Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইস্টবেঙ্গলের নবতম আবিষ্কার অশালীনতা

ফেড কাপে ইস্টবেঙ্গল কোন প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হেরেছে, তা স্পষ্ট হল শুক্রবার। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার নবতম আবিষ্কারের কথা জানালেন, “আমরা সাংবাদিকদের কাছে হেরে ফেড কাপ থেকে বিদায় নিয়েছি।” ফুটবলের ইতিহাসে যে কথা সম্ভবত কখনও কেউ বলেননি। যেমন সচিব, তেমন তাঁর টিমের কোচ! কল্যাণবাবু হারের দায় চাপালেন ‘অসভ্য’ সাংবাদিকদের উপর। আর তার একটু আগে আর্মান্দো কোলাসো এ দিন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে কর্মরত চিত্র সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে ঐতিহ্যশালী লাল-হলুদের সম্মানকে কলঙ্কিত করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫০
Share: Save:

ফেড কাপে ইস্টবেঙ্গল কোন প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে হেরেছে, তা স্পষ্ট হল শুক্রবার। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার নবতম আবিষ্কারের কথা জানালেন, “আমরা সাংবাদিকদের কাছে হেরে ফেড কাপ থেকে বিদায় নিয়েছি।”

ফুটবলের ইতিহাসে যে কথা সম্ভবত কখনও কেউ বলেননি।

যেমন সচিব, তেমন তাঁর টিমের কোচ!

কল্যাণবাবু হারের দায় চাপালেন ‘অসভ্য’ সাংবাদিকদের উপর। আর তার একটু আগে আর্মান্দো কোলাসো এ দিন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে কর্মরত চিত্র সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে ঐতিহ্যশালী লাল-হলুদের সম্মানকে কলঙ্কিত করলেন।

ক্লাবের ভিতরে তাঁর ছবি তুলতে যাওয়ায় ফটোগ্রাফারদের আর্মান্দো বলেন, “ছবি তোলার শখ মিটছে না!” তার পর তাঁদের দিকে অশালীন ইঙ্গিত করে ক্লাব তাঁবুর ভিতরে ঢুকে পড়েন তিনি। যে অশালীন ইঙ্গিত ইস্টবেঙ্গলের সুদীর্ঘ ইতিহাসে কখনও কোনও কোচ, কর্মকর্তা, ফুটবলারকে করতে দেখা যায়নি। তাও কিনা খোদ ক্লাবের ভিতর দাঁড়িয়েই!

কার্যকরী কমিটির সঙ্গে আড়াই ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক শেষে অবশ্য মুখে কুলুপ লাল-হলুদ কোচের। ক্লাব থেকে বেরিয়ে সটান হাঁটা দিলেন গাড়ির দিকে। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক ঝাঁক সাংবাদিককে এড়িয়ে। বডি ল্যাঙ্গোয়েজে বিরক্তি স্পষ্ট।

কিন্তু ফেড কাপে লজ্জার বিদায়ের পর প্রথমবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে পা রাখা আর্মান্দোকে নিয়ে যে একটা বাড়তি উত্তেজনা থাকবে, সেটা স্বাভাবিক। তাতেই হয়তো গোয়ার মতো ফের মেজাজ হারালেন ইস্টবেঙ্গলের ‘মুডি’ কোচ।

এখানেই শেষ নয়। বিতর্কে আরও ঘি ঢাললেন লাল-হলুদ সচিব। ব্যর্থ কোচের পাশে খোলাখুলি দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, “সাংবাদিকরা অসভ্য হয়। কোচকে ইচ্ছাকৃত উত্যক্ত করা হচ্ছে।” ইস্টবেঙ্গল সচিব-কোচের এ দিনের কাণ্ডে নিন্দায় সরব ময়দান।

কলকাতা হোক কিংবা গোয়া—সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণের ঘটনা যেন বেড়ে চলেছে ইস্টবেঙ্গলে। কোচের পাশে দাঁড়িয়ে সচিব কী বার্তা দিতে চাইলেন? ইস্টবেঙ্গলের ট্রফি-ঐতিহ্যে কালি লাগিয়েও কি পার পেয়ে যাবেন আর্মান্দো? কল্যাণবাবুর হাবভাব দেখে মনে হতেই পারে, ‘আই এম দ্য গ্রেটেস্ট সেক্রেটারি’ মন্তব্যের মতোই অবিচল তিনি। কোনও পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে টিমের হারের জন্য সাংবাদিকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন তিনি। সচিব অবশ্য একা নন। প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেও, শোনা যাচ্ছে সভায় আর্মান্দো নিজেও নাকি হারের অজুহাত হিসেবে সাংবাদিকদের দিকে আঙুল তুলেছেন। কী ভাবে তাঁর মনসংযোগ নষ্ট হয়েছে, তার ব্যাখা দিয়েছেন।

কল্যাণের আবিষ্কার

সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্ফোরক নতুন তথ্য দিলেন ক্লাব সচিব।
বলে দিলেন, “ফেড কাপ থেকে ইস্টবেঙ্গল বিদায় নিয়েছে
সাংবাদিকদের কাছে হেরে। সাংবাদিকরা অসভ্য হয়।”

হতবাক ময়দান

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

যদিও ইস্টবেঙ্গল কার্যকরী কমিটির অধিকাংশ সদস্যই নিন্দা করছেন কোচের অশালীন অঙ্গভঙ্গি এবং সচিবের মন্তব্যকে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শীর্ষকর্তা বললেন, “এ রকম ঘটনা খুব দুর্ভাগ্যজনক। কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। কল্যাণবাবু গোটা সাংবাদিককূলের উদ্দেশ্যে যা বলেছেন, তার চরম নিন্দা করা উচিত আমাদের।” কিন্তু কোচ-সচিবের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া কি আদৌ হবে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।

উল্টে টানা দু’বছর ফেড কাপে চরম ব্যর্থ কোচকেই বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হল এ দিনের বৈঠকে। এমনকী তিনি অভ্যাসবশত পদত্যাগপত্র দিলেও, সেটা যথারীতি গৃহীত হয়নি। ক্লাব সূত্রের খবর, আর্মান্দো নাকি বৈঠকে ফুটবলারদের বিশৃঙ্খলাকে দায়ী করেছেন। তাঁকে ক্লাবের তরফে বলা হয়েছে, আই লিগে তিনি যদি মনে করেন, কোনও ফুটবলার তাঁর গাইডলাইন মেনে চলছে না, সেই ফুটবলারকে যখন ইচ্ছে বাদ দিতে পারেন কোচ এবং আর্মান্দোর সেই সিদ্ধান্তে নাক গলাবেন না কর্তারা। সোমবার থেকে আই লিগের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলে।

ফেড কাপ ফাইনালে ডেম্পো-বেঙ্গালুরু

সংবাদ সংস্থা • মারগাও

টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকেই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠল ডেম্পো। শুক্রবার টোলগে ওজবের জোড়া গোলে তারা ২-০ হারাল সালগাওকরকে। এ দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসি ৩-০ হারায় স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়াকে। বেঙ্গালুরুর গোলদাতা শন রুনি, সুনীল ছেত্রী ও ইউজিন। দুই অর্ধেই দাপট বজায় রাখা ডেম্পোকে প্রথমে এগিয়ে দেন টোলগে। বিরতির পর ফের গোল করে ব্যবধানও বাড়ান। সালগাওকরের গোলকিপার সুব্রত পাল নিশ্চিত তিনটি গোল না বাঁচালে আরও বেশি গোলে জেতার সুযোগ ছিল টোলগেদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

colaco east bengal fed cup
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE