Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ক্লান্ত ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে না পেরে হতাশ বাগান কোচ

সুভাষ ভৌমিক। সুব্রত ভট্টাচার্য। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। অলোক মুখোপাধ্যায়। উপরের নামগুলোর পাশে সোনালী নেমপ্লেটে নিজের নামটাও লিখে ফেলতে পারতেন! কিন্তু বাগান-ডিফেন্সের ভুল ফের ‘অপেক্ষার সরণিতে’ ঠেলে দিল সঞ্জয় সেনকে। ডার্বি-জয়ের মহোৎসব থেকে বঞ্চিত করে।

ম্যাচ শেষে সঞ্জয়। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

ম্যাচ শেষে সঞ্জয়। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

প্রীতম সাহা ও সোহম দে
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৪
Share: Save:

সুভাষ ভৌমিক। সুব্রত ভট্টাচার্য। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। অলোক মুখোপাধ্যায়।

উপরের নামগুলোর পাশে সোনালী নেমপ্লেটে নিজের নামটাও লিখে ফেলতে পারতেন! কিন্তু বাগান-ডিফেন্সের ভুল ফের ‘অপেক্ষার সরণিতে’ ঠেলে দিল সঞ্জয় সেনকে। ডার্বি-জয়ের মহোৎসব থেকে বঞ্চিত করে।

ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর এটাই সেরা সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগান। কাগজে-কলমে নয়। মাঠের বাইরে লাল-হলুদ কোচ আর্মান্দো কোলাসোকে ছাটাই করা নিয়ে যে চমকপ্রদ নাটক চলছে তার বিচারেই। কোচ নিয়ে বহু নাটকের সাক্ষ্মী থেকেছে ময়দান। কিন্তু ডার্বির নব্বই বছরের ইতিহাসে এমন মনাটক দেখেনি। কোচ ছাঁটাইয়ের আগে নতুন কোচ হাজির। এ রকম একটা ডামাডোলের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে না পারার আফসোস বোধহয় কোনও দিন ভুলতে পারবেন না সঞ্জয়। ম্যাচ শেষে বাগান কোচ বলছিলেন, “আমাদের দলে কোনও মেসি কিংবা রোনাল্ডোর মতো ব্যাক্তিগত তারকা নেই। যে একক দক্ষতায় টিমকে জিতিয়ে দেবে। ইস্টবেঙ্গলের ক্লান্তির সুযোগ সত্যিই আমরা নিতে পারিনি।”

সঞ্জয়ের মতো আফসোস সনি নর্ডিরও। তবে ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে না পারার জন্য নয়। কলকাতায় নিজের প্রথম ডার্বি জিততে না পারায়। এত দিন অভিষেক ডার্বিতে কখনও হারেননি সনি। কিন্তু যুবভারতীতে সেই রেকর্ড ধরে রাখতে পেরে তাঁর মন্তব্য, “একটা ভুলের জন্যই জিততে পারলাম না। আমি আগেই বলেছিলাম, র্যান্টি খুব বিপজ্জনক। সেখানে আমাদের ডিফান্ডারদের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। তবে আমাদেরও অনেক সুযোগ নষ্ট হয়েছে।” সনি যে হতাশ, সেটা তাঁর চোখে-মুখেই স্পষ্ট। এমনকী নিজের গাড়িতে ওঠার আগে আরও বলে গেলেন, “ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আগেও গোল করেছি। জিতেওছি। তবে এত সমর্থকদের সামনে গোল করতে পারলে আরও ভাল লাগত। আজ স্টেডিয়ামের উত্তেজনা দেখে আমার আর্জেন্তিনার সুপার ক্লাসিকোর (বোকা জুনিয়রস বনাম রিভারপ্লেট) কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল।”

মোহনবাগানের কপালে অবশ্য এ দিন এক পয়েন্টও জুটত না! যদি না ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে র্যান্টির একের বিরুদ্ধে এক গোল না বাঁচাতেন বাগান গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। মঙ্গলবারের ডার্বিতে যাঁর খেলার কথা ছিল-ই না। উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ম্যাচের পরে বলছিলেন, “শিল্টনদা আমায় বলেছিল, গ্যালারির দিকে মনোযোগ দিবি না। ভাববি, কানে তুলো গুজে নেমেছিস। আমি শুরু থেকেই সেটা মাথায় রেখে খেলেছি। র্যান্টির সেভটা করে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। টিমেরও।”

টিমের আত্মবিশ্বাস কতটা বেড়েছে, তা বলা বেশ কঠিন। কেন না মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত থাকা ইস্টবেঙ্গলকে সামনে পেয়েও যেভাবে এগিয়ে থেকে ড্র করলেন বোয়া-কাতসুমিরা, তা রীতিমতো অশনি সঙ্কেত মোহনবাগানের জন্য। সঞ্জয় নিজেও মানলেন, “প্রত্যাশা মতো খেলতে পারিনি আমরা। সনি খুব বল হোল্ড করে খেলছিল। সেটা বিরতিতে ড্রেসিংরুমে ওকে বলেওছিলাম। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।” বাগান কোচ যেটা লক্ষ্য করেছেন, সেটা চোখে পড়েছে বেঙ্গালুরু এফসি কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউডেরও। শুক্রবার যাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ম্যাচ বাগানের। সুনীলদের কোচ বলছিলেন, “মোহনবাগানের খেলায় গতি আছে। কিন্তু সেট পিসে ডিফেন্সটা একটু নড়বড়ে।”

ওয়েস্টউড তাঁর প্রতিপক্ষকে মেপে গেলেন। এখন দেখার, দু’দিনের মধ্যে দলের দুর্বল দিকগুলোকে কতটা মেরামত করতে পারেন বাগান কোচ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE