আদর: খেলা শেষ হওয়ার পরে ছেলের সঙ্গে জাপানের গোলরক্ষক এইজি কাওয়াশিমা। বৃহস্পতিবার ভলগাগ্রাদ এরিনায়। ছবি: এএফপি।
নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে যেন রক্ষা পেলাম! বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপে জাপান বনাম পোলান্ড ম্যাচটা দেখতে বসে মনে হচ্ছিল, যে কোনও মুহূর্তে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হবে। জীবনে এত টেনশন কখনও হয়নি।
বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছতে হলে পোলান্ডের বিরুদ্ধে ড্রকরলেই চলত জাপানের। কিন্তু ৫৯মিনিটে ইয়ান বেদনারেক পোলান্ডকে এগিয়ে দিতেই রক্তচাপ বাড়তে থাকল। কারণ, জাপানের ভাগ্য নির্ভর করছে কলম্বিয়া বনাম সেনেগাল ম্যাচের উপরে। হামেস রদ্রিগেসরা জিততে না-পারলে আমাদের ছিটকে যেতে হবে বিশ্বকাপ থেকে। তাই জাপান বনাম পোলান্ড ম্যাচের চেয়েও আমাদের বেশি আগ্রহ ছিল কলম্বিয়াকে নিয়ে। ওরা কি পারবে সেনেগালকে হারাতে? ঘনঘন টেলিভিশনের চ্যানেল বদলে দেখছিলাম, কলম্বিয়া বনাম সেনেগাল ম্যাচে কী হচ্ছে।
৭৪ মিনিটে ইয়েরি মিনা গোল করে কলম্বিয়াকে এগিয়ে দেওয়ার পরেও উদ্বেগ কিন্তু কমেনি। প্রথমত, আমাদের আর গোল খাওয়া চলবে না। দ্বিতীয়ত, সেনেগাল যেন সমতা ফেরাতে না-পারে। কারণ, ‘এইচ’ গ্রুপের অঙ্কটা বেশ জটিল ছিল। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে আমরাই ছিলাম শীর্ষে। সমসংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সেনেগাল। তিনে কলম্বিয়া। সমস্যাটা অন্য জায়গায়। জাপান ও সেনেগাল দু’দলই দুই ম্যাচে করেছিল চারটি করে গোল। খেয়েছেও চারটি করে গোল। পয়েন্ট সমান, গোল পার্থক্যেও দু’দল এক জায়গায়। তাই জেতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, রবার্ট লেয়নডস্কিদের গোল করতে না-দেওয়া। জাপান এগিয়ে ছিল ‘ফেয়ার প্লে’-তে। গ্রুপ পর্বে চারটি হলুদ কার্ড দেখেছে জাপানের ফুটবলারেরা। কেউ লাল কার্ড দেখেননি। সেনেগাল হলুদ কার্ড দেখেছে ছ’টি। তাই হেরেও কম হলুদ কার্ড দেখার পুরস্কার হিসেবে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেলাম!
আরও পড়ুন: প্রত্যাশার চাপ নিতে তৈরি ব্রাজিল: তিতে
কলম্বিয়াকে হারিয়ে দুর্দান্ত ভাবে বিশ্বকাপে অভিযান শুরু করেছিলাম আমরা। দ্বিতীয় ম্যাচে সেনেগালের বিরুদ্ধে ড্র করি। এই ম্যাচের আগে অনেকেই মনে করেছিল, পোলান্ডকে হারানো কঠিন নয়। আমি বলেছিলাম, পোলান্ড বিশ্বকাপ থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে। ওদের হারানোর কিছু নেই। শেষ ম্যাচে প্রমাণ করতে মরিয়া থাকবেন লেয়নডস্কিরা। ৩-৪-৩ ছকে প্রথম থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলে পোলান্ড। আমাদের গোলরক্ষক এইজি কাওয়াশিমার জন্য প্রথমার্ধে গোল করতে পারেননি লেয়নডস্কিরা। দ্বিতীয়ার্ধেও দুর্ধর্ষ খেলেছেন। তবে বেদনারেকের গোলের ক্ষেত্রে ওঁর কিছু করার ছিল না। চব্বিশ ঘণ্টা আগে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে ছিটকে গিয়েছে প্রতিযোগিতা থেকে। এ বার ঐতিহাসিক ভাবে জাপান পৌঁছল শেষ ষোলোয়। এশিয়ার দেশগুলো কিন্তু খুব একটা পিছিয়ে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy