Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

ইস্টবেঙ্গল মাঠ দেখেই বিরক্ত সতৌরি

আর্মান্দো কোলাসো বিরক্ত ছিলেন। ইস্টবেঙ্গল মাঠের হাল দেখে বিরক্ত নতুন কোচ এলকো সতৌরিও। লাল-হলুদের নতুন কোচ শুক্রবার প্র্যাকটিস শেষে বলে দিলেন, “এই মাঠ প্র্যাকটিসের জন্য আদর্শ নয়। আমি যে স্টাইলে কাজ করতে চাইছি, এখানে সেটা করা বেশ কঠিন। বল খুব লাফাচ্ছে।”

লাল-হলুদে শুরু সতৌরির ক্লাস।—নিজস্ব চিত্র

লাল-হলুদে শুরু সতৌরির ক্লাস।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৬
Share: Save:

আর্মান্দো কোলাসো বিরক্ত ছিলেন। ইস্টবেঙ্গল মাঠের হাল দেখে বিরক্ত নতুন কোচ এলকো সতৌরিও।

লাল-হলুদের নতুন কোচ শুক্রবার প্র্যাকটিস শেষে বলে দিলেন, “এই মাঠ প্র্যাকটিসের জন্য আদর্শ নয়। আমি যে স্টাইলে কাজ করতে চাইছি, এখানে সেটা করা বেশ কঠিন। বল খুব লাফাচ্ছে।”

ইস্টবেঙ্গল মাঠের বেহাল অবস্থা দেখে শনিবারই যুবভারতীতে প্র্যাকটিস করবেন বলে ঠিক করে ফেললেন সতৌরি। মালয়েশিয়ার জহর দারুল তাজিমের বিরুদ্ধে এএফসি কাপের প্রথম ম্যাচে নামার আগে সেটাই সতৌরির শেষ প্র্যাকটিস কলকাতায়। বলছিলেন, “যুবভারতীর অবস্থাও ভাল নয়। তবে খারাপ আর খুব খারাপের মধ্যে প্রথমটা ভাল।”

মাঠ নিয়ে অখুশি হলেও, শুক্রবার সকালে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গিয়ে মনে হল, একটা ‘ফিল গুড’ আবহাওয়া বইছে। ফুটবলাররা মজে হাসি-ঠাট্টায়। কর্তারাও ফুরফুরে। কোলাসো-জমানায় টিমের অন্দরে যে দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, সেটা অনেকটাই উধাও লাল-হলুদে। নতুন কোচের প্রশংসায় ফুটবলাররাও। টিমের গোলকিপার কোচ তো বলেই ফেললেন, “দারুণ কোচ। কী ভাবে অন্যকে সম্মান দিতে হয়, সেটা জানেন। প্র্যাকটিসের শুরুতেই কোচ আমাদের ডেকে জানিয়ে দেন, কী প্র্যাকটিস করাবেন।”

তবে এএফসি নয়, নতুন ইস্টবেঙ্গল কোচের কাছে যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে আই লিগ, সেটা শুরুতেই পরিষ্কার করে দিলেন। “এএফসি কাপকে ছোট করে দেখছি না। তবে এই মুহূর্তে আমার কাছে সবার আগে আই লিগ। ভারতের যে কোনও টিমই আই লিগ জিততে মুখিয়ে থাকে। ইস্টবেঙ্গলকে এ বার আই লিগ দেওয়াটাই আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”

সতৌরির সামনে বোধহয় আর একটা বড় চ্যালেঞ্জ সময়! যেটা তাঁর হাতে একেবারেই নেই। টিমে যে নিজের নতুন কোচিং-দর্শন আমদানি করবেন, তারও যেন পর্যাপ্ত সময় নেই। তাই শনিবার রাতেই দল নিয়ে মালয়েশিয়ায় উড়ে যাওয়ার আগে নিজের ডিফেন্স সংগঠনকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন তিনি। কিন্তু সেখানেও বাধা। ডার্বি ম্যাচে সুসাকের সঙ্গী রাজু গায়কোয়াড় মালয়েশিয়া যেতে পারছেন না। ভিসা হয়নি। তাই এ দিন প্র্যাকটিসে স্টপার সুসাকের পাশে কখনও অর্ণব, কখনও গুরবিন্দরকে খেলিয়ে দেখে নিলেন। দুই সাইড ব্যাক দীপক মণ্ডল এবং রবার্ট। সতৌরি বললেন, “কালও ডিফেন্স নিয়ে আলাদা প্র্যাকটিস করব। এখন নতুন কিছু ভাবার সময় নেই। আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আগে নিজের ডিফেন্স সামলাতে হবে। তবে আমি এই ইস্টবেঙ্গলের অনেক ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। সেট পিস থেকে প্রচুর গোল হচ্ছে।”

লাল-হলুদের মাঝমাঠে সতৌরির প্রাক্তন টিমের (ইউনাইটেড স্পোর্টস) ছাত্ররাই যে তাঁর প্রধান ভরসা, সেটা অবশ্য প্র্যাকটিসেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি। অধিনায়ক খাবরার চোট। তাঁর বদলে মহম্মদ রফিককে দলে রাখতে চাইছেন কোচ। এ দিন সাতসকালে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল মাঝমাঠে মেহতাব-ডিকা-তুলুঙ্গা-রফিককে খেলতে। সতৌরির ৪-৩-১-২ ছকে উইথড্রন ফরোয়ার্ড রফিক। অ্যাটাকিং থার্ডে ডুডু-র্যান্টি জুটি। টানা দু’ঘণ্টা কড়া প্র্যাকটিসের পরে ডাচ কোচ বললেন, “রফিককে আমি আগে কোচিং করিয়েছি। বল ডিস্ট্রিবিউশন ভাল। মালয়েশিয়ায় আমার স্ট্রাইকারদের পিছনে ওকে খেলাব।”

সব মিলিয়ে তাঁর ‘বিরক্তি’র মাঠেই প্রথম দিন জোর-কদমে কাজে নেমে পড়েছেন সতৌরি।

সতোরি পুরোদমে অনুশীলনে নেমে পড়ার দিনেও প্রাক্তন কোচ আর্মান্দো কোলাসোকে নিয়ে অস্বস্তিতে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। বর্তমান কর্তাদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও জানা গিয়েছে চুক্তির বাকি চার মাসের টাকা গোয়ান কোচ নিয়ে নিয়েছেন কর্তাদের চাপ দিয়ে। তার উপর কবে ক্লাবের দেওয়া বাড়ি ছাড়ছেন তা-ও জানাননি। ফলে এলকোকে রাখা হয়েছে রাজারহাটের হোটেলে। গুনতে হচ্ছে ভাড়া। ক্লাবের কোনও কর্তা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। জানা গিয়েছে, ২৪ ফেব্রায়ারি সস্ত্রীক গোয়া ফেরার বিমানের টিকিট কেটেছেন আর্মান্দো। কর্তারা দেখতে চান, আর্মান্দো বাড়ির চাবি ক্লাবকে দিয়ে যান কি না?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

elco satori east bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE