আটানব্বইয়ের ফ্রান্স বিশ্বকাপে অ্যালান শিয়ারারকে এগারো বার ফাউল করেছিলেন তিউনিশিয়ার ডিফেন্ডাররা। রবিবার নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর ক্ষেত্রে সেই রেকর্ড প্রায় ভেঙে যাচ্ছিল সুইৎজারল্যান্ড তাঁকে মোট দশ বার ফাউল করায়!
নেমার যা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলে ফেলেছেন, ‘‘এটা আমার হাতে নেই। এ সব দেখতে মাঠে তিন জন পেশাদার কাজ করে।’’ অবশ্যই তাঁর ইঙ্গিত রেফারি, লাইন্সম্যানদের দিকে। ব্রাজিলের সেরা তারকা যোগ করেছেন, ‘‘আমার কাজ ফুটবল খেলা। এ সব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। এটা যাদের কাজ, তাদের দেখা কর্তব্য।’’ যদিও তর্ক-পাল্টা তর্ক চলছে এ নিয়ে, সুইৎজারল্যান্ডের ফুটবলাররা আবার বলেছেন, নেমার ইচ্ছা করে অনেক বার নিজে পড়ে গিয়েছেন। তাঁকে অতিরিক্ত আক্রমণ করা হয়েছে, এই দাবি খুবই হাস্যকর।
এ দিকে, ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার জানিয়েছেন, নেমারকে এত বার ফাউল করা হলেও তিনি নতুন কোনও চোট পাননি বা পুরনো চোটের জায়গাতেও ফের আঘাত পাননি। ‘‘এখন আর কোনও চিকিৎসা বা পরীক্ষার দরকার নেই। পরের ম্যাচে একশো শতাংশ সুস্থ নেমারই খেলবে,’’ বলছেন রদ্রিগো। সোমবার ব্রাজিল দলের অনুশীলনের সুর হাল্কা রাখতে ফুটবলাররা তাঁদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে মাঠে সময় কাটান। ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের টুইটারে তার ভিডিয়োও দেওয়া হয়। সেখানে থিয়াগো সিলভাদের দেখা যায় চুটিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে মজা করছেন।
এমনিতে ব্রাজিলের লোকেরা কিন্তু নেমারের খেলায় খুশি নন। বিশেষ করে সাম্বার দেশের কাগজগুলোয় বেশ সমালোচিতই হচ্ছেন তিনি। যেখানে তিনি এত দিন ক্লাব ফুটবল খেলতেন সেই স্পেনের সংবাদমাধ্যমেও তাঁকে নিয়ে নানা প্রশ্ন। খেলার সংবাদপত্র মার্সায় লেখা হয়েছে, নেমার স্বার্থপরের মতো খেলেছেন। তাঁর পাশে ফিলিপে কুটিনহো, জেসুস, উইলিয়ানরা থাকলেও সব সময় একা গোল করে নায়ক হওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি, জার্মানির প্রাক্তন তারকা মিশায়েল বালাকও একই কথা বলেছেন। কারও কারও মন্তব্য, কোচ তিতের উচিত নেমারকে না খেলিয়ে ডগলাস কোস্তাকে নামানো!
তিতে নিজে নেমার সংক্রান্ত আলোচনা থেকে দূরে থেকেছেন। তবে ব্রাজিলের ফুটবলারদের খেলার সমালোচনা করতেও ছাড়েননি, ‘‘আমরা গোল করার আগে প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। শুধু তো চাপ নয়। ছিল উদ্বেগও। সেটা ছেলেদের খেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।’’
রাখ-ঢাক না করে ব্রাজিল কোচ আরও বলে দিয়েছেন, দলের খেলায় তিনি সন্তুষ্ট নন। ‘‘অবশ্যই ভেবেছিলাম জিতব। তাই এই ফলাফলে আমি খুশি নই,’’ মন্তব্য করেছেন তিতে। ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘বিশ্বকাপের এই পর্যায়ে এসে এগিয়ে যাওয়ার সুবিধেটা নিতেই হবে। যখন দেখছি প্রতিপক্ষ দল গোল শোধ করার জন্য চাপ বাড়াচ্ছে, তখন তো নিজেদেরও সুসংগঠিত করে তুলতে হবে!’’
তিতে রেফারির কোনও সমালোচনার রাস্তাতেই হাঁটতে চান না। বলা হচ্ছে, রেফারি ব্রাজিলকে একটা ন্যায্য পেনাল্টি দেননি। তা ছাড়াও বার বার সুইস ফুটবলাররা ফাউল করে ব্রাজিলীয়দের আটকে দিয়েছেন। বিশেষ করে নেমারকে। সুইৎজারল্যান্ডের গোলটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তিতে এই ধরনের আলোচনা এড়িয়ে গিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘‘শুধু অভিযোগ জানায় এমন দলকে কোচিং করাতে পারব না। ওই পেনাল্টির ব্যাপারটা নানা জনে নানা ভাবে বলতেই পারে। কিন্তু এটা নিয়ে অভিযোগ জানানোর জায়গা আমি অন্তত দেখছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy