Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
মুখ খুললেন যুবরাজকে বাদ দেওয়া নির্বাচক

ফিটনেসের জন্যই রাখতে পারিনি, স্বীকার করছেন সাবা

অধিনায়ক বিরাট কোহালির প্রথম ওয়ান ডে সিরিজে তাঁর চেয়েও বেশি আলোচনা সম্ভবত হয়েছে যুবরাজ সিংহকে ঘিরে। প্রায় ছ’বছর পর আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটানো যুবরাজ সিংহ। ক্যানসারকে হারিয়ে নতুন ফিটনেস নিয়ে ফিরে আসা যুবরাজ সিংহ।

চেতন নারুলা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:১১
Share: Save:

অধিনায়ক বিরাট কোহালির প্রথম ওয়ান ডে সিরিজে তাঁর চেয়েও বেশি আলোচনা সম্ভবত হয়েছে যুবরাজ সিংহকে ঘিরে। প্রায় ছ’বছর পর আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটানো যুবরাজ সিংহ। ক্যানসারকে হারিয়ে নতুন ফিটনেস নিয়ে ফিরে আসা যুবরাজ সিংহ। যিনি এর আগে শেষ ওয়ান ডে খেলেছিলেন ২০১৩ ডিসেম্বরে। যাঁকে ২০১৫ বিশ্বকাপ টিমে রাখা হয়নি।

সন্দীপ পাটিলের নেতৃত্বে তৎকালীন নির্বাচক কমিটি যুবরাজকে ঘিরে তাৎপর্যপূর্ণ কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যার মধ্যে ছিল ২০১৩ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে জঘন্য পারফরম্যান্সের পরে যুবরাজকে বাদ দেওয়া। যার মধ্যে ছিল ২০১৫ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ টিমে তাঁকে না রাখা।

সেই নির্বাচক কমিটির অন্যতম সদস্য সাবা করিম এত দিন পরে মুখ খুললেন যুবরাজকে নিয়ে। এবং বলে দিলেন, অভিজ্ঞ বাঁ-হাতির বাদ পড়ার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল ফিটনেসের অভাব। ‘‘ওই সময়টায় ফর্ম আর ফিটনেস, দুটোই যুবিকে ভোগাচ্ছিল। প্রত্যাশা মতো পারফর্ম করতে পারছিল না ও। তাই আমরা সামনের দিকে তাকানোর সিদ্ধান্ত নিই,’’ এ দিন বলেছেন সাবা করিম। সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘টিমের তখন দরকার ছিল ফিট প্লেয়ার। যে হেতু সামনে ২০১৫ বিশ্বকাপ ছিল। আমরা সে ভাবেই এগোই। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের জন্য যুবরাজের চেয়ে তরুণ, ফিট আর ভাল ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান নিয়ে।’’

সিডনির সেমিফাইনালে সে বার অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিল ভারত। অধিনায়ক ধোনির সঙ্গে মিডল অর্ডার সামলানোর দায়িত্বটা পেয়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানে, সুরেশ রায়না এবং অম্বাতি রায়ডু।

সাবা করিম অবশ্য এও বলেছেন, ‘‘আমরা কিন্তু গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যুবরাজকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। বাংলাদেশে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ টিমেও ও খেলেছে। আমাদের মনে হয়েছিল, ওর ফিটনেস টি-টোয়েন্টিতে সমস্যা হবে না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘গত বছর আমাদের মেয়াদ যখন প্রায় শেষের দিকে, তখনও আমরা যুবরাজকে ওয়ান ডে দলে ফেরানো নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি।’’

২০১৯ বিশ্বকাপে যুবরাজের খেলা নিয়ে বিশেষ আশা দেখছেন না প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক। বরং তিনি বলে দিচ্ছেন, ‘‘২০১৯ বিশ্বকাপ এখন অনেক দূর। এই প্রত্যাবর্তনটা বরং যুবরাজকে এ বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বেশি সাহায্য করবে। এটা স্বল্পমেয়াদী সমাধান।’’

কিন্তু এমএসকে প্রসাদ এবং তাঁর অধীনে থাকা বর্তমান জাতীয় নির্বাচক কমিটি নতুন কী দেখলেন যে, যুবরাজের এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হল? ‘‘যুবরাজ সত্যিই দারুণ ভাবে ফিরে এসেছে। সবচেয়ে বড় তফাত হয়েছে ওর ফিটনেসে,’’ বলে সাবা করিম আরও যোগ করেছেন, ‘‘গত দু’তিন বছরে যা করেছিল, তার চেয়ে এখন ফিটনেস নিয়ে অনেক বেশি খেটেছে যুবরাজ। যা ওর ব্যাটিং পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। খুব কঠোর রুটিন মেনে চলেছে যুবরাজ। নিজের নিষ্ঠার সাহায্যে টিমে ফেরার জায়গা তৈরি করেছে।’’

অনিল কুম্বলের অধীনে বর্তমান টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেট দর্শনে প্রভাবিত সাবা করিম। ভারতীয় কোচ কড়া নিয়ম চালু করেছেন যে, চোট পাওয়া প্লেয়ারদের সবাইকে টিমে ফিরতে হলে আগে ফিটনেসের প্রমাণ দিতে হবে। না হলে তাঁদের জাতীয় দলের জন্য ভাবা হবে না। সাবা মনে করেন, এতে যুবরাজের পাশাপাশি গৌতম গম্ভীরের মতো প্লেয়াররাও উপকৃত হয়েছেন।

এ সবের মধ্যে অবশ্য একটা চিন্তা থেকে যাচ্ছে— ওপেনিং। রাহানে, লোকেশ রাহুল, শিখর ধবন— তিনটে ম্যাচের একটাতেও কেউ রান পাননি। এঁদের মধ্যে ধবনকে নিয়ে বেশি চিন্তা সাবার। ‘‘অতীতে দেশের হয়ে দারুণ খেলেছে শিখর। বিশেষ করে ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আর ২০১৫ বিশ্বকাপ। ফর্মে থাকলে ও প্রচুর ভাঙচুর করতে পারে,’’ বলে তিনি যোগ করেছেন, ‘‘কিন্তু এখন ভারতীয় ক্রিকেটে প্রচুর বিকল্প। বোঝাই যাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট এখন রাহানেকে ওপেনার হিসেবে চাইছে। পাশাপাশি শিখরের ফর্মও পড়ছে। ওর মধ্যে আত্মবিশ্বাস দেখছি না। এই সময় আমার তো অন্তত মনে হচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিখর যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Saba Karim Yuvraj Singh Team India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE