Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
India

গুরপ্রীতের মহাভুল, ভারতকে বাঁচালেন আদিল খান, ড্র করে খুশি বাংলাদেশ

মঙ্গলবারের যুবভারতীতে মোক্ষম সময়ে মহাভুল করে ফেললেন ভারতের শেষপ্রহরী।

এই সেই মুহূর্ত। আদিল খান সমতা ফেরাচ্ছেন।

এই সেই মুহূর্ত। আদিল খান সমতা ফেরাচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৩২
Share: Save:

ভারত বাংলাদেশ

(আদিল) (সাদউদ্দিন)

কাতার-ম্যাচের মহানায়ক ছিলেন গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ‘এশিয়াসেরা’ দলের একের পর এক আক্রমণ এসে সে দিন এসে থেমে গিয়েছিল পঞ্জাবতনয়ের হাতে।

মঙ্গলবারের যুবভারতীতে মোক্ষম সময়ে মহাভুল করে বসলেন ভারতের শেষপ্রহরী। জামাল ভুঁইয়ার বিষ মেশানো ইনসুইং ফ্রি কিকটা বুঝতেই পারলেন না তিনি।সাদউদ্দিন হেডে গোল করে এগিয়ে দেন বাংলাদেশকে। ম্যাচের বয়স তখন ৪২ মিনিট। ঘটনার আকস্মিকতায় স্তব্ধ যুবভারতী। প্রিয় দলের জয় দেখার জন্যই তো সেই বিকেল থেকে ভর্তি ছিল যুবভারতীর গ্যালারি। ভক্তদের শব্দব্রহ্ম তো ফুটবলারদের রক্তের গতি বাড়িয়ে দেয়। আরও ভাল খেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। অথচ রেফারির বাঁশি বাজার শুরু থেকেই ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে শুরু করে ভারত। বোঝাপড়া দেখা গেল না। নীল জার্সি পরা এই দলটাকে খুব অচেনা দেখাচ্ছিল। কাতারের ঘরের মাঠে এই দলটাকেই তো অন্যরকম দেখিয়েছিল। সুনীল ছেত্রীদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছিলেন সবাই। যুবভারতীতেই ভারতীয় ফুটবল আছড়ে পড়ল বাস্তবের রুখা সুখা জমিতে।

ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরে খেলার সময়ে গুরপ্রীতের গোলকিপিং কোচ ছিলেন এশিয়ান অল-স্টার খ্যাত গোলকিপার অতনু ভট্টাচার্য। শিষ্যের গোল হজম করার ধরন দেখে বিরক্ত তিনি। খেলার বিরতির সময়ে বলছিলেন, ‘‘গোল খেয়ে গোটা দলটাকে চাপে ফেলে দিল গুরপ্রীত।’’ সেই চাপ কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেও কাটিয়ে উঠতে পারল না ভারত। সোমবারই বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া বলছিলেন, ‘‘প্রথমেই আমরা যদি একটা গোল করে দি, তা হলে আমরা ম্যাচ জিততেও পারি।’’ কারণ ব্যাখ্যা করে জামাল বলছিলেন, ‘‘ভারত পিছিয়ে পড়লে গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। সেই সুযোগে আরও বেশি গোল করার সুযোগ আমরা পাব।’’ ভুল কিছু বলেননি জামাল। সত্যি সত্যিই বাংলাদেশ একাধিক গোল করতেই পারত। একাধিক বার গুরপ্রীত ভুল করে বসেন।

এই যুবভারতীতেই তো অতীতে গুরপ্রীতের ভুলে ডুবতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। আই লিগে ইউনাইটেড স্পোর্টসের বিরুদ্ধে ম্যাচে গোল করার নেশায় শেষ মুহূর্তে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে উঠে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরের ঘটনা ইতিহাস। ইউনাইটেড স্পোর্টসের স্ট্রাইকার কেন ভিনসেন্ট বল ধরে ছুটতে ছুটতে গিয়ে গোল করে জিতিয়ে দিয়েছিলেন ইউনাইটেডকে। এ দিন তাঁকে বিবর্ণ দেখায়।

৭৩ মিনিটে জীবন ব্যবধান বাড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন। গুরপ্রীত এগিয়ে এসেছিলেন। সেই সুযোগে জীবন লব করে দেন। আদিল খান গোললাইন থেকে বল বাঁচান। তিনিই শেষ পর্যন্ত স্তিমাচকে স্বস্তি দেন। কর্নার থেকে আদিল খানের বিষাক্ত হেডে সমতা ফেরায় টিম ইন্ডিয়া।

নব্বই মিনিটের শেষ বাঁশির পরে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে-র মুখে খেলা করছিল চওড়া হাসি। অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে তিনি দেশে ফিরছেন। তাঁরা যে ড্র করে মাঠ ছাড়বেন, তা কেউই ধরেননি। সবাই এগিয়ে রেখেছিল ভারতকে। কিন্তু, খেলার কথা কি আগে থাকতে কেউ বলতে পারে? ম্যাচে উজ্জীবিত ফুটবল খেলল বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বে এখনও জয়ের দেখা পায়নি ভারত। ওমানের বিরুদ্ধে হোম ম্যাচে এগিয়ে থেকেও হেরে গিয়েছিল। এ দিন ড্র করে মাঠ ছাড়তে হল ভারতকে। হতাশ সুনীল ছেত্রী। যুবভারতীতে উপস্থিত দর্শকরাও হতাশ। তাঁরা তো গিয়েছিলেন প্রিয় দলের জয় দেখতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India Bangladesh Football
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE