মাতোয়ারা: তৃতীয় গোলের পরে রাশিয়ার ফুটবলাররা। ছবি:এএফপি
রাশিয়া ৩ : মিশর ১
গত মরসুমে লিভারপুলের জার্সি গায়ে ৫২ ম্যাচে ৫৮ গোল করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মহম্মদ সালাহ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে চোট পাওয়ার জেরে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। উরুগুয়ের কাছে হেরে গিয়েছিল তাঁর দেশ মিশরও।
মঙ্গলবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে মিশরীয় ফুটবলের এই তারকা খেললেন। তাঁকে দেখতেই স্টেডিয়ামে ভিড় জমিয়েছিলেন মিশরের সমর্থকরা। ম্যাচ শুরুর আগে তাঁদের একটা পোস্টার ধরা পড়ল টিভি ক্যামেরায়। যেখানে লেখা দেখলাম, ‘সালাহ আজ মাঠে ফিরছে। রুশদের রাতটা আজ অন্ধকারে ডুবে যাবে।’
কিন্তু নব্বই মিনিটের লড়াইয়ে হল ঠিক তার উল্টো। রাশিয়ার কাছে ১-৩ হেরে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নিল সালাহর মিশর। মো সালাহ বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম গোলটি পেনাল্টি থেকে করলেন বটে। কিন্তু সালাহর জন্য তৈরি মঞ্চে দাপট দেখিয়ে গেলেন চেরিশেভ। একটি গোল করলেন। দাপিয়ে খেললেন ম্যাচটা। দুই ম্যাচ মিলিয়ে তিন গোল হয়ে গেল এই রুশ ফরোয়ার্ডের। যার ফলে গোলসংখ্যায় ধরে ফেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকেও। রাশিয়াও পর পর দুই ম্যাচ জেতার সঙ্গে আট গোল করে এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে চলে গেল প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে।
দুই দল মিলিয়ে গোল করল চারটি। একাধিক গোল দেখে আনন্দ হলেও ম্যাচ শেষে সালাহর করুণ মুখটা দেখে খারাপই লাগছিল। ওঁর গতি আছে। বল কন্ট্রোল এবং প্রথম ‘টাচ’ ভাল। সঙ্গে ড্রিবলটাও একটা শক্তি। দলের ফুটবলারের সঙ্গে চকিতে পাস খেলে পৌঁছে যেতে পারেন বিপক্ষ বক্সে। তা ছাড়া দুই পা সচল থাকায় ডান দিক থেকে কাট করে দ্রুত ভিতরে ঢুকে আসে ড্রিবল করতে করতে। কিন্তু এ দিন সালাহকে দেখে মনে হল ওঁ এখনও পুরোপুরি ম্যাচ-ফিট হয়নি। তাই ডানদিকে ঘুরছিলেন না। ফলে আউটসাইড, ইনসাইড করে ড্রিবল করতে করতে ওঁর সেই ডিফেন্ডারদের হারানোটা চোখে পড়ছিল না।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মিশরের আহমেদ ফাতিহ আত্মঘাতী গোল করায় হেক্টর কুপারের দলের আত্মবিশ্বাসটা আরও ধাক্কা খেয়েছিল। আর এই সুযোগটাই নিল রাশিয়া। কারণ রুশরা জানতেন, এই ম্যাচ ড্র করলেই চলবে। তাই ওঁদের লক্ষ্য ছিল, গোল না খাওয়া। বিপক্ষের ছন্দ একটু ধাক্কা খেলে পাল্টা আক্রমণে যাওয়া। ঠিক সেভাবেই মারিয়ো ফার্নান্দেজের সঙ্গে যুগলবন্দিতে দিনিস চেরিশেভের গোল। তাঁর কিছু পরেই আর্তেম জিউবার দলের হয়ে তৃতীয় গোল।
ছিয়াশির বিশ্বকাপে বেলানভ, ব্লোখিনরা রাশিয়ার হয়ে দুর্দান্ত খেলেছিলেন। এ বার চেরিশেভদের খেলায় রুশদের সেই আক্রমণাত্মক ভাবটা চোখে পড়ছে। মেসি, নেমাররা যখন গোল করতে পারছেন না। তখন রাশিয়া দুই ম্যাচে ৮ গোল করে ফেলল। কাজেই নকআউটে এই রাশিয়ার থেকে আরও ভাল ফুটবল দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy