Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্বপ্ন ছুঁয়ে কান্না অকুতোভয় ওসাকোদের

সোমবার সকালেই ভূকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপানের ওসাকা। মৃত্যু হয়েছিল নয় জনের। সে জন্যই এ দিন ম্যাচের আগে শিওজি, কাগাওয়ারা ছিলেন বেশ চাপে। আতঙ্কেও। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে অসাধারণ জয়।

হুঙ্কার: বিশ্বকাপে কলম্বিয়াকে ২-১ হারিয়ে জাপানি ফুটবলারদের উল্লাস। মঙ্গলবার। ছবি: গেটি ইমেজেস

হুঙ্কার: বিশ্বকাপে কলম্বিয়াকে ২-১ হারিয়ে জাপানি ফুটবলারদের উল্লাস। মঙ্গলবার। ছবি: গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৮ ০৫:০০
Share: Save:

খেলা শেষ হওয়ার পরে জাপান ফুটবলারদের কেউ কাঁদছিলেন, কেউ দাঁড়িয়েছিলেন চুপচাপ। সামান্য উচ্ছ্বাস দেখিয়েই থেমে গিয়েছেন ইউইয়া ওসাকোরা। কারণ তাদের মন মঙ্গলবার ম্যাচের পরও পড়েছিল দেশে।

সোমবার সকালেই ভূকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপানের ওসাকা। মৃত্যু হয়েছিল নয় জনের। সে জন্যই এ দিন ম্যাচের আগে শিওজি, কাগাওয়ারা ছিলেন বেশ চাপে। আতঙ্কেও। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে অসাধারণ জয়। তাতে অবশ্য জাপান কোচ আকিরি নিশিনো উচ্ছ্বাসে ভাসতে রাজি নন। বললেন, ‘‘একটা ম্যাচ জিতেছি। তিন পয়েন্ট পেয়েছি। আনন্দটা আমরা পরের ম্যাচগুলোর জন্য তুলে রাখতে চাই। শেষ ষোলোয় যাওয়াটা লক্ষ্য আমাদের।’’

বিশ্বকাপের ৭১ দিন আগে কোচ ভাহিদা হালিহোদজিচকে বরখাস্ত করে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নিশিনোকে দায়িত্ব দেন জাপান কর্তারা। সেই নিশিনো ম্যাচের পর বলছিলেন, ‘‘ফুটবলারদের বিরতিতে বলেছিলাম বল পায়ে রেখে খেলতে। প্রচুর পাস খেলতে। তাতেই কলম্বিয়া হতাশ হয়ে পড়বে। সেটাই হয়েছে।’’

এশিয়ার প্রথম দল হিসাবে দক্ষিণ আমেরিকার কোনও দলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচ জিতে ইতিহাস তৈরি করেছে জাপান। যাঁর গোলে জয় সেই ওসাকো অবশ্য কোচের মতোই চুপচাপ। চোখে জল নিয়েও জয়ের নায়ক বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে যে স্বপ্নটা দেখতাম সেটা সার্থক হয়েছে। বিশ্বকাপে গোল করে দেশকে জেতানো তাও আবার কলম্বিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে, এর চেয়ে আনন্দের ঘটনা জীবনে কিছু হতে পারে না।’’

অপ্রত্যাশিত হেরে কলম্বিয়ার হামেস রদরিগেস, রাদামেল ফালকাওরা যখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছেন, তখন গ্যালারি ভর্তি করে আসা তাদের সমর্থকদের চোখে জল। শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই লালকার্ড দেখে তাদের এক ফুটবলার বেরিয়ে যাওয়ার পরও হামেসরা সমতায় ফিরিয়ে এনেছিলেন দলকে। তখনও কলম্বিয়ার রঙিন সমর্থকদের মনে হয়েছিল দশ জন হয়ে গেলেও ম্যাচ জিতবেন তারা। গ্যালারিতে নাচ, গান চলছিল সেজন্যই। তা অবশ্য জাপানের ওসাকোর গোলের পরই বদলে যায়।

উৎসব: গ্যালারিতে উচ্ছ্বসিত জাপানের সমর্থকেরা। ছবি: গেটি ইমেজেস

সমর্থকরা যাই ভাবুন, কিন্তু তাদের আর্জেন্টিনীয় কোচ হোসে পেকারম্যান ধরেই নিয়েছিলেন ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। হেরে যাওয়ার পরে তিনি বলে দেন, ‘‘বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে কোনও ম্যাচের শুরুতেই এক জন ফুটবলার কমে গেলে জেতা কঠিন হয়ে যায়। তবুও আমরা ম্যাচে ফিরেছিলাম। কিন্তু ছেলেরা শেষ রক্ষা করতে পারেনি। পরের ম্যাচে জেতার চেষ্টা করতে হবে। না হলে শেষ শোলোয় যাওয়া কঠিন।’’

আর্জেন্টিনায় পেকারম্যানকে ‘চাণক্য’ কোচ বলা হয়। এ দিন তাঁর কোনও চালই কাজে লাগেনি। অকুতোভয় হয়ে খেলে গিয়েছেন জাপানের ফুটবলাররা। ব্রাজিলে গত বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল জাপান। সেই হারের প্রতিশোধ নিতে পেরে তাই খুশি কাগাওয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE