম, ১৯৯০ সালে রবসন যে ভাবে খেলিয়েছিলেন পল গাসকোয়েন, গ্যারি লিনেকার-দের, সেই আক্রমণাত্মক রণনীতিই অনুসরণ করছেন গ্যারেথ সাউথগেট। মাঠে ফুটবলারেরা দাঁড়াবেন ৩-৫-২ ছক অনুযায়ী। কিন্তু যখন প্রতিপক্ষ আক্রমণে উঠবে, তখন হয়ে যাবে ৫-৩-২। অর্থাৎ, পাঁচ ফুটবলার নেমে আসবেন রক্ষণে। এই পরিকল্পনার সাফল্য পুরোপুরি নির্ভর করে ফুটবলারদের বোঝাপড়ার উপরে। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে যা উধাও হয়ে গিয়েছিল। শনিবার সামারা এরিনায় সেই ছন্দ ফিরতেই ৩০ মিনিটে হ্যারি মাগুয়্যেরের গোলে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড।
অধিনায়ক হ্যারি কেন।
অ্যাশলে ইয়ংয়ের কর্নার থেকে দুরন্ত হেডে গোল করেন ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার। সুইডেনের ডিফেন্ডারেরা খেয়ালই করেননি যে নিজেদের রক্ষণ ছেড়ে উঠে এসেছেন হ্যারি। এ বারের বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে ১১ গোল করেছে ইংল্যান্ড। তার মধ্যে তিনটি গোল সেট পিস থেকে।
ইংল্যান্ডে বরাবরই সেট পিসের উপরে বাড়তি জোর দেওয়া হয়। ৫৯ মিনিটে জেসে লিনগার্ডের পাস থেকে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন দালে আলি। তবে ম্যাচের সেরা গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচান তিনি।
কোচ গ্যারেথ সাউথগেট
ইংল্যান্ডের সাফল্যের আসল কারণ কিন্তু যুব ফুটবলের উন্নতিতে বাড়তি জোর দেওয়া। ইংল্যান্ডের সব ক্লাবেরই নিজস্ব ফুটবল অ্যাকাডেমি আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার খুঁজে আনা হয়। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপেই তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সাউথগেটও দল গড়ার সময়ে তারুণ্যের উপরেই জোর দিয়েছেন। তার সুফল এখন তিনি পাচ্ছেন। এ বার দরকার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের শাপমুক্তি ।
ছবি: গেটি ইমেজেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy