Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বক্সারের ‘জীবন’ বাঁচানো ডাক্তারের কাছে ঋদ্ধি

২০০৮-এ বেজিং অলিম্পিকে মিডলওয়েট বক্সিংয়ে সোনাজয় ও দু’বার আইবিএফ-এর বিশ্বখেতাব জেতার পরে ইংল্যান্ডের ৩২ বছর বয়সি বক্সার পরপর হারতে থাকেন তাঁর চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির বক্সারদের কাছে।

নজরে: ঋদ্ধি যাচ্ছেন জেমসের (ডান দিকে) ডাক্তারের কাছে। —ফাইল চিত্র।

নজরে: ঋদ্ধি যাচ্ছেন জেমসের (ডান দিকে) ডাক্তারের কাছে। —ফাইল চিত্র।

রাজীব ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

কাঁধে চোটের জন্য বক্সিং জীবন শেষ হতে বসেছিল জেমস ডিগেলের। কিন্তু অলিম্পিকে সোনাজয়ী ও দু’বার সুপার মিডলওয়েট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন রিংয়ে ফিরে এসেছিলেন। কাঁধে অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করে এক বছরের মধ্যে তাঁকে ফিরিয়ে এনেছিলেন যিনি, সেই ডা. লেনার্ড ফাঙ্ক ঋদ্ধিমান সাহার অস্ত্রোপচার করবেন আগামী সপ্তাহে। সে জন্য রবিবার ইংল্যান্ডে রওনা হচ্ছেন ভারতীয় টেস্ট দলের উইকেটকিপার।

২০০৮-এ বেজিং অলিম্পিকে মিডলওয়েট বক্সিংয়ে সোনাজয় ও দু’বার আইবিএফ-এর বিশ্বখেতাব জেতার পরে ইংল্যান্ডের ৩২ বছর বয়সি বক্সার পরপর হারতে থাকেন তাঁর চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির বক্সারদের কাছে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, দীর্ঘদিন ধরে রিংয়ে লড়াই করতে করতে ডিগেলের কাঁধের শক্তি ফুরিয়ে এসেছে। বড় অস্ত্রোপচার করে ফিরিয়ে আনতে হবে সেই শক্তি।

তবে অস্ত্রেপচারের পরে কাঁধে আগের মতো শক্তি ফিরে আসবে কি না, সেই নিশ্চয়তা তখন কেউ দিতে পারেননি তারকা বক্সারকে। ২০১৭-র জানুয়ারিতে জেমস যান ডা. ফাঙ্কের কাছে। তিনি তাঁকে পরামর্শ দেন, কাঁধের হাড়-মজ্জা-পেশির অনেকটা জুড়েই বড় অস্ত্রোপচার করতে হবে এবং সে জন্য তাঁকে অন্তত এক বছর রিংয়ের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। তবে অন্যরা যে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি, সেই নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন ডা. ফাঙ্ক। এবং তিনি তাঁর কথা রেখেছিলেন।

ম্যাঞ্চেস্টারের অদূরে উইগানের সেই কাঁধের চোটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ফাঙ্কের হাতেই এখন বাংলার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ। সোমবারই সেখানে পৌঁছনোর কথা তাঁর। সে দিনই ডা. ফাঙ্ক তাঁর চোট পরীক্ষা করে জানাবেন, কবে ঋদ্ধির কাঁধে অস্ত্রোপচার করবেন তিনি। চোটের অবস্থা জটিল না হলে মঙ্গল-বুধবার অস্ত্রোপচার হতে পারে তাঁর।

বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, ডা. ফাঙ্ক উইগানে রাইটিংটন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত এবং সেই হাসপাতালেই এই অস্ত্রোপচার করতে পারেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ঋদ্ধিকে দেখার পরে। জানা গিয়েছে, গত ১২ বছর ধরে ওই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জেমস ডিগেল ছাড়াও রাগবি ও চোটপ্রবণ খেলার সঙ্গে যুক্ত একাধিক খেলোয়াড়ের চিকিৎসা করেছেন তিনি। ডিগেল গত বছর এপ্রিলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘ডা. ফাঙ্কের কাছে না গেলে হয়তো আমার বক্সিং জীবনই শেষ হয়ে যেত।’’

গত জানুয়ারি থেকে কাঁধের সমস্যায় ভোগা ঋদ্ধিমানের চোট নিয়ে ক্রিকেট মহলে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ঠিক সময়ে কাঁধের যথাযথ চিকিৎসা না করিয়ে আইপিএলে খেলতে নামায় তাঁর ক্রিকেট জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে, এমনও মনে করছেন কেউ কেউ। কিন্তু ডা. ফাঙ্কের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের হাতে পড়ে বক্সার ডিগেলের মতো ঋদ্ধিও আগের জায়গায় ফিরে আসবেন, এমন আশাও রয়েছে।

ঋদ্ধির চোট সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট আগেই তাঁর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ বার শুধু নিজের হাতে পরীক্ষা করাই বাকি ডা. ফাঙ্কের। তার পরে ঋদ্ধির কাঁধে চলবে তাঁর হাতের জাদু। শেষ পর্যন্ত কী হবে, জানে একমাত্র সময়ই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Wriddhiman Saha James DeGale
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE