কাপ জিততে আত্মবিশ্বাসী ইংল্যাণ্ড, স্পেন দু’দলই।
যুবভারতীর মঞ্চে অল ইউরোপ ফাইনাল। যে লড়াইয়ের প্রতিটা মুহূর্তে মিশে থাকবে বাংলার ফুটবল-আবেগ। চুম্বকে এটাই শনিবাসরীয় ছবি হতে চলেছে কলকাতার।
লড়াইটা আসলে সমানে সমানে। নাকি সেয়ানে সেয়ানে? আসলে লড়াইটা তো শেষমেশ ইউরোপের সঙ্গে ইউরোপেরই। কলকাতার বুকে শনিবারের রাত দেখতে চলেছে সেই ফুটবল যুদ্ধ। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি ইংল্যান্ড-স্পেন। প্রায় একমাসের একটা বিরাট কর্মকাণ্ডের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। অল ইউরোপ ফাইনাল দিয়েই শেষ হতে চলেছে ভারতের বুকে প্রথম ফিফা বিশ্বকাপের আসর।
মাঠে নামার আগে দু’দলের ওয়ার্ম আপ শেষ। শুক্রবার বিকেল চারটের সময় অনুশীলন মাঠে ইংল্যান্ড দলের হাল্কা গা ঘামানো দেখার সুযোগ পাওয়া গেল। সেখানে মাঠ জুড়ে দৌড় আর সঙ্গে বল নিয়ে হাল্কা পাসিং। তার পরেই ক্লোজ ডো়র। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ কুপার বুঝিয়ে দেন, কলকাতার মাঠ থেকে কাপটা নিয়ে যেতে তিনি এবং তাঁর দল কতটা মরিয়া! বলেন, ‘‘ফাইনাল ভারতে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত আমি উপভোগ করেছি। বিশেষ করে কলকাতায় খেলার সময়টা। এখানকার মানুষ, এখানকার আতিথেয়তা সবটাই ভীষণ ভাল। ফাইনালে আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলব।’’
আরও পড়ুন: শীর্ষে পৌঁছতে ভারতের লক্ষ্য শুধুই ৬৯৪৯
ইংল্যান্ডের এই দলের সামনে কিন্তু প্রথম ফিফা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। এই কলকাতার মাঠেই গ্রুপ লিগের ম্যাচ খেলেছে তারা। এই মাঠের সঙ্গে দারুণ ভাবে মানিয়ে নিয়েছে ব্রিটিশরা। সেখানেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে হবে স্পেনকে। তারা নামবে নতুন মাঠে। ইংল্যান্ড কোচ বলেন, ‘‘ছেলেরা দারুণ খেলছে। এখান থেকে এগিয়ে যেতে হবে ভবিষ্যতের জন্য। পিছন ফিরে তাকানোর কোনও রাস্তা নেই।’’
ফাইনালের আগে অনুশীলনে মগ্ন ব্রিটিশ ফুটবলাররা।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যাঞ্জেল গোমস কিন্তু বুঝিয়ে দিলেন, তাদের পরিকল্পনা তৈরি। গোমস বলে, ‘‘আমরা আমাদের পরিকল্পনা মতো খেলতে চাই। সেই পরিকল্পনা তৈরি।’’ ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে ৬৩ হাজারের উপর দর্শকের সামনে খেলেছে ইংল্যান্ড। যেটা আরও তাতিয়ে দিয়েছে তাদের। গোমস বলছিল, ‘‘৬৩ হাজার দর্শকের সামনে খেলাটাও একটা পরীক্ষা। কালও আশা করি এ রকমই দর্শক আমাদের সমর্থন করতে মাঠে থাকবে।’’
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়নশিপ নেই, তবুও লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি ব্রাজিল-মালির
ইংল্যান্ড যুবভারতী ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর মাঠের দখল নেয় স্পেন। কাল যুবভারতী দেখবে লাল-সাদার লড়াই! তার আগে স্পেন শিবির যুদ্ধের আগে শেষ দফার প্রস্তুতিতে। সেখানেও অনুশীলন দেখা গেল মাত্র ১০ মিনিটই। তার আগের সাংবাদিক সম্মেলনে অবশ্য আত্মবিশ্বাসীই শোনাল স্প্যানিশ কোচ সান্তিয়াগো দানিয়ার গলা। জ্যাডন স্যাঞ্চোর না থাকা যে তাদের সুবিধে করে দেবে না, সেটাও বুঝিয়ে দিলেন তিনি। যে স্যাঞ্চোর চলে যাওয়া নিয়ে ইংল্যান্ড শিবিরে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল এখন তাঁকে ভুলিয়ে সাফল্যের রাস্তা তৈরি করছে ইংল্যান্ডের নতুন তারকা ব্রিউস্টার। সান্তিয়াগো বলেন, ‘‘এক জনের খেলা নিয়ে ভাবছি না। বরং ওরা টিম গেমটা কেমন খেলছে, সেটা খেলেই সাফল্য আসছে কি না, সেটা নিয়ে ভাবব।’’
কলকাতা থেকে কাপ জিতে দেশে ফিরতে মরিয়া স্প্যানিশ ব্রিগেড।
এর আগের সাফল্য কতটা তাতাচ্ছে স্পেনকে?
কয়েক বছর আগেও ইউরো এবং বিশ্বকাপ এসেছিল। এ বার ইতিমধ্যেই ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিয়েছে স্পেনের অনূর্ধ্ব-১৭ দল। এ বার কি তা হলে সেই ইতিহাস পুনরুদ্ধারের পালা? স্পেন কোচ বললেন, ‘‘আত্মবিশ্বাসী আমরা। কিন্তু, অতীত নিয়ে ভাবছি না।’’ আসলে অতীত ভেবে ফোকাসটা হারাতে চান না তিনি। বরং মনে মনে জয়ের পতাকা উড়িয়েই মাঠে নামতে চান তাঁরা।
রাত পোহালেই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের শেষ ৯০ মিনিটের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে যাবে। কলকাতা শহরের হোটেলে তখন প্রমাদ গুনবে দুই ফাইনালিস্ট দল। অনেকের হয়তো বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা ভেবে রাতে ঘুমও আসবে না। তবুও মাঠের ৯০ মিনিট উজাড় করে দিতে মরিয়া দুই দল। লড়ে যাওয়া, কাপ ছিনিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে নামার আগে তাই দুই শিবিরেই রয়েছে একে অপরের প্রতি সমীহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy