উল্লাস: স্পেনের প্রথম গোলের পরে ইনিয়েস্তার সঙ্গে ইস্কো।ছবি: রয়টার্স
স্পেন ২ : মরক্কো ২
আন্দ্রে ইনিয়েস্তা অবসর নিলে তাঁর অভাব কে পূরণ করবেন, তা নিয়ে মনে হয় আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না স্পেন ভক্তদের। ফ্রান্সিসকো রোমান সুয়ারেস (ইস্কো)-র মধ্যেই নতুন ইনিয়েস্তা খুঁজে পেলাম! কিন্তু গত পাঁচ বছরেও কার্লোস পুয়োলের অভাব পূরণ করার মতো কেউ উঠে এলেন না স্প্যানিশ ফুটবলে। সোমবার মরক্কোর বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে নাটকীয় ভাবে হার বাঁচিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছলেও স্পেনের রক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ কিন্তু বেড়েই যাচ্ছে।
স্পেন মানেই মুগ্ধ করা তিকি-তাকা। সোমবার মরক্কোর বিরুদ্ধে ফের্নান্দো ইরেরো দলের খেলা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল ইনিয়েস্তা-ইস্কো যুগলবন্দিতে। কেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর আপত্তি সত্ত্বেও রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম দলে ইস্কোকে খেলিয়ে গিয়েছেন জ়িনেদিন জ়িদান, এই বিশ্বকাপেই তার জবাব মিলল। কিন্তু শুধু মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করে কখনও ম্যাচ জেতা যায় না। একটা দলের সাফল্যের নেপথ্যে থাকে রক্ষণ ও আক্রমণ ভাগের অবদানও। স্পেনের রক্ষণের সমস্যা পর্তুগালের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মরক্কোর বিরুদ্ধে জেরার পিকে, সের্খিয়ো র্যামোসদের দেখে তো রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। ১৪ মিনিটে মরক্কোর খালিদ বৌতিয়াবের গোলটার কথা মনে করুন। র্যামোস ও ইনিয়েস্তার ভুল বোঝাবুঝিতে বল পয়ে যান খালিদ। প্রায় ২০ গজ দৌড়ে স্পেনের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন। টিভিতে দেখলাম, হতাশায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ছেন স্পেনের সমর্থকেরা। আমি অবশ্য খুব একটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়িনি। জানতাম, মরক্কো খুব বেশি ক্ষণ ইনিয়েস্তাদের আটকে রাখতে পারবে না। ঠিক সেটাই হয়েছে। ইনিয়েস্তার পাস থেকেই অসাধারণ গোলে সমতা ফেরান ইস্কো। প্রথমার্ধে আরও কয়েকটা গোল করতে পারত স্পেন। হল না দিয়েগো কোস্তার ব্যর্থতায়।
আতলেতিকো দে মাদ্রিদ স্ট্রাইকার প্রথম দু’টো ম্যাচেই গোল করে স্পেনকে জিতিয়েছেন। কিন্তু ওঁকে আমি কখনওই এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের সঙ্গে এক সারিতে রাখতে পারব না। কোস্তা পরিশ্রমী। বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ধাক্কাধাক্কি করে জায়গা তৈরি করতে পারেন। কিন্তু একা ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা কোস্তার নেই। অবশ্য স্পেন কবেই বা স্ট্রাইকারদের উপর নির্ভরে করে ফুটবল খেলেছে! ফুটবল বিশ্বকে চমকে দেওয়া ‘ফল্স নাইন’ ফর্মুলা তো স্পেনেরই আবিষ্কার। কিন্তু তখন স্পেনের রক্ষণে খেলতেন পুয়োলের মতো দুর্ধর্ষ ফুটবলার।
মরক্কো দ্বিতীয় গোলও করল স্পেন-রক্ষণের ব্যর্থতায়। ৮১ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে বিনা বাধায় হেডে গোল করে ফের মরক্কোকে এগিয়ে দেন এল নাসিরি। অবাক হয়ে দেখলাম, র্যামোস, পিকে-রা ওঁকে বাধা দেওয়ার কোনও চেষ্টাই করলেন না। এই গোলটার পরে একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। তা হলে কি মরক্কোর কাছে হেরে মাঠ ছাড়বেন তিকি-তাকার নায়কেরা? আমার উদ্বেগ দূর করলেন পরিবর্ত হিসেবে নামা ইয়াগো আসপাস। দানি কার্ভাহালের পাস ঠান্ডা মাথায় গোলে ঠেললেন। রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে অনবদ্য গোল। যদিও মরক্কোর ফুটবলারেরা দাবি করেছিলেন, অফসাইডে ছিলেন ইয়াগো। রেফারিও প্রথমে গোল দেননি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভার) দেখে নিশ্চিত হন।
স্পেন ভক্তরা অবশ্য আতঙ্কেই থাকবেন। শেষ ষোলোয় প্রতিপক্ষ যে এ বার আয়োজক দেশ রাশিয়া!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy