Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জার্মানির নয়া অস্ত্র ‘ভিডিয়ো ককপিট’

বিশ্বকাপের আগে ইতালির শহরতলী ইপ্পানে প্রস্তুতি শিবির করেছিলেন মানুয়েল নয়্যাররা। তার আগেই বিশ্বকাপগামী জার্মান শিবিরে এই নয়া প্রযুক্তি তুলে দিয়েছিল তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা এসএপি (স্যাপ)।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৫:১১
Share: Save:

ওয়াকিম লোর মগজাস্ত্র রয়েছেই। জেহোম বোয়াটেং, মানুয়েল নয়্যার, থোমাস মুলারদের জয়ের জন্য মরিয়া মনোভাবও তুঙ্গে। এর সঙ্গে জার্মান শিবিরের গোপন তাস বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার। যা বিপক্ষ সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য আগাম দিচ্ছেন লো-র শিবিরে।

চার বছর আগে ব্রাজিলে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময়ও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল জার্মানরা। এ বার তার আরও আধুনিক সংস্করণ হাতে হাতে ঘুরছে জার্মান কোচ ও ফুটবলারদের হাতে।

বিশ্বকাপের আগে ইতালির শহরতলী ইপ্পানে প্রস্তুতি শিবির করেছিলেন মানুয়েল নয়্যাররা। তার আগেই বিশ্বকাপগামী জার্মান শিবিরে এই নয়া প্রযুক্তি তুলে দিয়েছিল তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা এসএপি (স্যাপ)। সেখানে দেখা গিয়েছে, নিজেদের ও বিপক্ষের সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়ার জন্য সহকারী কোচদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছেন মুলার, মার্কো রয়েস-সহ জার্মানির বাকি ফুটবলাররা।

অস্ট্রিয়ার কাছে প্রস্তুতি ম্যাচে জার্মানি হেরেছিল ১-২। সেই হারের পরে দলের স্কাউট ক্রিস্টোফার ক্লেমেন্সের কাছে একের পর এক মোবাইল বার্তা আসে, দ্রুত ম্যাচের বিশ্লেষণ খেলোয়াড়দের কাছে পাঠানোর জন্য।

নয়া এই প্রযুক্তির পিছনে রয়েছেন যে মানুষটি তাঁর নাম স্যেন শেরিন-ওয়েনজেল। জার্মানির ক্রীড়াজগতেও তিনি প্রসিদ্ধ ক্রীড়াক্ষেত্রে নয়া প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে কোচ এবং খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করার জন্য। তাঁর সংস্থা স্যাপ-এর সঙ্গেই কাজ করে জার্মান ফুটবল ফেডারেশন। পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে মার্কিন মুলুকের সিলিকন ভ্যালিতে ওয়েনজেল উড়ে গিয়েছিলেন ফুটবলে বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার কী ভাবে হবে তা শিখতে। যার সুফল জার্মানি পেয়েছিল সাত মাস পরেই ব্রাজিল থেকে বিশ্বকাপ জিতে। চার বছর আগে বিশ্বকাপের সময়ও মেসুট ওজিলদের হাতে হাতে ঘুরত এই প্রযুক্তি। যা থেকে তাঁরা ম্যাচের আগে জেনে নিতে পারতেন বিপক্ষের যাবতীয় দুর্বলতা। একই সঙ্গে নিজেদের ভুলত্রুটিও সারিয়ে নিতে পারতেন সফট্ওয়ারের ব্যবহারে। একই সঙ্গে এই প্রযুক্তি জার্মান ফুটবলার ও কোচকে হাতে তুলে দিত বিপক্ষ কোচের যাবতীয় স্ট্র্যাটেজি, ট্যাকটিক্স। যা ব্রাজিল থেকে বিশ্বকাপ আনতে জার্মান দলকে দারুণ সাহায্য করেছিল বলে মনে করেন দলের সদস্য ফিলিপ লাম।

ব্রাজিল বিশ্বকাপের পরে ক্লাব ও জাতীয় ফুটবল সংস্থা মিলিয়ে ১২ টি দেশের ৩৯ টি ফুটবল সংস্থা স্যাপের থেকে এই প্রযুক্তি কিনেছে। তার পরেই জার্মান ফুটবল ফেডারেশন জাতীয় দলের কাছ থেকে মতামত জেনে এই প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণ ওয়াকিম লো-র দলের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন। যে সম্পর্কে ওয়েনজেল বলছেন, ‘‘পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ এবং সঠিক প্রস্তুতির জন্যই বিশেষ ভাবে তৈরি হয়েছে এই প্রযুক্তি।’’

এই নয়া প্রযুক্তিতে কী সুবিধা পাচ্ছেন নয়্যাররা?

রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে জার্মান কোচ ও ফুটবলারদের কম্পিউটারে লোড করে দেওয়া হয়েছে ‘ভিডিও ককপিট’ নামে এক বিশেষ সফট্ওয়ার। যেখানে ক্রিস্টোফার ক্লেমেন্স-সহ দলের বাকি স্কাউটরা বিপক্ষের অনুশীলন ও প্রস্তুতি ম্যাচের গোপন ভিডিও ফুটেজ প্রতিনিয়ত যোগ করে চলেছেন। সঙ্গে থাকছে তার পরিসংখ্যান ও তথ্য সহযোগে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ। তার পরে জার্মানির প্রতি বিভাগের নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের কাছে চলে যাচ্ছে বিশদ নির্দেশ। যেখানে থাকছে, ম্যাচে কী বাঁধা আসতে পারে। আর তা কী ভাবে অতিক্রম করতে হবে। ক্লেমেন্স বলছেন, ‘‘সব দলের যাবতীয় তথ্য, ফুটেজ দেখা বিশ্লেষণ করে তা ‘আপলোড’-এর কাজ আমাদের। সঙ্গে প্রত্যেককে আলাদা আলাদা করে সব নির্দেশ, বিশ্লেষণ পাঠাতেও হচ্ছে। যাতে ম্যাচের আগে সব প্রতিকূলতার বা বিপক্ষের কোন দুর্বল জায়গায় আঘাত হানতে হবে, সে ব্যাপারে আগাম তথ্য হাতের মুঠোয় থাকে ছেলেদের।’’

:আজ বিশ্বকাপে:

ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া (বিকেল ৩.৩০),

আর্জেন্টিনা বনাম আইসল্যান্ড (সন্ধে ৬.৩০),

পেরু বনাম ডেনমার্ক (রাত ৯.৩০),

ক্রোয়েশিয়া বনাম নাইজেরিয়া (রাত ১২.৩০)।

সব ম্যাচই সরাসরি, সোনি টেন টু, সোনি টেন থ্রি চ্যানেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE