Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সব কিছুর ঊর্ধ্বে এই জার্সি, বললেন লিয়ো

মঙ্গলবার গভীর রাতে সারা পৃথিবীকে আশ্বস্ত করে বিশ্বকাপে অক্ষত রইলেন লিয়োনেল মেসি। প্রবল উত্তেজনার ম্যাচে নাইজিরিয়াকে ২-১ হারাল আর্জেন্টিনা।

জয়োচ্ছ্বাস: মার্কোস রোহোর গোলে নক আউটের রাস্তা খুলল আর্জেন্টিনার। গোলের পরে তাঁর কাঁধে লিয়োনেল মেসি। মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গে। ছবি: গেটি ইমেজেস

জয়োচ্ছ্বাস: মার্কোস রোহোর গোলে নক আউটের রাস্তা খুলল আর্জেন্টিনার। গোলের পরে তাঁর কাঁধে লিয়োনেল মেসি। মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গে। ছবি: গেটি ইমেজেস

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০৪:২৩
Share: Save:

তিনি এলেন, দেখলেন, জয় করে গেলেন। আবারও।

মঙ্গলবার গভীর রাতে সারা পৃথিবীকে আশ্বস্ত করে বিশ্বকাপে অক্ষত রইলেন লিয়োনেল মেসি। প্রবল উত্তেজনার ম্যাচে নাইজিরিয়াকে ২-১ হারাল আর্জেন্টিনা। মেসি গোল করে তাঁর দেশকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই হাঁটু মুড়ে বসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়ার ছবিকে ছাপিয়ে তৈরি হল আরও একটি দৃশ্য। যখন মহানায়ক উঠে পড়লেন নতুন নায়কের ঘাড়ে। কে সেই নতুন নায়ক?

শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে ১-১ থাকা অবস্থায় যিনি দ্বিতীয় গোলটি করলেন, সেই মার্কোস রোহো। অসাধারণ সাইড ভলিতে চলন্ত বলেই দুর্ধর্ষ গোল। তার পরেই দেখা গেল মেসি এসে লাফিয়ে উঠে পড়লেন রোহোর ঘাড়ে। একে একে এর পর ঝাঁপিয়ে পড়লেন দলের সকলে।

নক-আউটের টিকিট অর্জন করে রোহোর মুখেও সেই মেসিরই কথা। বললেন, ‘‘লিয়ো আমাদের বলেছিল, ও মাঠে নেমে গোল করবেই। ও কথা রেখেছে। আমাদের ওকে দরকার। এ বার আমাদের আসল বিশ্বকাপ শুরু হল।’’ আর ওই অবিশ্বাস্য গোলটি? যা দেখার পর পুরো গ্যালারিতে যেন বিস্ফোরণ ঘটল। আর্জেন্টিনীয় সমর্থকেরা কেঁদে ফেললেন। খুলে ফেললেন জামাকাপড়। একটি বাচ্চাকে দেখা গেল কাঁদছে। সান্ত্বনা দেবে কে? তার বাবা-মাও তখন অঝোরে কেঁদে চলেছেন। খুশির কান্না দেখা গেল গ্যালারির সর্বত্র। ভিআইপি বক্সে তিনি, দিয়েগো মারাদোনা— তাঁর চোখেও জল! রোহোকে গোল নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই গোলটা আমার পরিবার এবং আমাদের দলকেই উৎসর্গ করছি। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা।’’

রোহো শেষ মুহূর্তের নায়ক। আর আর্জেন্টিনার যিনি সেরা তারকা, যাঁর দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব, সেই মেসি বললেন, ‘‘আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসটা ছিল। জিততেই নেমেছিলাম মাঠে। আর এ ভাবে জিততে পেরে আনন্দটা একটু বেশিই হচ্ছে।’’ তার পরেই যোগ করছেনষ ‘‘জানতাম, ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন। আর উনি আমাদের বিশ্বকাপ থেকে বিতাড়িত করে দেবেন না।’’ এখানেই না থেমে উত্তেজিত মেসি বলে চলেন, ‘‘আমি প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় দলের জার্সি সব কিছুর ঊর্দ্ধে।’’

ত্রাতা: শেষ মুহূর্তে রোহোর গোলে বাজিমাত আর্জেন্টিনার। ছবি: গেটি ইমেজেস

শুধু আর্জেন্টিনীয়রাই নন, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ দেখে উত্তাল গোটা ফুটবল বিশ্বই। লিয়ো মেসির পাশাপাশি রোহোর দুরন্ত গোলের প্রশংসা সকলের মুখে। দিদিয়ের দ্রোগবা বলেছেন, ‘‘রোহো যে গোলটা করল, অবিশ্বাস্য! এ রকম মাথা ঠান্ডা রেখে গোল করা খুব কঠিন। নিশ্চয়ই এ রকম শট নেওয়ার প্র্যাকটিস ও অনেক করেছে।’’ রিয়ো ফার্ডিনান্ড বলেন, ‘‘মেসির এ রকম গোল দেখার জন্যই তো আমরা বিশ্বকাপটা দেখছি। সেই দৌড়, দু’টো-তিনটে টাচে অবিশ্বাস্য ফিনিশ। সত্যিই ভাবা যায় না। বিশ্বকাপে মেসিকে দরকার।’’

মঙ্গলবার রাতে কে না গলা মেলাবে ফার্ডিনান্ডের সঙ্গে! কে না বলবে, বিশ্বকাপে মেসিকে দরকার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE