Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘সাহস ও ক্ষিপ্রতায় নজর কেড়েছেন আকিনফেভ’

এ বারের বিশ্বকাপে নয়্যার, দাভিদ দে হিয়া, ওচোয়ারা বিদায় নিয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে রয়ে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত গোলকিপার।

দুর্ভেদ্য: এই ভাবেই স্পেনকে আটকে দেন আকিনফেভ। ফাইল চিত্র

দুর্ভেদ্য: এই ভাবেই স্পেনকে আটকে দেন আকিনফেভ। ফাইল চিত্র

তরুণ বসু
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫২
Share: Save:

প্রতি বছর বিশ্বকাপ এলেই খুঁজতে থাকি নতুন কোন গোলকিপার উঠে আসছেন। আশির দশকের আগে পর্যন্ত টিভিতে সরাসরি বিশ্বকাপ দেখার সুযোগ ছিল না। তার আগে গোলকিপার হিসেবে পড়তাম রাশিয়ায় কিংবদন্তি লেভ ইয়াশিন, ইংল্যান্ডের গর্ডন ব্যাঙ্কসের কথা। তবে প্রচারমাধ্যম সে ভাবে ইয়াশিন বা ব্যাঙ্কস ছাড়া আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেনি অন্য গোলকিপারদের।

বিরাশির বিশ্বকাপ থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। ফুটবলটা ওই বিশ্বকাপ থেকেই অনেক অঙ্ক নির্ভর হয়ে ওঠে। সেখান থেকেই প্রচারমাধ্যমের আলোয় আসা শুরু গোলকিপারদের। বিরাশির বিশ্বকাপেই নজর কেড়েছিলেন ইতালির বিশ্বজয়ী অধিনায়ক দিনো জফ, জার্মানির হ্যারল্ড টনি শুমাখার আর আর্জেন্টিনার নেরি পুম্পিদো। ছিয়াশি থেকেই বিশ্ব ফুটবল শুনে আসছে জোয়েল বাতস, জাঁ মেরি পাফ, গায়কোচিয়া, রিনাত দাসায়েভ, ক্লদিয়ো তাফারেল, পিটার স্কেমিশেল, জুবিজারেতা, জানলুইজি বুফন, অলিভার কান, ইকের কাসিয়াস, ম্যানুয়েল নয়্যারদের নাম।

এ বারের বিশ্বকাপে নয়্যার, দাভিদ দে হিয়া, ওচোয়ারা বিদায় নিয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে রয়ে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত গোলকিপার। এরা হলেন, ব্রাজিলের অ্যালিসন বেকার, বেলজিয়ামের থিবো কুর্তোয়া, রাশিয়ার ইগর আকিনফেভ, ফ্রান্সের হুগো লরিস, ক্রোয়েশিয়ার ড্যানিয়েল সুবাসিচ।

এদের মধ্যে আমার বাজি রাশিয়ার ইগর আকিনফেভ। ছেলেটার উচ্চতা ভাল। তেমনই বিড়ালের মতো ক্ষিপ্র। রিফ্লেক্সটা অসাধারণ। স্পেনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে যে ভাবে একা কুম্ভ হয়ে রুশদের গোলে প্রাচীর তুলে দিয়েছিলেন, তা মুগ্ধ করার মতোই। ওই ম্যাচেই টাইব্রেকারে স্পেনের ইয়াগো আসপাসের পেনাল্টি যে ভাবে বাঁ পা দিয়ে বাঁচালেন, তাতে বোঝা যায়, রুশ গোলকিপার বল থেকে কখনও চোখ সরান না। পেনাল্টি বাঁচানো বাদ দিলে, দুই প্রান্ত থেকে শূন্যে ভেসে আসা বলও দুর্দান্ত অনুমানক্ষমতায় তালুবন্দি করেন।

আরও পড়ুন: দেশঁর কাছে তিনটি ম্যাচই এখন ফাইনালের মতো

রুশ গোলকিপারের কাছাকাছি থাকবেন থিবো কুর্তোয়া। বিশ্বের অন্যতম এই সেরা গোলকিপার রাশিয়ায় এখনও সে ভাবে দুর্দান্ত কিছু খেলেননি। তবে নকআউটে চমক দেখাতেই পারেন। ঠান্ডা মাথা। গ্রুপ লিগের খেলায় বেশ কয়েক বার দেখলাম গোললাইনে কোন জায়গায় দাঁড়ালে বিপক্ষ ফরোয়ার্ডের সমস্যা হবে, সেই জ্ঞান কুর্তোয়ার দারুণ। রিফ্লেক্স এবং সাহসটাও বেশ।

ফ্রান্সের হুগো লরিসও দুর্দান্ত। যেমন রিফ্লেক্স, তেমনই অনুমানক্ষমতা। একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে চকিতে গোলের কোণ ছোট করে দিয়ে বিপক্ষের গোলের আশা নষ্ট করতে পারেন। নক-আউটে এই তিনজনই নজরে থাকবেন।

ব্রাজিলের অ্যালিসন বেকার ভাল গোলরক্ষক। কিন্তু এই বিশ্বকাপে এখনও সে ভাবে পরীক্ষিত নন। ওর অনুমানক্ষমতাও খুব একটা ভাল নয়। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে শূন্যের বলে সমস্যায় পড়েছে বেশ কয়েকবার।

বরং এই জায়গায় আমার মন কেড়েছেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ড্যানিয়েল সুবাসিচ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সাহস ও রিফ্লেক্স নিয়ে খেলতে দেখলাম ওকে। ইংল্যান্ডের জর্ডান পিকফোর্ডের উচ্চতা ভাল। রিফ্লেক্স ঠিকঠাক। কিন্তু ওর ‘অ্যান্টিসিপেশন’টা ভাল লাগেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE