Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মেসির বিদায়ের দিনে নায়ক এমবাপের উদয়

লিয়োনেল মেসির বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়ে এমবাপে ছুঁয়ে ফেললেন আর এক কিংবদন্তি পেলেকে।

বিশ্বকাপে এক নতুন তারকার উত্থান। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে গোল করে কিলিয়ান এমবাপের উল্লাস। ছবি: গেটি ইমেজেস।

বিশ্বকাপে এক নতুন তারকার উত্থান। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে গোল করে কিলিয়ান এমবাপের উল্লাস। ছবি: গেটি ইমেজেস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০৬:১৮
Share: Save:

জ়িনেদিন জ়িদান, থিয়েরি অঁরিদের বিশ্বকাপ জয় দেখা হয়নি তাঁর। কী করে দেখবেন? তাঁর দেশ ফুটবল বিশ্বসেরা হওয়ার ছ’মাস পরে যে জন্ম কিলিয়ান এমবাপের। ১৯ বছর বয়সি সেই তরুণের জোড়া গোলে শনিবার বিশ্বকাপের শেষ আটে ফ্রান্স। ছিটকে গেল আর্জেন্টিনা।

লিয়োনেল মেসির বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়ে এমবাপে ছুঁয়ে ফেললেন আর এক কিংবদন্তি পেলেকে। ফুটবল সম্রাটের পরে তিনিই দ্বিতীয় ফুটবলার, যাঁর বয়স কুড়ি হওয়ার আগেই বিশ্বকাপের নক-আউটে জোড়া গোল করলেন।

শনিবার কাজান এরিনায় সাংবাদিক বৈঠকে পেলেকে ছোঁয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই কিছুটা লজ্জা পেয়েই এমবাপে বলেন, ‘‘অবশ্যই আমি খুশি পেলের মতো কিংবদন্তিকে ছুঁতে পেরে। তবে বাস্তবটা হল, পেলে অন্য স্তরের ফুটবলার। ওঁর পাশে নিজেকে রাখতে পারাটাই সেরা প্রাপ্তি।’’

তিন বছর আগেই হাইস্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছেন যিনি, তাঁর কাছে এই সম্মান জীবনের সেরা হতেই পারে। তবে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগটা কাজে লাগাতে পেরে আরও খুশি এমবাপে। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বকাপে দুনিয়ার সেরা ফুটবলাররা খেলে। এখানেই নিজেকে প্রমাণ করার সব চেয়ে বড় সুযোগ। ফুটবলার হিসেবে আমি কী করতে পারি, আমার কী ক্ষমতা, তা প্রমাণ করার এটাই সব চেয়ে ভাল জায়গা। এমন একটা জায়গায় নিজেকে প্রমাণ করতে পেরে তাই আমি খুবই খুশি।’’

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বড় ভক্ত এমবাপের বাড়ির দেওয়ালে ভর্তি পর্তুগিজ তারকার পোস্টার। ব্রাজিলের তারকা নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর সঙ্গে প্যারিস সাঁ জারমাঁয় খেলেন। এই দুই তারকার প্রভাবই যে তাঁর ফুটবলে বেশি, তা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। বিশ্বকাপের আগে বলেছিলেন, ‘‘রোনাল্ডোকে বরাবরই আমি খুব পছন্দ করি। ওর আগ্রাসন আমার পছন্দ। আর এখন নেমারের কাছ থেকে যা শিখছি, সেগুলো খেলায় মেশানোর চেষ্টা করি। এতে অনেক উন্নতি করেছি।’’

ফুটবলের বাইরেও তাঁর অন্য একটা জীবনও আছে। সমাজসেবায় নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চান এমবাপে। প্যারিসের একটি সমাজসেবী সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপে প্রতি ম্যাচ থেকে ২০ হাজার ইউরো দান করে দেবেন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের সাহায্যে।

এক বছর আগে মোনাকো ছেড়ে পিএসজি-তে আসায় নেমারের পরে তিনিই হয়ে ওঠেন বিশ্বের সব চেয়ে দামী ফুটবলার। তাঁর আদর্শ রোনাল্ডোর ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ তাঁকে নেওয়ার জন্য ঝাঁপালেও পিএসজি ছাড়তে রাজি হননি। আপাতত দেশের বাইরে গিয়ে খেলতে নারাজ। এমবাপে বলেছিলেন, ‘‘পিএসজি-র হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম ছোট বেলা থেকে। সেই ক্লাবের জার্সি পরার সুযোগ যখন পেয়েছি, তখন তা ছাড়তে চাই না।’’ তবে ফ্রান্সের হয়ে খেলাটা তাঁর কাছে আরও বড় ব্যাপার। এমবাপে বলেছেন, ‘‘দেশের জার্সি পরা আমার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারলে সেটা হবে জীবনের সেরা প্রাপ্তি।’’ স্বপ্নপূরণের দিকেই তাকিয়ে জ়িনেদিন জ়িদানের উত্তরসূরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE